alt

নিন্দুকের ঘেউ ঘেউয়ে কিছু আসে যায় না: প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী ২০২২

জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে গণভবন থেকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের উন্নয়ন যারা সহ্য করতে পারে না তাদের মুখে কিছুই হলো না, কিছুই হলো না কথা। তাদেরকে নিজের আয়নায় নিজের চেহারা দেখার পরামর্শ দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা কি এটা উপলব্ধি করতে পারে যে অর্থনৈতিক উন্নতি যদি না হয়ে থাকে তাহলে এত বড় বাজেট আমরা কীভাবে দিয়েছি? আর কীভাবে আমরা এত উন্নয়নকাজ করে যাচ্ছি? বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মহল বলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আর আমাদের দেশের কিছু লোক আছে তারা ঘেউ ঘেউ করেই যাচ্ছে। এই ঘেউ ঘেউ করতে থাকুক। এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। দেশের উন্নয়নটা হয়েছে বলেই আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এ আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আর সে ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে বদনাম করে বেড়াচ্ছে দেশে-বিদেশে। এটাও আরেকটি বিষয়। কই খালেদা জিয়ার আমলে তো ডিজিটাল হয়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন যারা সহ্য করতে পারে না তাদের মুখে কিছুই হলো না, কিছুই হলো না কথা। তাদের বলব নিজেরা আয়নায় একটু চেহারা দেখেন। আর অতীতে কী করেছেন সেটা দেখেন। আর যাদের জন্য মায়া কান্না একটা হলো দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত, আরেকটা খুনি। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। আইভী রহমানের হত্যাকারী। সেই হত্যাকারীরা আজকে সব থেকে বেশি সোচ্চার।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা আজ দুর্নীতি খোঁজে তাদের বলব, ২০০১ সাল থেকে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে সেটা দেখার জন্য। যারা ঋণ খেলাপির কথা বলেন তাদের বলব, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর এলিট শ্রেণি তৈরি করার জন্য যে ঋণ খেলাপি সৃষ্টির কালচার এ দেশে তৈরি করে গেছে সেই খবরটা আগে নিন। আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করলেই তার বিরুদ্ধে লেগে থাকা, এটা এক শ্রেণির মানুষের অভ্যাস। কারণ যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা খুনিদের নিয়ে এবং যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের উন্নয়নকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের কিছু প্রেতাত্মা এখনো সমাজে আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, শুধু এখানে না, বিদেশের কাছেও নালিশ করে বেড়াচ্ছে, তাদের কাছে তথ্য দিচ্ছে। এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারীকে দয়া করে আমরা বাসায় থাকতে দিয়েছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর তার ছেলে, একজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা আর দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ফিউজিটিভ হয়ে গেছে। বিদেশে পালিয়ে আছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।

সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন কোথায় কম হয়েছে? যারা শুধু এ দেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর উন্নয়নে নাকি হাজার হাজার কোটি টাকা ধ্বংস হয়েছে বলেন তাদের বলব, ধ্বংসই যদি হয়ে থাকে তাহলে আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে কেমন করে? ব্যাপকভাবে রাস্তাঘাট হয়েছে। স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনিক্যাল কলেজ, ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার- এই যে এত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হওয়া, এগুলো কীভাবে হয়েছে? আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। করোনাভাইরাসে অনেক উন্নত দেশ, অর্থশালী দেশ বিনা পয়সায় টিকা দেয় না। বিনা পয়সায় পরীক্ষা করে না। আমরা বিনা পয়সায় টিকা দিচ্ছি।

তিনি বলেন, যদি অর্থ ব্যয়ই না হবে তাহলে এত কাজ হলো কীভাবে? এইগুলো যারা দেখে না তাদের চোখ হচ্ছে সেই ঠুলি পরা। খুনিদের ঠুলি, যুদ্ধাপরাধীদের ঠুলি। এরা দেশের উন্নয়ন দেখে না। লুটে খেতে পারছে না সেটাই হচ্ছে বড় কথা। তারা ওই গরিবের হাড্ডিসার, কঙ্কালসার দেখিয়ে দেখিয়ে বিদেশ থেকে অর্থ এনে খাবে আর লুটপাট করে খাবে, সেটাই তাদের বড় কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন দেশকে ভালোবাসতে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে। তিনি যেদিন ১০ জানুয়ারি ফিরে আসেন। ফিরে এসে যে শব্দগুলো তিনি বলেছিলেন যে তার স্বপ্ন এ দেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, উন্নত জীবন পাবে। সেটাই আমাদের আদর্শ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আমি এটুকু বলব, জাতির পিতা এ সংগঠন নিজের হাতে তৈরি করে দিয়ে গেছেন। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে আমরা এই সংগঠনকে আবার সুসংগঠিত করেছি। আর একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ থাকলে এ দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা পায়। আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মঙ্গা থাকে না, দুর্ভিক্ষ থাকে না। মানুষের সেই হাহাকার নেই। আর মানুষকেও আমরা কষ্ট দেবো না। মানুষের অন্ন, বস্ত্রের চাহিদা আমরা মিটাই, মিটাতে পেরেছি। জিয়া, খালেদা জিয়া, এরশাদ সকলের আমলেই কিন্তু বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে বাংলাদেশের মানুষকে পরানো হতো। আজকে তা আর লাগে না। বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে পরাতে হয় না। আমরা পুরনো কাপড় বিদেশে পাঠাতে পারি, দিতে পারি। সেই সক্ষমতা আছে, সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। কিন্তু এটাকে ধরে রাখতে হবে। ধরে রাখতে হবে এ কারণে যে উন্নয়নটা আমরা করেছি তার গতিধারা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ; সেই উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব, আজ আমাদের সেই প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে অতীতে যারা ছিনিমিনি খেলেছে তারা তাদের শাস্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়েছে। আজ আওয়ামী লীগ পরপর তিন বার সরকারে আসতে পেরেছে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে। জনগণের ভোটে যদি নির্বাচিত না হতাম তাহলে এই তিন তিনবার আমরা সরকারে আসতে পারতাম না। আর আজকে ১৩ বছর পূরণ করতে পারতাম না। এটা হলো বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে স্বীকার করতে হবে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশের উন্নয়নের চাকাটা গতিশীল থাকবে।

