যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বিমানবন্দরে এক যুবলীগ নেতার ডিম ছোড়ার ঘটনায় ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেছেন, “এই প্রজন্ম হাসিনার ছোড়া বুলেটে ভয় পায় নাই। ওদেরই ছোড়া ডিমে ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না।” মঙ্গলবার এনসিপির ‘ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্সের ফেসবুক পেইজে প্রচারিত এক ভিডিওতে আখতার হোসেনকে এ কথা বলতে শোনা যায়। নিজের ফেইসবুকেও তিনি একই দিনে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
আখতার হোসেন বলেন, “এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবে ও প্রকৃতিগতভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা সন্ত্রাস করবে।”
তিনি আরও বলেন, “এয়ারপোর্টে আজকে আওয়ামী লীগ হুংকার দিয়ে আসছিল, অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল, বিশেষ করে তাসনিম জারাকে (এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক) উদ্দেশ্য করে। এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র।”
জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সোমবার নিউ ইয়র্কে জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এরপর মুহম্মদ ইউনূস সরকারপ্রধান হিসেবে বিশেষ নিরাপত্তায় অন্য একটি গেইট দিয়ে বেরিয়ে গেলেও তার সফরসঙ্গী বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতারা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন।
এক পর্যায়ে মির্জা ফখরুল ও হুমায়ূন কবির পাশাপাশি হেঁটে পার্কিং স্পটের দিকে যাওয়ার সময় তাদেরকে ‘বাংলাদেশের দুশমন’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ‘হত্যা, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ এবং লুটতরাজের’ জন্য দায়ী করে স্লোগান দেওয়া হয়।
এসময় বিএনপির দুই নেতাকে অনুসরণ করছিলেন এনসিপির আখতার হোসেন ও তাসনিম জারা। বৈরী পরিস্থিতির মধ্যে তাদের অনেকটা সঙ্কুচিত দেখাচ্ছিল। এর মধ্যে তাদের কয়েক দফা থামিয়ে দেওয়া হয় এবং অকথ্য গালিগালাজের মধ্যে পরপর কয়েকটি ডিম ছুড়ে মারা হয়। সেসব ডিম আখতার হোসেনের পিঠে লেগে ফেটে যায়।
সে প্রসঙ্গ ধরে ভিডিওতে আখতার বলেন, “বাংলাদেশের যারা স্বাধীনতাকামী মানুষ, জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির মানুষ, তাদের ওপর এভাবে হামলে পড়বে, এতে আমরা অবাক হই না। বরং আমরা মনে করি, এই এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ছিল, সেটা সামান্য অগ্রসর হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী যারা পালিয়ে এসেছে, তারা বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস করছে।”
আখতারের ওপর ডিম ছোড়ার ঘটনায় মঙ্গলবার এনসিপি ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্স এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ। যদি সরকারি সফরের অংশগ্রহণকারীরা ন্যূনতম নিরাপত্তা না পান, তবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর অস্তিত্বের যৌক্তিকতা কোথায়—সে প্রশ্নও তোলা হয় ওই বিবৃতিতে।
অ্যালায়েন্স বলছে, “জুলাই বিপ্লবের সময় যারা জীবন বাজি রেখে লড়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হামলাকারীদের ক্ষোভ থামেনি। আখতার হোসেনকে এখনো তাঁর সংগ্রামের মূল্য দিতে হচ্ছে, এটা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা।”
এ ঘটনার জেরে ঢাকায় মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে আসেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এদিন বিকাল ৫টায় শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম।
একইসঙ্গে দেশের সকল জেলা এবং মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল হবে জানিয়ে সরকারের কাছে কিছু দাবি তিনি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হল-
নিউ ইয়র্কে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা।
অবিলম্বে নিউ ইয়র্কের কনসাল জেনারেলের পদত্যাগ।
ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
‘ফ্যাসিবাদী জামানায় নিযুক্ত আওয়ামী দোসরদের’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অপসারণ করা।
অগাস্টে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার ঘটনায় যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের তালিকা প্রকাশ করা।
‘জুলাই গণহত্যার’ বিচার স্বচ্ছ করা এবং ত্বরান্বিতকরণ করা। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা।
