alt

জাতীয়

পিটার হাসের তৎপরতা, সরকার ও বিরোধী নেতাদের সঙ্গে আবার বৈঠক

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩

দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার ‘হুমকি’ দেয়ার পর দেশটির রাষ্ট্রদূতের তৎপরতা বেশ লক্ষণীয়। ইতিমধ্যে সরকার ও বিরোধী বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বৈঠক করেছেন।

মঙ্গলবার (৬ জুন) প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি সালমান রহমানের সরকারি অফিসে গিয়ে এই বৈঠক করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও বৈঠক করেন পিটার হাস।

আনিসুল হক বলেছেন, বৈঠকে মূলত শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বক্তব্য ছিল। সেসব বিষয় নিয়েই রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন এবং এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’ আইনমন্ত্রী ওই বৈঠক সম্পর্কে আর কিছু বলেননি।

সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চলতি মাসেই জেনেভা যাচ্ছেন। তার আগে শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের বক্তব্য জানলো যুক্তরাষ্ট্র।

তবে, বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে রাজনীতি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে মার্কিন দূতাবাসে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব। দুপুর আড়াইটায় তিনি দূতাবাস থেকে বের হন। জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম পিটার হাসের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন এবং এই বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি একাই ছিলেন। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সে সময় বিএনপির আরও দুজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বলে তারা মনে করেন। এ বক্তব্যই তিনি তুলে ধরেন পিটার হাসের কাছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার যেহেতু নির্বাচনী প্রক্রিয়াসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে, সে প্রেক্ষাপটে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে এই ভিসানীতি দিতে হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের এ অবস্থানই পিটার হাসের কাছে তুলে ধরেছি।’

গত রোববার পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করতে গুলশানে তার বাসায় যান জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের। জিএম কাদের বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো। তিনি (রাষ্ট্রদূত) জানতে চেয়েছেন, আমি যেসব বক্তব্য দিচ্ছি এবং লেখালেখি করছি, তাতে আমার কোন সমস্যা বা ঝামেলা হচ্ছে কি না। এ ছাড়া ভিসানীতি কেমন হয়েছে, এটি আরও কীভাবে কার্যকর করা যায়, এ ব্যাপারে কোন পরামর্শ আছে কি না, রাষ্ট্রদূতরা দায়িত্ব সীমার বাইরে গিয়ে কোন কর্মকান্ডে জড়িত হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘একটা ফেইজ গেছে, আজকে থেকে মাস ছয়েক আগে; যদি কেউ, কোন দেশের রাষ্ট্রদূত আবারও সে ধরনের কর্মকান্ডে জড়িত হন, যেটা আমরা মনে করব যে, তাদের বাউন্ডারিকে, লাইনকে ক্রস করে ফেলছে, আমরা অবশ্যই সেটাকে আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’

এছাড়া গত বছরের মাঝামাঝিতে ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকদের ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও রীতিনীতি’ মেনে চলার তাগিদ দিয়েছে সরকার। ঢাকার সব দূতাবাস, জাতিসংঘ কার্যালয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিসে এ সংক্রান্ত অভিন্ন নোট ভারবাল পাঠিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মূলত বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকটের পটভূমিতে কূটনীতিকদের তৎপরতা নতুন কিছু নয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকায় এসেছিলেন তখনকার কমনওয়েলথ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্যার নিনিয়ান স্টেফান। ২০০৬ সালের শেষ দিকে এবং ২০০৭ সালের প্রথম দিকে ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা দেশের কয়েকজন কূটনীতিক ছিলেন বেশ তৎপর। উইকিলিকসে প্রকাশিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রেসিয়া বিউটেনিসের গোপন তারবার্তা থেকে জানা যায়, ঢাকাস্থ পশ্চিমা কূটনীতিকরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করতেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘কফি গ্রুপ’। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধি। এই গ্রুপে জাপানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

