যৌনকর্মীদের জীবনযাত্রা ও বাস্তব পরিস্থিতির তথ্য সংগ্রহ করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য করণীয় ঠিক করার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য আরমা দত্তকে আহ্বায়ক করে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপ-কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার পর এ বিষয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করবে স্থায়ী কমিটি।
কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সাগুফতা ইয়াসমিন, নাসরিন জাহান রতনা, বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন এবং আরমা দত্ত অংশ নেন।
যৌন কর্মীদের নিয়ে যেসব বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) কাজ করছে তাদেরকে আরও গতিশীল করতে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিটি।
বৈঠক শেষে উপ-কমিটির প্রধান আরমা দত্ত সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টির প্রস্তাব আমি তুলেছিলাম। সকলে আলোচনা করে সাব কমিটি গঠন করে দিয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান সাব কমিটি করে স্টাডি করার প্রস্তাব দেন, সাব কমিটির টার্মস অব রেফারেন্স এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রিপোর্ট দেওয়ার জন্যও সময় বেঁধে দেওয়া হয় দেয়নি। আমি মনে করি যৌনকর্মীদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। যৌনকর্মীরা যাতে সমাজে অন্য দশজন মানুষের মত নাগরিক অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারেন এটার একটি নীতি দরকার আছে।
বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, ১৮ বছর বয়সের নিচে যৌনকর্মীদের ধর্মীয় অনুশাসন শেখানো হচ্ছে। এছাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর জানায়, বিদ্যমান শিশু আইন- ২০১৩ , নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন- ২০০০, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় (ব্যক্তি) পুনর্বাসন আইন- ২০১১ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান মোতাবেক বিভিন্ন যৌনপল্লী ও অন্যান্য স্থান থেকে উদ্ধারের পর তাদের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক ছয়টি বিভাগে অবস্থিত ছয়টি সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিচালনা করা হয় ।
এ কেন্দ্রগুলোতে অবস্থানকালীন ধর্মীয় অনুশাসন, নিবিড় কাউন্সেলিং ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মানসিক উৎকর্ষ সাধন এবং অবৈধ যৌনাচারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়। পাশাপাশি নিবাসীদের প্রাথমিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং বিভিন্ন ট্রেড ভিত্তিক (কম্পিউটার, সেলাই ও এমব্রয়ডারি, ব্লক-বাটিক, ইলেকট্রনিক্স, পোল্ট্রি ও সবজি বাগান ইত্যাদি) প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা হয় । পরবর্তীতে কর্মসংস্থান, বিবাহ কিংবা প্রকৃত অভিভাবক, নিকট আত্মীয় অথবা অন্য কোন বৈধ অভিভাবকের নিকট হস্তান্তরের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, মোট ছয়টি কেন্দ্রের অনুমোদিত আসন সংখ্যা ৬০০। বর্তমানে ছয়টি কেন্দ্রের মধ্যে চারটি কেন্দ্রে নিবাসীর সংখ্যা ১৩৮ জন এবং শুরু থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মোট এক হাজার ৬২১ জন নিবাসী ভর্তি হয়েছে । সর্বমোট এক হাজার ৪৮৩ জন নিবাসীকে বিভিন্ন মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে ।
সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের সভাপতি আলেয়া আক্তার লিলি সাংবাদিকদের বলেন, দেশে এখন এক লাখ দুই হাজার যৌনকর্মী আছে। এরমধ্যে ১০টি যৌনপল্লীতে সাড়ে তিন হাজার কর্মী থাকে। বাকিসব ভাসমান।এই সংখ্যার মধ্যে এত পুনর্বাসনের অনুপাত খুবই কম।
আলেয়া বলেন, “আমাদের সঙ্গে যুক্ত যৌনকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা যেটা জানতে পেরেছি, তা হল, পুনর্বাসন মানেই তাদের কাছে উচ্ছেদ। এমনও হয়েছে একজন বাড়িতে গিয়েছে, গ্রামের লোক তাকে বের করে দিয়েছে। সে আবার পল্লীতে ফিরে এসেছে। আসলে যৌন কর্মীদের পুনর্বাসন করতে হলে কাজটা অনেক বিস্তৃত। অনেকগুলো বিষয় এখানে জড়িত। মানুষের মানসিকতা পরিবর্তনও করতে হবে।”
