রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত হলেও, নির্বাচনটি কীভাবে পরিচালিত হবে—তা নিয়ে এখনও মতানৈক্য রয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার চতুর্থ দিনের সংলাপে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এই সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সিপিবি, এনসিপি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
সংলাপ শেষে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন,
“সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি যেভাবে আছে, তা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তায় সবাই একমত হয়েছেন। তবে সেই পরিবর্তিত পদ্ধতি কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে।”
দ্বিকক্ষ সংসদের প্রস্তাব
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের পাশাপাশি সংলাপে উঠে এসেছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাব।
কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী:
>নিম্নকক্ষে থাকবে ৪০০ আসন, যার মধ্যে ১০০টি নারী আসন সরাসরি ভোটে নির্ধারিত হবে।
>উচ্চকক্ষে থাকবে ১০৫টি আসন, যেগুলো নির্বাচন হবে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে।
সব মিলিয়ে জাতীয় সংসদের আসন হবে ৫০৫টি।
আলী রীয়াজ বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রশ্নে উচ্চকক্ষের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্বিকক্ষ জাতীয় সংসদ নিয়েও বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। যদিও অধিকাংশ দল এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে, তবু চূড়ান্ত ঐকমত্য এখনও হয়নি।”
গোপন ব্যালট ও ইলেক্টোরাল কলেজের ভাবনা
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন যেন গোপন ব্যালটে হয়—এ দাবিতে একমত হয়েছে বেশ কয়েকটি দল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,
“আমরা গোপন ব্যালটের পক্ষে মত দিয়েছি। যদি সব দল একমত হয়, তাহলে বিএনপিও সমর্থন জানাবে।”
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,
“রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে কথা হচ্ছিল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপন ব্যালটের কথা আমরা বলেছি।”
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন,
“রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শুধু সংসদের সদস্যদের মাধ্যমে না হয়ে আরও বিস্তৃত ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে হওয়া উচিত। এতে জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছি।”
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন,
“রাষ্ট্রপতি হতে হবে একজন সৎ, যোগ্য, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষকে। এজন্য সাংবিধানিক বাধাগুলো দূর করে সংসদ সদস্যদের গোপন ব্যালটে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা দরকার।”
এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি কেউ
সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে মতামত ঘনিষ্ঠ হলেও পদ্ধতিগত বিষয়ে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে।
কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন,
“আমরা আশা করি আগামী সপ্তাহে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে ফের আলোচনা হবে। সব কিছু চূড়ান্ত করতে আরও সময় লাগবে।”
বর্তমানে সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটে। ১৯৯১ সালে কেবল একবার এই প্রক্রিয়ায় সরাসরি ভোট হয়। এরপর প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
---
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত হলেও, নির্বাচনটি কীভাবে পরিচালিত হবে—তা নিয়ে এখনও মতানৈক্য রয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার চতুর্থ দিনের সংলাপে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এই সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সিপিবি, এনসিপি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
সংলাপ শেষে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন,
“সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি যেভাবে আছে, তা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তায় সবাই একমত হয়েছেন। তবে সেই পরিবর্তিত পদ্ধতি কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে।”
দ্বিকক্ষ সংসদের প্রস্তাব
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের পাশাপাশি সংলাপে উঠে এসেছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাব।
কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী:
>নিম্নকক্ষে থাকবে ৪০০ আসন, যার মধ্যে ১০০টি নারী আসন সরাসরি ভোটে নির্ধারিত হবে।
>উচ্চকক্ষে থাকবে ১০৫টি আসন, যেগুলো নির্বাচন হবে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে।
সব মিলিয়ে জাতীয় সংসদের আসন হবে ৫০৫টি।
আলী রীয়াজ বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রশ্নে উচ্চকক্ষের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্বিকক্ষ জাতীয় সংসদ নিয়েও বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। যদিও অধিকাংশ দল এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে, তবু চূড়ান্ত ঐকমত্য এখনও হয়নি।”
গোপন ব্যালট ও ইলেক্টোরাল কলেজের ভাবনা
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন যেন গোপন ব্যালটে হয়—এ দাবিতে একমত হয়েছে বেশ কয়েকটি দল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,
“আমরা গোপন ব্যালটের পক্ষে মত দিয়েছি। যদি সব দল একমত হয়, তাহলে বিএনপিও সমর্থন জানাবে।”
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,
“রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে কথা হচ্ছিল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপন ব্যালটের কথা আমরা বলেছি।”
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন,
“রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শুধু সংসদের সদস্যদের মাধ্যমে না হয়ে আরও বিস্তৃত ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে হওয়া উচিত। এতে জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছি।”
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন,
“রাষ্ট্রপতি হতে হবে একজন সৎ, যোগ্য, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষকে। এজন্য সাংবিধানিক বাধাগুলো দূর করে সংসদ সদস্যদের গোপন ব্যালটে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা দরকার।”
এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি কেউ
সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে মতামত ঘনিষ্ঠ হলেও পদ্ধতিগত বিষয়ে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে।
কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন,
“আমরা আশা করি আগামী সপ্তাহে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে ফের আলোচনা হবে। সব কিছু চূড়ান্ত করতে আরও সময় লাগবে।”
বর্তমানে সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটে। ১৯৯১ সালে কেবল একবার এই প্রক্রিয়ায় সরাসরি ভোট হয়। এরপর প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
---