পরে ২০১৩ সালে জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত হয়ে ঢাকায় এসে দু’পক্ষকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকো। সে সময় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংকটের সমাধান খুঁজতে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।

পরে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও নানা ধরনের তৎপরতায় সম্পৃক্ত হয়েছিলেন বিদেশি কূটনীতিকদের অনেকে।

ছবি

আইভীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, ৬ ঘন্টার আভিযান, এলাকাবাসীর বাধা

ছবি

বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষমতা বহাল থাকছে দুই মাস

‘উলবাকিয়া মশা’ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নতুন সম্ভাবনা: আইসিডিডিআর’বি

সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মৌন প্রতিবাদ সমাবেশ

বিএনপির সদস্য সংগ্রহ: যোগ দিতে পারে আ’লীগের ‘ক্লিন ইমেজের’ লোকও

ছবি

ববি’র ভিসির পদত্যাগ দাবি : শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন শিক্ষকরাও

ছবি

আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: পুলিশ সুপার প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি গঠন

ছবি

বিচার কার্যক্রম ত্বরান্বেতে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২

ছবি

মুন্সীগঞ্জের নিমতলায় ৫ জনসহ পাঁচ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১১

রমনা বটমূলে বোমা হামলা: হাইকোর্টের রায়ের পরবর্তী অংশ ঘোষণা ১৩ মে

এবার টিউলিপকে দুদকে তলব

ছাত্রদের বাদ দিয়ে ‘দ্বি-দলীয় বন্দোবস্তে’ ফিরতে ‘এস্টাবলিশমেন্ট অপেক্ষমাণ’: তথ্য উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম বন্দরে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে নেদারল্যান্ড: বিডা চেয়ারম্যান

প্রতিদিন নতুন নতুন সংস্কারের লিস্ট, সব জটিল হয়ে যাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

ছবি

ভারত-পাকিস্তান: পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত, বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা

ছবি

সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে পারলে পদত্যাগ করবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

পাকিস্তানে ভারতের হামলা দুঃখজনক: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

ছবি

ছাত্রদের বাদ দিয়ে দ্বিদলীয় বন্দোবস্তে ফিরতে চায় এস্টাবলিশমেন্ট: মাহফুজ আলম

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

ছবি

রমনা বটমূলে বোমা হামলা: হাইকোর্টে রায় পড়া শুরু

খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা, সবাইকে ধন্যবাদ তারেক রহমানের

হত্যার তিন মাস পর কারামুক্ত হই, আদালতকে লিটন

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বেতন কমানোর নির্দেশ

সাবেক আইজিপি শহীদুল ও দুইজনকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

মিথ্যা মামলা: আসামি খালাস, বাদীর সাজা

ছবি

বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী বৃহস্পতিবার

ছবি

দেশে প্রথম জলাভূমিনির্ভর প্রাণীদের দু’টি অভয়ারণ্য ঘোষণা

ছবি

ঘোড়াঘাটে পানির দরে আলু বিক্রি, পথে বসেছেন চাষিরা

ছবি

একযোগে বিআরটিএ’র ৩৫ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

ভারত যেভাবে লোকজনকে ঠেলে দিচ্ছে, তা ‘ঠিক নয়’: খলিলুর

ছবি

কুড়িগ্রামে ৩৬ রোহিঙ্গাসহ ৮ বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে বিএসএফ

ছবি

শেখ হাসিনাকে দুদকে তলব

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রশ্ন

৬ হাজার কোটি টাকার হিসাব না দিয়েই ‘পালিয়েছেন’ সাবেক প্রকল্প পরিচালক : উপদেষ্টা

সালমান পরিবারের ৯৪ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ

ঐকমত্যে পৌঁছাতে ছাড় দেবে নাগরিক ঐক্য

tab

জাতীয়

পিটার হাসের তৎপরতা, সরকার ও বিরোধী নেতাদের সঙ্গে আবার বৈঠক

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩

দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার ‘হুমকি’ দেয়ার পর দেশটির রাষ্ট্রদূতের তৎপরতা বেশ লক্ষণীয়। ইতিমধ্যে সরকার ও বিরোধী বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বৈঠক করেছেন।

