alt

১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ

বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দিতে চায় সরকার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সন্ধ্যায় রাজধানীর সদরঘাটে এক অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তবে দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার অনুমতি না দিলেও নয়াপল্টনেই সমাবেশ হবে। অবশ্য সরকারের নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

বিএনপি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তিনি ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ নয়াপল্টনের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজনের প্রস্তাব দেন।

এ বিষয়ে হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা আগেই বিএনপিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সমাবেশের আবেদন না করে তিনটি বিকল্প জায়গার নাম দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা তা করেনি। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে আমরা তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য বলেছি।’

বিএনপি নেতা এ্যানী বলেন, ‘নয়াপল্টনে গণসমাবেশ আয়োজনের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে ডিএমপিতে দুইবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে তারা আমাদের নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়েছে। এ বিষয়ে দু-তিন দিন ধরেই পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বৃহস্পতিবারও ডিএমপির পক্ষ থেকে ফোন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য আমরা কোনো অনুমতি চাইনি। তা ছাড়া সেখানে ১০ ডিসেম্বরের আগের দুদিন ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচি রয়েছে। সেখানে বিএনপি কীভাবে সমাবেশ করবে? ওই স্থানে বিএনপিকে গণসমাবেশ করতে বলা হলে তা হবে সাংঘর্ষিক।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ডিএমপির পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার কথা বলা হয়েছে। আমরা বলেছি, সমাবেশ কোথায় হবে, এটি দলীয় সিদ্ধান্ত।’

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ‘বিএনপিকে শর্তসাপেক্ষে ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভাটি করতে পারবে। কিন্তু কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো যাবে না। প্রতিবন্ধকতা ও জনদুর্ভোগ করা যাবে না। এটা তাদের প্রতি রিকোয়েস্ট থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ বিএনপির একটি দাবি ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আমাদের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য ডিএমপি কমিশনারকে বলে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও তাই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় সমাবেশ করতেও আমরা মানা করিনি। আমরা শুধু আশঙ্কার কথাগুলো বলেছি। আপনারা ২৫ থেকে ৩০ লাখ লোক নিয়ে আসবেন, এই লোকগুলো কোথায় বসাবেন? কোথায় থাকবে তারা? পুরো ঢাকা শহর অচল করে দেবেন আপনারা? আমরা বলেছি তাদের, বড় কোনো জায়গায় যান।’

অন্যদিকে, গতকাল দুপুরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনুমতি দেওয়া হোক বা না হোক, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই গণসমাবেশ করা হবে। সমাবেশ আমরা যেখানে বলেছি, সেখানেই হবে। দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে অনুমতির অপেক্ষা করতে হয় না। অনুমতি দিলেও করব, না দিলেও করব।’

নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে সারা দেশে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সর্বশেষ গণসমাবেশ করবে দলটি। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশের বিষয়টি জানিয়ে গত ১৫ নভেম্বর ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দেয় বিএনপি। ওইদিনই পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের জন্য একাধিক বিকল্প স্থান বিবেচনা করতে বিএনপি নেতাদের বলা হয়।

এর পরই ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের স্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কথা চালাচালি শুরু হয়। সমাবেশে ১০ লাখ লোক জমায়েত করা হবে—বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য ছিল, ‘১০ লাখ মানুষ জমায়েতের মতো জায়গা নেই নয়াপল্টনে। তাই তাদের অন্য জায়গায় সমাবেশ করা উচিত।’ এরপর গত বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যেহেতু আমরা সব সময় নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করি, অবশ্যই সেখানে ১০ তারিখেও করব।’

একই দিন সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা যেভাবে সমাবেশ করতে চাচ্ছে, বিপুলসংখ্যক মানুষ হবে, সে রকম মাঠ তো ঢাকা শহরের মধ্যে নেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানও তত বড় না। কাজেই সে রকম সমাবেশ করতে হলে পূর্বাচল ছাড়া আর কোনো জায়গা আমি দেখছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা কেন নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায়, সেটি সহজেই অনুমান করা যায়। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। হেফাজতে ইসলাম যে ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তারাও সেটা করতে চায়।’

দুই দলের নেতাদের এমন বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্যের মধ্যেই গুঞ্জন ওঠে, ঢাকা শহরের পরিবর্তে বিএনপিকে পূর্বাচল, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান কিংবা পল্লবীর কালশী মাঠে গণসমাবেশ করতে দেওয়া হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার প্রস্তাব দেওয়া হলো। আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর একই স্থানে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা।

ছবি

নরসিংদী বিএনপিতে সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১, আহত ৫

ছবি

প্রবাসী ভোটারদের জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ আসছে, ১৫তম সংসদ নির্বাচনে ডাকযোগে ভোটের ব্যবস্থা

ছবি

১৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলনের ডাক তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াতের

ছবি

রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত অস্থিতিশীলতা কাটবে না: আমীর খসরু