ছবি

সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিসের আবেদন

ছবি

সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

টিআইবির প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ মন্ত্রীদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনায় অতি আগ্রহ কেন?

ছবি

নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি: ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে অপমানিত করা হয়েছে

ছবি

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ

ছবি

আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনদিন হয় নি: সিলেটে আসিফ নজরুল

ছবি

অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার দুটি লকার জব্দ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৬২২

ছবি

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘে যাচ্ছেন ফখরুল-তাহের-আখতার

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে চারটি পদ্ধতির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ছবি

ডেমু ট্রেন কেনায় রাষ্ট্রের ক্ষতি, দুদকের মামলা

ছবি

বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের প্রধান বিচারপতির বৈঠক

ছবি

ট্রাইব্যুনাল: নাহিদের সাক্ষ্য বুধবার, মাহমুদুর রহমানের জেরা শুরু

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন

ছবি

ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা: বাংলাদেশ-ভারতের ভৌগোলিক নৈকট্য ও আন্তঃনির্ভতা নতুন সুযোগে রূপান্তরের সম্ভাবনা

ছবি

ধর্মীয় উৎসবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নয়, সমান নাগরিক অধিকারের বাংলাদেশ চান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

ছবি

ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য বুধবার

ছবি

জুলাই আন্দোলন: ইনু-নূরসহ ৯ আসামির ভার্চুয়াল হাজিরা

ছবি

বাংলাদেশে উষ্ণায়নের প্রভাব: কর্মদিবস নষ্ট, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যে বড় ক্ষতি

ছবি

এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে কাজ করছে সরকার: বাণিজ্য সচিব

ছবি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ দফা জরুরি নির্দেশনা

ছবি

দুর্গাপূজা প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিচালকদের দপ্তর বদল, একজনকে ওএসডি

ছবি

ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাল বাংলাদেশ

ছবি

আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ছাড়াল ৩৮ হাজার

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে অঙ্গীকার ইউনূসের

ছবি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি : মাইকেল মিলার

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার হাতে ১২ তরুণ পেলেন ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’

ছবি

ইসিতে নিবন্ধন: নতুন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চলছে

ছবি

সেপ্টেম্বরের শেষে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি

ছবি

দ্বিমতের কোনো জায়গা নাই, এই সুযোগ আর আসবে না: ইউনূস

ছবি

নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারিত সময়ের আগেই

ছবি

মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানোতে ১১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাত: ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা সিদ্ধান্ত

tab

নিন্দুকের ঘেউ ঘেউয়ে কিছু আসে যায় না: প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে গণভবন থেকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ছবি : সংগৃহীত

মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী ২০২২

বাংলাদেশের উন্নয়ন যারা সহ্য করতে পারে না তাদের মুখে কিছুই হলো না, কিছুই হলো না কথা। তাদেরকে নিজের আয়নায় নিজের চেহারা দেখার পরামর্শ দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা কি এটা উপলব্ধি করতে পারে যে অর্থনৈতিক উন্নতি যদি না হয়ে থাকে তাহলে এত বড় বাজেট আমরা কীভাবে দিয়েছি? আর কীভাবে আমরা এত উন্নয়নকাজ করে যাচ্ছি? বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মহল বলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আর আমাদের দেশের কিছু লোক আছে তারা ঘেউ ঘেউ করেই যাচ্ছে। এই ঘেউ ঘেউ করতে থাকুক। এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। দেশের উন্নয়নটা হয়েছে বলেই আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এ আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আর সে ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে বদনাম করে বেড়াচ্ছে দেশে-বিদেশে। এটাও আরেকটি বিষয়। কই খালেদা জিয়ার আমলে তো ডিজিটাল হয়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন যারা সহ্য করতে পারে না তাদের মুখে কিছুই হলো না, কিছুই হলো না কথা। তাদের বলব নিজেরা আয়নায় একটু চেহারা দেখেন। আর অতীতে কী করেছেন সেটা দেখেন। আর যাদের জন্য মায়া কান্না একটা হলো দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত, আরেকটা খুনি। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। আইভী রহমানের হত্যাকারী। সেই হত্যাকারীরা আজকে সব থেকে বেশি সোচ্চার।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা আজ দুর্নীতি খোঁজে তাদের বলব, ২০০১ সাল থেকে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে সেটা দেখার জন্য। যারা ঋণ খেলাপির কথা বলেন তাদের বলব, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর এলিট শ্রেণি তৈরি করার জন্য যে ঋণ খেলাপি সৃষ্টির কালচার এ দেশে তৈরি করে গেছে সেই খবরটা আগে নিন। আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করলেই তার বিরুদ্ধে লেগে থাকা, এটা এক শ্রেণির মানুষের অভ্যাস। কারণ যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা খুনিদের নিয়ে এবং যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের উন্নয়নকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের কিছু প্রেতাত্মা এখনো সমাজে আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, শুধু এখানে না, বিদেশের কাছেও নালিশ করে বেড়াচ্ছে, তাদের কাছে তথ্য দিচ্ছে। এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারীকে দয়া করে আমরা বাসায় থাকতে দিয়েছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর তার ছেলে, একজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা আর দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ফিউজিটিভ হয়ে গেছে। বিদেশে পালিয়ে আছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।

সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন কোথায় কম হয়েছে? যারা শুধু এ দেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর উন্নয়নে নাকি হাজার হাজার কোটি টাকা ধ্বংস হয়েছে বলেন তাদের বলব, ধ্বংসই যদি হয়ে থাকে তাহলে আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে কেমন করে? ব্যাপকভাবে রাস্তাঘাট হয়েছে। স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনিক্যাল কলেজ, ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার- এই যে এত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হওয়া, এগুলো কীভাবে হয়েছে? আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। করোনাভাইরাসে অনেক উন্নত দেশ, অর্থশালী দেশ বিনা পয়সায় টিকা দেয় না। বিনা পয়সায় পরীক্ষা করে না। আমরা বিনা পয়সায় টিকা দিচ্ছি।

তিনি বলেন, যদি অর্থ ব্যয়ই না হবে তাহলে এত কাজ হলো কীভাবে? এইগুলো যারা দেখে না তাদের চোখ হচ্ছে সেই ঠুলি পরা। খুনিদের ঠুলি, যুদ্ধাপরাধীদের ঠুলি। এরা দেশের উন্নয়ন দেখে না। লুটে খেতে পারছে না সেটাই হচ্ছে বড় কথা। তারা ওই গরিবের হাড্ডিসার, কঙ্কালসার দেখিয়ে দেখিয়ে বিদেশ থেকে অর্থ এনে খাবে আর লুটপাট করে খাবে, সেটাই তাদের বড় কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন দেশকে ভালোবাসতে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে। তিনি যেদিন ১০ জানুয়ারি ফিরে আসেন। ফিরে এসে যে শব্দগুলো তিনি বলেছিলেন যে তার স্বপ্ন এ দেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, উন্নত জীবন পাবে। সেটাই আমাদের আদর্শ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আমি এটুকু বলব, জাতির পিতা এ সংগঠন নিজের হাতে তৈরি করে দিয়ে গেছেন। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে আমরা এই সংগঠনকে আবার সুসংগঠিত করেছি। আর একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ থাকলে এ দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা পায়। আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মঙ্গা থাকে না, দুর্ভিক্ষ থাকে না। মানুষের সেই হাহাকার নেই। আর মানুষকেও আমরা কষ্ট দেবো না। মানুষের অন্ন, বস্ত্রের চাহিদা আমরা মিটাই, মিটাতে পেরেছি। জিয়া, খালেদা জিয়া, এরশাদ সকলের আমলেই কিন্তু বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে বাংলাদেশের মানুষকে পরানো হতো। আজকে তা আর লাগে না। বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে পরাতে হয় না। আমরা পুরনো কাপড় বিদেশে পাঠাতে পারি, দিতে পারি। সেই সক্ষমতা আছে, সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। কিন্তু এটাকে ধরে রাখতে হবে। ধরে রাখতে হবে এ কারণে যে উন্নয়নটা আমরা করেছি তার গতিধারা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ; সেই উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব, আজ আমাদের সেই প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে অতীতে যারা ছিনিমিনি খেলেছে তারা তাদের শাস্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়েছে। আজ আওয়ামী লীগ পরপর তিন বার সরকারে আসতে পেরেছে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে। জনগণের ভোটে যদি নির্বাচিত না হতাম তাহলে এই তিন তিনবার আমরা সরকারে আসতে পারতাম না। আর আজকে ১৩ বছর পূরণ করতে পারতাম না। এটা হলো বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে স্বীকার করতে হবে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশের উন্নয়নের চাকাটা গতিশীল থাকবে।

back to top