মঙ্গলবার (৬ জুন) প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি সালমান রহমানের সরকারি অফিসে গিয়ে এই বৈঠক করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও বৈঠক করেন পিটার হাস।

আনিসুল হক বলেছেন, বৈঠকে মূলত শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বক্তব্য ছিল। সেসব বিষয় নিয়েই রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন এবং এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’ আইনমন্ত্রী ওই বৈঠক সম্পর্কে আর কিছু বলেননি।

সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চলতি মাসেই জেনেভা যাচ্ছেন। তার আগে শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের বক্তব্য জানলো যুক্তরাষ্ট্র।

তবে, বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে রাজনীতি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে মার্কিন দূতাবাসে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব। দুপুর আড়াইটায় তিনি দূতাবাস থেকে বের হন। জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম পিটার হাসের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন এবং এই বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি একাই ছিলেন। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সে সময় বিএনপির আরও দুজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বলে তারা মনে করেন। এ বক্তব্যই তিনি তুলে ধরেন পিটার হাসের কাছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার যেহেতু নির্বাচনী প্রক্রিয়াসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে, সে প্রেক্ষাপটে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে এই ভিসানীতি দিতে হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের এ অবস্থানই পিটার হাসের কাছে তুলে ধরেছি।’

গত রোববার পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করতে গুলশানে তার বাসায় যান জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের। জিএম কাদের বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো। তিনি (রাষ্ট্রদূত) জানতে চেয়েছেন, আমি যেসব বক্তব্য দিচ্ছি এবং লেখালেখি করছি, তাতে আমার কোন সমস্যা বা ঝামেলা হচ্ছে কি না। এ ছাড়া ভিসানীতি কেমন হয়েছে, এটি আরও কীভাবে কার্যকর করা যায়, এ ব্যাপারে কোন পরামর্শ আছে কি না, রাষ্ট্রদূতরা দায়িত্ব সীমার বাইরে গিয়ে কোন কর্মকান্ডে জড়িত হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘একটা ফেইজ গেছে, আজকে থেকে মাস ছয়েক আগে; যদি কেউ, কোন দেশের রাষ্ট্রদূত আবারও সে ধরনের কর্মকান্ডে জড়িত হন, যেটা আমরা মনে করব যে, তাদের বাউন্ডারিকে, লাইনকে ক্রস করে ফেলছে, আমরা অবশ্যই সেটাকে আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’

এছাড়া গত বছরের মাঝামাঝিতে ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকদের ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও রীতিনীতি’ মেনে চলার তাগিদ দিয়েছে সরকার। ঢাকার সব দূতাবাস, জাতিসংঘ কার্যালয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিসে এ সংক্রান্ত অভিন্ন নোট ভারবাল পাঠিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মূলত বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকটের পটভূমিতে কূটনীতিকদের তৎপরতা নতুন কিছু নয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকায় এসেছিলেন তখনকার কমনওয়েলথ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্যার নিনিয়ান স্টেফান। ২০০৬ সালের শেষ দিকে এবং ২০০৭ সালের প্রথম দিকে ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা দেশের কয়েকজন কূটনীতিক ছিলেন বেশ তৎপর। উইকিলিকসে প্রকাশিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রেসিয়া বিউটেনিসের গোপন তারবার্তা থেকে জানা যায়, ঢাকাস্থ পশ্চিমা কূটনীতিকরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করতেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘কফি গ্রুপ’। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধি। এই গ্রুপে জাপানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

পরে ২০১৩ সালে জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত হয়ে ঢাকায় এসে দু’পক্ষকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকো। সে সময় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংকটের সমাধান খুঁজতে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।

পরে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও নানা ধরনের তৎপরতায় সম্পৃক্ত হয়েছিলেন বিদেশি কূটনীতিকদের অনেকে।

back to top