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২২
যৌনকর্মীদের জীবনযাত্রা ও বাস্তব পরিস্থিতির তথ্য সংগ্রহ করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য করণীয় ঠিক করার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য আরমা দত্তকে আহ্বায়ক করে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপ-কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার পর এ বিষয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করবে স্থায়ী কমিটি।
কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সাগুফতা ইয়াসমিন, নাসরিন জাহান রতনা, বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন এবং আরমা দত্ত অংশ নেন।
যৌন কর্মীদের নিয়ে যেসব বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) কাজ করছে তাদেরকে আরও গতিশীল করতে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিটি।
বৈঠক শেষে উপ-কমিটির প্রধান আরমা দত্ত সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টির প্রস্তাব আমি তুলেছিলাম। সকলে আলোচনা করে সাব কমিটি গঠন করে দিয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান সাব কমিটি করে স্টাডি করার প্রস্তাব দেন, সাব কমিটির টার্মস অব রেফারেন্স এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রিপোর্ট দেওয়ার জন্যও সময় বেঁধে দেওয়া হয় দেয়নি। আমি মনে করি যৌনকর্মীদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। যৌনকর্মীরা যাতে সমাজে অন্য দশজন মানুষের মত নাগরিক অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারেন এটার একটি নীতি দরকার আছে।
বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, ১৮ বছর বয়সের নিচে যৌনকর্মীদের ধর্মীয় অনুশাসন শেখানো হচ্ছে। এছাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর জানায়, বিদ্যমান শিশু আইন- ২০১৩ , নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন- ২০০০, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় (ব্যক্তি) পুনর্বাসন আইন- ২০১১ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান মোতাবেক বিভিন্ন যৌনপল্লী ও অন্যান্য স্থান থেকে উদ্ধারের পর তাদের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক ছয়টি বিভাগে অবস্থিত ছয়টি সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিচালনা করা হয় ।
এ কেন্দ্রগুলোতে অবস্থানকালীন ধর্মীয় অনুশাসন, নিবিড় কাউন্সেলিং ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মানসিক উৎকর্ষ সাধন এবং অবৈধ যৌনাচারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়। পাশাপাশি নিবাসীদের প্রাথমিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং বিভিন্ন ট্রেড ভিত্তিক (কম্পিউটার, সেলাই ও এমব্রয়ডারি, ব্লক-বাটিক, ইলেকট্রনিক্স, পোল্ট্রি ও সবজি বাগান ইত্যাদি) প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা হয় । পরবর্তীতে কর্মসংস্থান, বিবাহ কিংবা প্রকৃত অভিভাবক, নিকট আত্মীয় অথবা অন্য কোন বৈধ অভিভাবকের নিকট হস্তান্তরের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, মোট ছয়টি কেন্দ্রের অনুমোদিত আসন সংখ্যা ৬০০। বর্তমানে ছয়টি কেন্দ্রের মধ্যে চারটি কেন্দ্রে নিবাসীর সংখ্যা ১৩৮ জন এবং শুরু থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মোট এক হাজার ৬২১ জন নিবাসী ভর্তি হয়েছে । সর্বমোট এক হাজার ৪৮৩ জন নিবাসীকে বিভিন্ন মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে ।
সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের সভাপতি আলেয়া আক্তার লিলি সাংবাদিকদের বলেন, দেশে এখন এক লাখ দুই হাজার যৌনকর্মী আছে। এরমধ্যে ১০টি যৌনপল্লীতে সাড়ে তিন হাজার কর্মী থাকে। বাকিসব ভাসমান।এই সংখ্যার মধ্যে এত পুনর্বাসনের অনুপাত খুবই কম।
আলেয়া বলেন, “আমাদের সঙ্গে যুক্ত যৌনকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা যেটা জানতে পেরেছি, তা হল, পুনর্বাসন মানেই তাদের কাছে উচ্ছেদ। এমনও হয়েছে একজন বাড়িতে গিয়েছে, গ্রামের লোক তাকে বের করে দিয়েছে। সে আবার পল্লীতে ফিরে এসেছে। আসলে যৌন কর্মীদের পুনর্বাসন করতে হলে কাজটা অনেক বিস্তৃত। অনেকগুলো বিষয় এখানে জড়িত। মানুষের মানসিকতা পরিবর্তনও করতে হবে।”