ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে এক ঘণ্টা দীর্ঘ বৈঠক করেছেন বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়কে’ রূপ দেয়ার দাবির কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছে বিএনপি নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির তুলে ধরা দাবি
প্রশাসন ও হায়ার জুডিশিয়ারি থেকে ‘ফ্যাসিস্টদের দোসর’দের এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকেও অপসারণ করতে হবে।
মঙ্গলবার,(২১ অক্টোবর ২০২৫) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ বৈঠক করেছেন। তারা সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যুমনায় প্রবেশ করেন। সন্ধ্যা ৭টা ১১ মিনিটে তারা যমুনা থেকে বেরিয়ে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজ (মঙ্গলবার) প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠানকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের আদলে নিতে হবে।’
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বলতে আমরা যা বোঝাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদের যেতে হবে। সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে, প্রশাসনকে জনগণের কাছে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করে তৈরি করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেক্রেটারিয়েটে যারা এখনও আছেন, যাদের চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হয়, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেয়ার জন্য আমরা বলেছি। আমরা বলেছি যে জেলা প্রশাসন, বিশেষ করে সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি, যেগুলো আমরা মনে করি যে তারা এখনও সেই ফ্যাস্টিস সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। সেজন্য তাদের অপসারণের কথা আমরা বলেছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যে সমস্ত পদে নতুন করে নিয়োগ দেয়া হবে, বা যাদের পদোন্নতি দেয়া হবে, সেই ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে এসেছি। পাশাপাশি আমরা বলে এসেছি যে বিচার বিভাগে, বিশেষ করে হায়ার জুডিশিয়ারিতে এখনও যে সমস্ত ফ্যাসিস্টদের দোসর আছেন, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা জুডিশিয়ারির ব্যাপার, তারপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমরা আমাদের সেই কনসার্নগুলো জানিয়ে এসেছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথাও আমরা বলেছি। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকে অপসারণ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি, এটাই ছিল প্রধান মূল কথা।’
কোনো উপদেষ্টার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেছেন কিনা- এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব ‘না’ সূচক জবাব দেন।
উপদেষ্টা পরিষদে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাদের সরানোর দাবি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তোলা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারা নির্দিষ্ট কারও কথা বলেননি।
বদলি-পদায়ন ‘প্রধান উপদেষ্টাই করবেন’, আশ্বস্ত করেছেন বিএনপিকে
বৈঠকে নির্বাচনের আগে প্রশাসনে যে কোনো ধরনের বদলি বা পদায়ন সরাসরি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধানেই হবে বলে বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছেন সরকারপ্রধান।
বৈঠকের পরে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রধান
উপদেষ্টা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তার তত্ত্বাবধানে হবে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতেই কর্মকর্তাদের বাছাই করে নির্বাচনের আগে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
‘তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব’।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে এক ঘণ্টা দীর্ঘ বৈঠক করেছেন বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়কে’ রূপ দেয়ার দাবির কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছে বিএনপি নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির তুলে ধরা দাবি
প্রশাসন ও হায়ার জুডিশিয়ারি থেকে ‘ফ্যাসিস্টদের দোসর’দের এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকেও অপসারণ করতে হবে।
মঙ্গলবার,(২১ অক্টোবর ২০২৫) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ বৈঠক করেছেন। তারা সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যুমনায় প্রবেশ করেন। সন্ধ্যা ৭টা ১১ মিনিটে তারা যমুনা থেকে বেরিয়ে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজ (মঙ্গলবার) প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠানকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের আদলে নিতে হবে।’
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বলতে আমরা যা বোঝাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদের যেতে হবে। সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে, প্রশাসনকে জনগণের কাছে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করে তৈরি করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেক্রেটারিয়েটে যারা এখনও আছেন, যাদের চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হয়, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেয়ার জন্য আমরা বলেছি। আমরা বলেছি যে জেলা প্রশাসন, বিশেষ করে সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি, যেগুলো আমরা মনে করি যে তারা এখনও সেই ফ্যাস্টিস সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। সেজন্য তাদের অপসারণের কথা আমরা বলেছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যে সমস্ত পদে নতুন করে নিয়োগ দেয়া হবে, বা যাদের পদোন্নতি দেয়া হবে, সেই ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে এসেছি। পাশাপাশি আমরা বলে এসেছি যে বিচার বিভাগে, বিশেষ করে হায়ার জুডিশিয়ারিতে এখনও যে সমস্ত ফ্যাসিস্টদের দোসর আছেন, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা জুডিশিয়ারির ব্যাপার, তারপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমরা আমাদের সেই কনসার্নগুলো জানিয়ে এসেছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথাও আমরা বলেছি। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকে অপসারণ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি, এটাই ছিল প্রধান মূল কথা।’
কোনো উপদেষ্টার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেছেন কিনা- এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব ‘না’ সূচক জবাব দেন।
উপদেষ্টা পরিষদে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাদের সরানোর দাবি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তোলা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারা নির্দিষ্ট কারও কথা বলেননি।
বদলি-পদায়ন ‘প্রধান উপদেষ্টাই করবেন’, আশ্বস্ত করেছেন বিএনপিকে
বৈঠকে নির্বাচনের আগে প্রশাসনে যে কোনো ধরনের বদলি বা পদায়ন সরাসরি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধানেই হবে বলে বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছেন সরকারপ্রধান।
বৈঠকের পরে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রধান
উপদেষ্টা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তার তত্ত্বাবধানে হবে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতেই কর্মকর্তাদের বাছাই করে নির্বাচনের আগে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
‘তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব’।