alt

শেখ হাসিনার প্রশ্ন : পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কী করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০২২

প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, পচাঁত্তরে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে লাশ পড়ে থাকলেও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কেন এগিয়ে প্রতিবাদ করেননি।শেখ হাসিনা বলেন, “১৫ আগস্ট ৩২ নম্বর ওই ধানমণ্ডি। লাশগুলো তো পড়েছিল। কত স্লোগান- বঙ্গবন্ধু তুমি আছো যেখানে, আমরা আছি সেখানে। অনেক স্লোগান তো হচ্ছিল। কোথায় ছিল সেই মানুষগুলি?

মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “একটি মানুষ ছিল না সাহস করে এগিয়ে আসার? একটি মানুষ ছিল না প্রতিবাদ করার? কেন করতে পারেনি?” তিনি বলেন, “১৬ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে গেল টুঙ্গিপাড়ায়, কারণ দুর্গম পথ। যেতে ২২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। তাই কেউ যেতে পারবে না। তাই সেখানে নিয়ে মা-বাবার কবরের পাশে সেখানে মাটি দিয়ে আসে”।

সেখানে গোসল এবং কাফন পড়াতে চেয়ে মৌলভী সাহেব আপত্তি করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু নিয়ে যাননি। শুধু দিয়ে গেছেন। একটা দেশ দিয়ে গেছেন, একটা জাতি দিয়ে গেছেন। পরিচয় দিয়ে গেছেন। আত্মপরিচয় দিয়ে গেছেন। বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলে উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করে দিয়েছেন। কিছুই নিয়ে যাননি বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের গরিব মানুষকে যে রিলিফের কাপড় তিনি দিতে পারতেন, সেই রিলিফের কাপড়ের পাড় ছিড়ে সেটা দিয়েই তাকে কাফন দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে কিছুই নিয়ে যাননি।

“আমার বাবা-মা ভাই বোন কেউ কিছু নিয়ে যায়নি। ১৬ তারিখে সকল লাশ নিয়ে বনানীতে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। মুসলমান হিসেবে এতটুকু দাবি থাকে জানাজা পড়ার সেটাও তো পায়নি। একটু কাফনের কাপড় সেটাও দেয়নি।”

শেখ হাসিনা বলেণ, ৭৫ এর ঘাতকরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশকে ইসলামি রাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু ইসলামের কোনো বিধান তারা মানেনি বলেও মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমার এটা প্রশ্ন, আমাদের নেতারাও তো এখানে আছেন। জাতির পিতা তো অনেককে ফোনও করেছিলেন। কী করেছিলেন তারা? বেঁচে থাকতে সবাই থাকে, মরে গেলে যে কেউ থাকে না এটা তার জীবন্ত প্রমাণ। এজন্য আমি কিছু আশা করি না। শুধু আমার একটাই কথা, এই দেশ জাতির পিতা স্বাধীন করেছিলেন, এ দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন বলে।”

দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় আসার পেছনে নিজের চেষ্টার কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, “তাই আমার একটাই প্রচেষ্টা, সব সহ্য করে নীলকণ্ঠ হয়ে শুধু অপেক্ষা করেছি কবে ক্ষমতায় যেতে পারব। আর এই দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারব। তাহলেই এ হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ নেওয়া হবে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফিরলেও হত্যার বিচারও চাইতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “কারণ ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের (খুনিদের) পুরস্কৃত করা হয়েছে। পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়েছে। খুনিদেরকে রাজনৈতিক দল গঠন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।”

এসময় হত্যাকারীদের রক্ষায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন “তাদের নিজে উদ্যোগী হয়ে লিবিয়াতে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টোকে অনুরোধ করে তার মাধ্যমেও লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফির সাথে কথা বলে এই খুনিদের সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।”

পরবর্তীতে খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে জিয়াউর রহমান পুরষ্কৃত করেছেন বলে জানান শেখ হাসিনা।“সে যদি খুনিই না হবে,ষড়যন্ত্রকারী না হবে তাহলে খুনি মোশতাক তাকে সেনাপ্রধান করবে কেন? আর সে এই খুনিদেরকে কেন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেবে?”

সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বঙ্গবন্ধুর খুনি পাশা (আবদুল আজিজ পাশা)ও হুদাকে (বজলুল হুদা) নিয়ে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি (প্রগশ)নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন এবং সাবেক সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ খুনি ফারুককে (সৈয়দ ফারুক রহমান) দিয়ে ফ্রিডম পার্টি গঠন করেন বলে ভাষণে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া আরও এক ধাপ ওপরে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনে খালেদা জিয়া খুনি ফারুক, রশিদ এবং হুদাকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছিল। ফারুককে জেতাতে না পারলেও হুদাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে এবং রশিদকে কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত ঘোষণা দিয়ে সংসদে বিরোধী দলের নেতা বানায়। ‘

আলোচনাসভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মো.আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম উপস্থিত ছিলেন।

ছবি

১৪ মাসে ৪০ বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনের মাধ্যমে ফয়সালা করা হবে: স্বরাষ্ট্র্র উপদেষ্টা

ছবি

আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি: বিএনপির আপত্তি আমলে নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার

কোটা আন্দোলনে হামলায় ঢাবির আরও ২৭৫ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত

ছবি

নির্বাচন: দেড় লাখের মধ্যে ৪৮ হাজার পুলিশের প্রশিক্ষণ শেষ

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তিনবারেও সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থ প্রসিকিউশন

ছবি

নভেম্বর মাসেও কমছে না ডেঙ্গু, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

ছবি

সনদ, গণভোট: দলগুলোকে দ্রুত ‘সিদ্ধান্ত’ নেয়ার আহ্বান, নইলে পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়ায় মাধবদীতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

ছবি

বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা খাতে তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

বিটিআরসির প্রস্তাবিত নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে ইন্টারনেটের দাম বাড়বে: আইএসপিএবি

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৭ জন

ছবি

পঞ্চদশ সংশোধনী পুরো বাতিল চেয়ে আপিল

ছবি

দেশ কোন পথে যাবে, তা নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনের ওপর: সিইসি

ছবি

গুলিবিদ্ধ নাদিমের পেট থেকে রক্ত ঝরছিল: তাবাসুম

ছবি

‘নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হবে না’

ছবি

গণভোট নিয়ে ঐক্যবদ্ধ সুপারিশ জানাতে এক সপ্তাহ সময় দিল সরকার

ছবি

বাপা-বেনের মতবিনিময়: তিস্তা প্রকল্পে স্বচ্ছতা, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও পরিবেশ রক্ষার দাবি

ছবি

কাতারের নিরাপত্তা হুমকির বিরুদ্ধে সংহতি পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশের

ছবি

সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে নেপালের প্রধান বিচারপতি

ছবি

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়মুক্তির অবসান চায় এমএফসি

ছবি

ঝিলের জায়গায় থানা ভবন নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

বিদেশি এয়ারলাইন্স: জিএসএ নিয়োগ বহাল রাখার দাবি

ছবি

জেল হত্যা দিবস আজ

ছবি

তৃতীয় ধাপের হালনাগাদে ১৩ লাখের বেশি নতুন ভোটার: ইসি সচিব

ছবি

‘জাতীয় নির্বাচনে ভুয়া তথ্যের ঝুঁকি ‘নজিরবিহীন’

বেরোবি: চুক্তিভিত্তিক রেজিস্টার পদে অনুমোদনের ২ মাস আগেই নিয়োগদান!

ছবি

বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ আইন: ‘দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের দাম ২৫ শতাংশ বেড়েছে’

ছবি

‘হ-য-ব-র-ল’ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলায় আনার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

অক্টোবরের মধ্যে ১৮ বছর বয়সী ভোটারদের তালিকা হালনাগাদ, নতুন ভোটার ১৩ লাখের বেশি

পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশে ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে একযোগে অভিযান

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ১৬২ জন

ছবি

বেতাগীতে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব

ছবি

যোগাযোগ ব্যবস্থায় দ্রুত শৃঙ্খলা ফেরানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

নির্বাচন পর্যন্ত ‘অপরিহার্য কারণ’ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ নয়: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

ছবি

হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ

ছবি

মায়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণ: বাঁচলেন না বিজিবি সদস্য আক্তার

tab

শেখ হাসিনার প্রশ্ন : পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কী করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০২২

প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, পচাঁত্তরে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে লাশ পড়ে থাকলেও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কেন এগিয়ে প্রতিবাদ করেননি।শেখ হাসিনা বলেন, “১৫ আগস্ট ৩২ নম্বর ওই ধানমণ্ডি। লাশগুলো তো পড়েছিল। কত স্লোগান- বঙ্গবন্ধু তুমি আছো যেখানে, আমরা আছি সেখানে। অনেক স্লোগান তো হচ্ছিল। কোথায় ছিল সেই মানুষগুলি?

মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “একটি মানুষ ছিল না সাহস করে এগিয়ে আসার? একটি মানুষ ছিল না প্রতিবাদ করার? কেন করতে পারেনি?” তিনি বলেন, “১৬ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে গেল টুঙ্গিপাড়ায়, কারণ দুর্গম পথ। যেতে ২২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। তাই কেউ যেতে পারবে না। তাই সেখানে নিয়ে মা-বাবার কবরের পাশে সেখানে মাটি দিয়ে আসে”।

সেখানে গোসল এবং কাফন পড়াতে চেয়ে মৌলভী সাহেব আপত্তি করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু নিয়ে যাননি। শুধু দিয়ে গেছেন। একটা দেশ দিয়ে গেছেন, একটা জাতি দিয়ে গেছেন। পরিচয় দিয়ে গেছেন। আত্মপরিচয় দিয়ে গেছেন। বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলে উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করে দিয়েছেন। কিছুই নিয়ে যাননি বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের গরিব মানুষকে যে রিলিফের কাপড় তিনি দিতে পারতেন, সেই রিলিফের কাপড়ের পাড় ছিড়ে সেটা দিয়েই তাকে কাফন দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে কিছুই নিয়ে যাননি।

“আমার বাবা-মা ভাই বোন কেউ কিছু নিয়ে যায়নি। ১৬ তারিখে সকল লাশ নিয়ে বনানীতে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। মুসলমান হিসেবে এতটুকু দাবি থাকে জানাজা পড়ার সেটাও তো পায়নি। একটু কাফনের কাপড় সেটাও দেয়নি।”

শেখ হাসিনা বলেণ, ৭৫ এর ঘাতকরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশকে ইসলামি রাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু ইসলামের কোনো বিধান তারা মানেনি বলেও মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমার এটা প্রশ্ন, আমাদের নেতারাও তো এখানে আছেন। জাতির পিতা তো অনেককে ফোনও করেছিলেন। কী করেছিলেন তারা? বেঁচে থাকতে সবাই থাকে, মরে গেলে যে কেউ থাকে না এটা তার জীবন্ত প্রমাণ। এজন্য আমি কিছু আশা করি না। শুধু আমার একটাই কথা, এই দেশ জাতির পিতা স্বাধীন করেছিলেন, এ দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন বলে।”

দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় আসার পেছনে নিজের চেষ্টার কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, “তাই আমার একটাই প্রচেষ্টা, সব সহ্য করে নীলকণ্ঠ হয়ে শুধু অপেক্ষা করেছি কবে ক্ষমতায় যেতে পারব। আর এই দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারব। তাহলেই এ হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ নেওয়া হবে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফিরলেও হত্যার বিচারও চাইতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “কারণ ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের (খুনিদের) পুরস্কৃত করা হয়েছে। পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়েছে। খুনিদেরকে রাজনৈতিক দল গঠন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।”

এসময় হত্যাকারীদের রক্ষায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন “তাদের নিজে উদ্যোগী হয়ে লিবিয়াতে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টোকে অনুরোধ করে তার মাধ্যমেও লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফির সাথে কথা বলে এই খুনিদের সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।”

পরবর্তীতে খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে জিয়াউর রহমান পুরষ্কৃত করেছেন বলে জানান শেখ হাসিনা।“সে যদি খুনিই না হবে,ষড়যন্ত্রকারী না হবে তাহলে খুনি মোশতাক তাকে সেনাপ্রধান করবে কেন? আর সে এই খুনিদেরকে কেন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেবে?”

সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বঙ্গবন্ধুর খুনি পাশা (আবদুল আজিজ পাশা)ও হুদাকে (বজলুল হুদা) নিয়ে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি (প্রগশ)নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন এবং সাবেক সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ খুনি ফারুককে (সৈয়দ ফারুক রহমান) দিয়ে ফ্রিডম পার্টি গঠন করেন বলে ভাষণে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া আরও এক ধাপ ওপরে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনে খালেদা জিয়া খুনি ফারুক, রশিদ এবং হুদাকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছিল। ফারুককে জেতাতে না পারলেও হুদাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে এবং রশিদকে কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত ঘোষণা দিয়ে সংসদে বিরোধী দলের নেতা বানায়। ‘

আলোচনাসভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মো.আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম উপস্থিত ছিলেন।

back to top