রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে বাংলাদেশে কোনো কানুন (আইন) করা হবে না। যদি আগে এমন আইন করা হয়ে থাকে, সেটি বাতিল করা হবে।
রোববার বিকেলে সম্মেলনে বক্তব্য দিয়ে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ যুক্ত করেছিলেন। তবে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী সেটি সংবিধান থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছিল। তিনি ঘোষণা দেন, এই নীতি আবার পুনর্বহাল করা হবে।
সম্মেলনে ইমাম ও খতিবদের পক্ষ থেকে সাতটি দাবি উপস্থাপন করা হয়। এর একটি হলো—উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না। বিষয়টি উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, উপযুক্ত তথ্য–প্রমাণ ছাড়া, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো নাগরিককে গ্রেপ্তার করা যায় না। কিন্তু অতীতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকার দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিত, আলেমবিদ্বেষী আচরণ করত, এবং যে কাউকে ধরে এনে জঙ্গি বানানোর নাটক করত। এখন সে বাংলাদেশ নেই। দেশে গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরু হয়েছে। আইনকানুনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো বেআইনি কাজ আর কাউকে করতে দেওয়া হবে না।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, বিএনপি মদিনার ইসলামে বিশ্বাস করে এবং দেশে যত ফিরকা–ফেতনা আছে, সেগুলোর অবসান চায়। ইমাম-খতিবদের সম্মিলিতভাবে সেই লক্ষ্যেই কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, মসজিদে যেন দুনিয়ার কোনো কার্যক্রমকে প্রশ্রয় না দেওয়া হয়, সেটি তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে। মসজিদ, ইমাম ও খতিবদের যেন বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হয়। রাজনৈতিক চর্চার জন্য বহু কেন্দ্র আছে, তাই যেন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয়—এ বিষয়ে ইমাম-খতিবদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি ও হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।
সম্মেলনে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন মাওলানা আজহারুল ইসলাম। দাবিগুলো হলো—
সব ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু থেকে ইসলামি শরিয়াহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে;
রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ইমাম-খতিবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রতিটি জেলা, বিভাগীয় ও থানা পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে তাঁদের সম্পৃক্ত করতে হবে;
মসজিদ, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ–পানির বিল মওকুফ করতে হবে;
দেশের সব মসজিদের ইমামদের জন্য সার্ভিস রোল ও নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে এবং মসজিদ কমিটিতে সম্মানজনক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে;
উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না;
সরকার স্বীকৃত দাওরায়ে হাদিসের সনদপ্রাপ্ত আলেমদের সরকারি মসজিদে ইমাম-খতিব নিয়োগ, স্কুল–কলেজে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এবং কাজি নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে;
সমাজ সংস্কারমূলক কার্যক্রম—যেমন মাদক ও যৌতুক নিরোধ, সুদ-ঘুষ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনে নিরুৎসাহিত করা, পারিবারিক ঐতিহ্য ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষামূলক কাজ—ইমাম-খতিবদের স্বীকৃতি দিতে হবে এবং এ জন্য সম্মানজনক ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে বাংলাদেশে কোনো কানুন (আইন) করা হবে না। যদি আগে এমন আইন করা হয়ে থাকে, সেটি বাতিল করা হবে।
রোববার বিকেলে সম্মেলনে বক্তব্য দিয়ে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ যুক্ত করেছিলেন। তবে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী সেটি সংবিধান থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছিল। তিনি ঘোষণা দেন, এই নীতি আবার পুনর্বহাল করা হবে।
সম্মেলনে ইমাম ও খতিবদের পক্ষ থেকে সাতটি দাবি উপস্থাপন করা হয়। এর একটি হলো—উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না। বিষয়টি উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, উপযুক্ত তথ্য–প্রমাণ ছাড়া, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো নাগরিককে গ্রেপ্তার করা যায় না। কিন্তু অতীতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকার দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিত, আলেমবিদ্বেষী আচরণ করত, এবং যে কাউকে ধরে এনে জঙ্গি বানানোর নাটক করত। এখন সে বাংলাদেশ নেই। দেশে গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরু হয়েছে। আইনকানুনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো বেআইনি কাজ আর কাউকে করতে দেওয়া হবে না।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, বিএনপি মদিনার ইসলামে বিশ্বাস করে এবং দেশে যত ফিরকা–ফেতনা আছে, সেগুলোর অবসান চায়। ইমাম-খতিবদের সম্মিলিতভাবে সেই লক্ষ্যেই কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, মসজিদে যেন দুনিয়ার কোনো কার্যক্রমকে প্রশ্রয় না দেওয়া হয়, সেটি তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে। মসজিদ, ইমাম ও খতিবদের যেন বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হয়। রাজনৈতিক চর্চার জন্য বহু কেন্দ্র আছে, তাই যেন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয়—এ বিষয়ে ইমাম-খতিবদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি ও হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।
সম্মেলনে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন মাওলানা আজহারুল ইসলাম। দাবিগুলো হলো—
সব ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু থেকে ইসলামি শরিয়াহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে;
রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ইমাম-খতিবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রতিটি জেলা, বিভাগীয় ও থানা পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে তাঁদের সম্পৃক্ত করতে হবে;
মসজিদ, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ–পানির বিল মওকুফ করতে হবে;
দেশের সব মসজিদের ইমামদের জন্য সার্ভিস রোল ও নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে এবং মসজিদ কমিটিতে সম্মানজনক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে;
উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না;
সরকার স্বীকৃত দাওরায়ে হাদিসের সনদপ্রাপ্ত আলেমদের সরকারি মসজিদে ইমাম-খতিব নিয়োগ, স্কুল–কলেজে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এবং কাজি নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে;
সমাজ সংস্কারমূলক কার্যক্রম—যেমন মাদক ও যৌতুক নিরোধ, সুদ-ঘুষ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনে নিরুৎসাহিত করা, পারিবারিক ঐতিহ্য ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষামূলক কাজ—ইমাম-খতিবদের স্বীকৃতি দিতে হবে এবং এ জন্য সম্মানজনক ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।