টোলের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর নির্মাণ খরচ উঠাতে ৩০ বছর পর্যন্ত লাগতে পারে

শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

টোল আদায়ের মাধ্যমে পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয় উঠে আসতে ২৫ থেকে ৩০ বছর লাগতে পারে। টোল আদায়ের মাধ্যমে ২০৫০ সাল নাগাদ পদ্মা সেতু প্রকল্পের পুরো ব্যয় উঠে আসতে পারে বলে ধারণা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের।

নির্মাণ ব্যয়ে উঠে আসার পাশাপাশি পদ্মা সেতু দেশের অর্থনীতি ও জিডিপিতে অসামান্য অবদান রাখবে। এই সেতু সরাসারি রাজধানীর সঙ্গে ২১ জেলা সংযোগ স্থাপন করায় ওইসব জেলার মানুষের জীবনমান, অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক অবস্থায়ও ব্যাপক অগ্রগতির আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের সার্বিক অর্থনীতির বিকাশ ও জিডিপিতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতুর কারণে দেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি এক দশমিক ২ শতাংশ থেকে দেড় শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে।

সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থে নির্মাণ করা হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। বিশাল এই বিনিয়োগ উঠিয়ে আনার দুটি উপায় রয়েছে। এর একটি হলো-সেতু দিয়ে পারাপার হওয়া যানবাহন থেকে টোল আদায়; অন্যটি হলো জিডিপির অতিরিক্ত প্রাপ্তি বিবেচনায় নেয়া।

কত বছরে এই অর্থ উঠে আসতে পারে সে সর্ম্পকে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন হিসাব নেই। তবে সেতুর সঙ্গে সম্পৃক্ত দেশি-বিদেশি একাধিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র টোল আদায়ের মাধ্যমে ৩০ বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর পুরো বিনিয়োগ উঠিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্য বলছে, পদ্মা সেতু দিয়ে প্রথম বছর দৈনিক ২৪ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। ২০২৫ সাল নাগাদ সেতু পারাপারে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪১ হাজার ৬০০। পর্যায়ক্রমে যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে। এভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ শুধু যানবাহন থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমেই পদ্মা সেতুর ব্যয় উঠে আসবে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হওয়া টাকা সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে উঠে আসবে। তবে টোল আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক থাকলে ২০ থেকে ২৫ বছরেই পুরো টাকা উঠে আসতে পারে।

সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব দক্ষিণ কোরিয়া এক্সপ্রেস করপোরেশন ও চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে জানিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, দুই প্রতিষ্ঠান টোল আদায়ের পাশাপাশি সেতুর ঋণ শোধ, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে।

এদিকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ধারণা, পদ্মা সেতু পারাপারে যানবাহন থেকে প্রথম বছর এক হাজার ৪৩০ কোটি টাক আয় হবে। এ হিসাবে ৩৫ বছরে এই সেতু থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় হবে।

যদিও সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা, প্রথম বছর এক হাজার ৬০৪ কোটি টাকার টোল আদায় হবে। সেতু বিভাগ জানিয়েছে, টোলের বেশিরভাগ টাকা দিয়ে সরকারের ঋণ পরিশোধ করা হবে। সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে বাকি অর্থ খরচ হবে।

গত ১৭ মে পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপারের টোল নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সেতু কর্তৃপক্ষ পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে। এজন্য ৩৫ বছরে সরকারকে (অর্থ মন্ত্রণালয়) সুদে-আসলে ৩৬ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। এই ঋণ টোল আদায়ের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে।

‘জাতীয়’ : আরও খবর

» স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের

সম্প্রতি