ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকায় শনিবার, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে বিজেপি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংর্ঘষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে -সংবাদ
ভোলায় বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। শনিবার, (০১ নভেম্বর ২০২৫) দুপুরে শহরের নতুন বাজার এলাকায় জেলা বিজেপি কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে এ ঘটনা ঘটে বলে ভোলার পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক জানান।
আহতদের মধ্যে ভোলা সদর থানার এসআই আউয়াল, নিউজ ২৪-এর ক্যামেরাপারসন রানা ইসলাম, বাংলাবাজার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শাহরিয়ার ঝিলন রয়েছেন। জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৪৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন আর আটজনকে বরিশালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, নেতাকর্মী ও পুলিশ জানায়, সকাল থেকে ভোলা জেলা বিএনপি ও বিজেপি কার্যালয়ের সামনে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলছিল। দুপুর ১২টার দিকে বিজেপির নেতাকর্মীরা নতুন বাজারের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে সদর রোড হয়ে চকবাজার ঘুরে আবার কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশ করেন।
অন্যদিকে মহাজনপট্টিতে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে একদল নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে বের করেন। পরে নতুনবাজার পৌর ভবনের সামনে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ।
দুপুর ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রাইসুল আলম বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের হ্যাঁ/না ভোটের দাবিসহ নির্বাচনে বিলম্ব ঘটানোর প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিলাম। বিজেপির মিছিল শেষে আমাদের মিছিল শুরু হয়। নতুন বাজার এলাকায় মুখোমুখি হলে আমরা পিছু হটতে বলি। তখন কে বা কারা ঢিল ছোড়ার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে। আমরা চাই, রাজনীতি শান্তিপূর্ণ ধারায় চলুক।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক বলেন, ‘বিক্ষোভ মিছিলটি বাংলা স্কুল মোড়ে গেলে দুটি বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এ সময় আমাদের লক্ষ্য করে বিজেপির কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপরই সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির অন্তত ২৫ জন আহত হন।’
সম্প্রতি ভোলার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এর প্রতিবাদে শনিবার, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিজেপি। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘বিজেপির নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ে সভা করছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের ২৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, সকালে তাদের অঙ্গসংগঠনের একটি কর্মসূচি ও মিছিল ছিল। মিছিল শেষে তারা দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন। কিছুক্ষণ পর বিএনপির একটি মিছিল এসে তাদের ধাওয়া দেয়, ইটপাটকেল ছোড়ে ও মারধর করে। এতে তাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হন। ভোলা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত হাসপাতালে উভয়পক্ষের ৪৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আটজনকে বরিশালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন।’
ভোলার পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক বলেন, ‘পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় কাজ করছে।’
ভোলা শহরের বিএনপি ও বিজেপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ভোলা-১ (সদর) আসনে বিএনপির পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন দলের জেলা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর। আবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থও মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ নিয়ে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। সে থেকেও এ সংঘর্ষ হতে পারে। বর্তমানে শহরের নতুন বাজারে বিজেপি এবং মহাজনপট্টি বিএনপির কার্যালয়ের সামনেসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, র্যাব, পুলিশ রয়েছে। শহরে এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকায় শনিবার, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে বিজেপি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংর্ঘষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে -সংবাদ
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
ভোলায় বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। শনিবার, (০১ নভেম্বর ২০২৫) দুপুরে শহরের নতুন বাজার এলাকায় জেলা বিজেপি কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে এ ঘটনা ঘটে বলে ভোলার পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক জানান।
আহতদের মধ্যে ভোলা সদর থানার এসআই আউয়াল, নিউজ ২৪-এর ক্যামেরাপারসন রানা ইসলাম, বাংলাবাজার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শাহরিয়ার ঝিলন রয়েছেন। জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৪৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন আর আটজনকে বরিশালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, নেতাকর্মী ও পুলিশ জানায়, সকাল থেকে ভোলা জেলা বিএনপি ও বিজেপি কার্যালয়ের সামনে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলছিল। দুপুর ১২টার দিকে বিজেপির নেতাকর্মীরা নতুন বাজারের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে সদর রোড হয়ে চকবাজার ঘুরে আবার কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশ করেন।
অন্যদিকে মহাজনপট্টিতে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে একদল নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে বের করেন। পরে নতুনবাজার পৌর ভবনের সামনে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ।
দুপুর ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রাইসুল আলম বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের হ্যাঁ/না ভোটের দাবিসহ নির্বাচনে বিলম্ব ঘটানোর প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিলাম। বিজেপির মিছিল শেষে আমাদের মিছিল শুরু হয়। নতুন বাজার এলাকায় মুখোমুখি হলে আমরা পিছু হটতে বলি। তখন কে বা কারা ঢিল ছোড়ার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে। আমরা চাই, রাজনীতি শান্তিপূর্ণ ধারায় চলুক।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক বলেন, ‘বিক্ষোভ মিছিলটি বাংলা স্কুল মোড়ে গেলে দুটি বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এ সময় আমাদের লক্ষ্য করে বিজেপির কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপরই সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির অন্তত ২৫ জন আহত হন।’
সম্প্রতি ভোলার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এর প্রতিবাদে শনিবার, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিজেপি। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘বিজেপির নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ে সভা করছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের ২৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, সকালে তাদের অঙ্গসংগঠনের একটি কর্মসূচি ও মিছিল ছিল। মিছিল শেষে তারা দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন। কিছুক্ষণ পর বিএনপির একটি মিছিল এসে তাদের ধাওয়া দেয়, ইটপাটকেল ছোড়ে ও মারধর করে। এতে তাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হন। ভোলা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত হাসপাতালে উভয়পক্ষের ৪৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আটজনকে বরিশালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন।’
ভোলার পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক বলেন, ‘পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় কাজ করছে।’
ভোলা শহরের বিএনপি ও বিজেপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ভোলা-১ (সদর) আসনে বিএনপির পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন দলের জেলা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর। আবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থও মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ নিয়ে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। সে থেকেও এ সংঘর্ষ হতে পারে। বর্তমানে শহরের নতুন বাজারে বিজেপি এবং মহাজনপট্টি বিএনপির কার্যালয়ের সামনেসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, র্যাব, পুলিশ রয়েছে। শহরে এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।