নিউ ইয়র্কে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। দলের পক্ষে এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফরের নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্ব যাদের ছিল, তাদের একইসাথে তার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু এই হামলার ঘটনা প্রমাণ করে, তারা সফররত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বিমানবন্দরে এক যুবলীগ নেতার ডিম ছোড়ার ঘটনায় ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেছেন, “এই প্রজন্ম হাসিনার ছোড়া বুলেটে ভয় পায় নাই। ওদেরই ছোড়া ডিমে ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না।” মঙ্গলবার এনসিপির ‘ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্সের ফেসবুক পেইজে প্রচারিত এক ভিডিওতে আখতার হোসেনকে এ কথা বলতে শোনা যায়। নিজের ফেইসবুকেও তিনি একই দিনে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
আখতার হোসেন বলেন, “এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবে ও প্রকৃতিগতভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা সন্ত্রাস করবে।”
তিনি আরও বলেন, “এয়ারপোর্টে আজকে আওয়ামী লীগ হুংকার দিয়ে আসছিল, অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল, বিশেষ করে তাসনিম জারাকে (এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক) উদ্দেশ্য করে। এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র।”
জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সোমবার নিউ ইয়র্কে জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এরপর মুহম্মদ ইউনূস সরকারপ্রধান হিসেবে বিশেষ নিরাপত্তায় অন্য একটি গেইট দিয়ে বেরিয়ে গেলেও তার সফরসঙ্গী বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতারা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন।
এক পর্যায়ে মির্জা ফখরুল ও হুমায়ূন কবির পাশাপাশি হেঁটে পার্কিং স্পটের দিকে যাওয়ার সময় তাদেরকে ‘বাংলাদেশের দুশমন’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ‘হত্যা, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ এবং লুটতরাজের’ জন্য দায়ী করে স্লোগান দেওয়া হয়।
এসময় বিএনপির দুই নেতাকে অনুসরণ করছিলেন এনসিপির আখতার হোসেন ও তাসনিম জারা। বৈরী পরিস্থিতির মধ্যে তাদের অনেকটা সঙ্কুচিত দেখাচ্ছিল। এর মধ্যে তাদের কয়েক দফা থামিয়ে দেওয়া হয় এবং অকথ্য গালিগালাজের মধ্যে পরপর কয়েকটি ডিম ছুড়ে মারা হয়। সেসব ডিম আখতার হোসেনের পিঠে লেগে ফেটে যায়।
সে প্রসঙ্গ ধরে ভিডিওতে আখতার বলেন, “বাংলাদেশের যারা স্বাধীনতাকামী মানুষ, জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির মানুষ, তাদের ওপর এভাবে হামলে পড়বে, এতে আমরা অবাক হই না। বরং আমরা মনে করি, এই এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ছিল, সেটা সামান্য অগ্রসর হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী যারা পালিয়ে এসেছে, তারা বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস করছে।”
আখতারের ওপর ডিম ছোড়ার ঘটনায় মঙ্গলবার এনসিপি ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্স এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ। যদি সরকারি সফরের অংশগ্রহণকারীরা ন্যূনতম নিরাপত্তা না পান, তবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর অস্তিত্বের যৌক্তিকতা কোথায়—সে প্রশ্নও তোলা হয় ওই বিবৃতিতে।
অ্যালায়েন্স বলছে, “জুলাই বিপ্লবের সময় যারা জীবন বাজি রেখে লড়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হামলাকারীদের ক্ষোভ থামেনি। আখতার হোসেনকে এখনো তাঁর সংগ্রামের মূল্য দিতে হচ্ছে, এটা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা।”
এ ঘটনার জেরে ঢাকায় মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে আসেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এদিন বিকাল ৫টায় শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম।
একইসঙ্গে দেশের সকল জেলা এবং মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল হবে জানিয়ে সরকারের কাছে কিছু দাবি তিনি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হল-
নিউ ইয়র্কে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা।
অবিলম্বে নিউ ইয়র্কের কনসাল জেনারেলের পদত্যাগ।
ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
‘ফ্যাসিবাদী জামানায় নিযুক্ত আওয়ামী দোসরদের’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অপসারণ করা।
অগাস্টে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার ঘটনায় যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের তালিকা প্রকাশ করা।
‘জুলাই গণহত্যার’ বিচার স্বচ্ছ করা এবং ত্বরান্বিতকরণ করা। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা।
নিউ ইয়র্কে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। দলের পক্ষে এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফরের নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্ব যাদের ছিল, তাদের একইসাথে তার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু এই হামলার ঘটনা প্রমাণ করে, তারা সফররত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।