ছবি

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে ক্ষুব্ধ ফয়জুল করীম

ছবি

প্রত্যাশা অনুযায়ী গণমাধ্যম সংস্কার হয়নি, বললেন নাহিদ

ছবি

ঢাকায় আজ জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোট প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো

ছবি

রাজশাহীতে এনসিপি নেত্রীর আকস্মিক পদত্যাগ

ছবি

জামায়াতসহ কয়েক দলের যুগপৎ আন্দোলনের জবাব রাজপথেই দেবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

ছবি

খালেদা জিয়ার ভাগ্নে শাহরিনকে আহ্বায়ক করে এইবির নতুন কমিটি

ছবি

নাশকতার দুই মামলা থেকে ফখরুল ও আব্বাসসহ ১০৬ জনকে অব্যাহতি

ছবি

এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

অভিন্ন দাবিতে তিন ইসলামী দলের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

যুগপতে পাঁচ দাবিতে জামায়াতের তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ সনাতন যোগ দিলেন জামায়াতে

ছবি

তারেকের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাবরের আলোচনা

ছবি

যুগপতে কারা থাকছে ঠিক হয়নি, তবে খেলাফতের কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতের আযাদ: মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশ অস্বীকার করা হবে’

ছবি

জুলাই সনদের গেরো: এবার আদালতের মত নিতে বলল বিএনপি

ছবি

‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরে রাজি বিএনপি, তবে আইনি ভিত্তি নিয়ে মতভেদ

ছবি

ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রশ্ন তুললেন রিজভী

ছবি

মৌলবাদীরা ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে: বিএনপির গয়েশ্বর

ছবি

সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিসের তিন দিনের কর্মসূচি

ছবি

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবার তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

ছবি

রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকবে: তারেক রহমান

ছবি

সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছ ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

ছবি

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে পশু-পাখি ও বাস্তুতন্ত্রের অধিকার নিশ্চিত হবে: তারেক রহমান

ছবি

বসুন্ধরায় গোপন বৈঠক: ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগ নেতার দোষ স্বীকার

ছবি

ঢাকার আগারগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

আওয়ামী লীগ লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে: মঈন খান

ছবি

ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তারেকের আহ্বান

ছবি

বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিক, জনতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি: এনসিপি

ছবি

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মিন্টু

ছবি

জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: বিএনপি

tab

১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ

বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দিতে চায় সরকার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সন্ধ্যায় রাজধানীর সদরঘাটে এক অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তবে দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার অনুমতি না দিলেও নয়াপল্টনেই সমাবেশ হবে। অবশ্য সরকারের নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

বিএনপি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তিনি ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ নয়াপল্টনের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজনের প্রস্তাব দেন।

এ বিষয়ে হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা আগেই বিএনপিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সমাবেশের আবেদন না করে তিনটি বিকল্প জায়গার নাম দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা তা করেনি। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে আমরা তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য বলেছি।’

বিএনপি নেতা এ্যানী বলেন, ‘নয়াপল্টনে গণসমাবেশ আয়োজনের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে ডিএমপিতে দুইবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে তারা আমাদের নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়েছে। এ বিষয়ে দু-তিন দিন ধরেই পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বৃহস্পতিবারও ডিএমপির পক্ষ থেকে ফোন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য আমরা কোনো অনুমতি চাইনি। তা ছাড়া সেখানে ১০ ডিসেম্বরের আগের দুদিন ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচি রয়েছে। সেখানে বিএনপি কীভাবে সমাবেশ করবে? ওই স্থানে বিএনপিকে গণসমাবেশ করতে বলা হলে তা হবে সাংঘর্ষিক।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ডিএমপির পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার কথা বলা হয়েছে। আমরা বলেছি, সমাবেশ কোথায় হবে, এটি দলীয় সিদ্ধান্ত।’

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ‘বিএনপিকে শর্তসাপেক্ষে ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভাটি করতে পারবে। কিন্তু কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো যাবে না। প্রতিবন্ধকতা ও জনদুর্ভোগ করা যাবে না। এটা তাদের প্রতি রিকোয়েস্ট থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ বিএনপির একটি দাবি ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আমাদের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য ডিএমপি কমিশনারকে বলে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও তাই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় সমাবেশ করতেও আমরা মানা করিনি। আমরা শুধু আশঙ্কার কথাগুলো বলেছি। আপনারা ২৫ থেকে ৩০ লাখ লোক নিয়ে আসবেন, এই লোকগুলো কোথায় বসাবেন? কোথায় থাকবে তারা? পুরো ঢাকা শহর অচল করে দেবেন আপনারা? আমরা বলেছি তাদের, বড় কোনো জায়গায় যান।’

অন্যদিকে, গতকাল দুপুরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনুমতি দেওয়া হোক বা না হোক, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই গণসমাবেশ করা হবে। সমাবেশ আমরা যেখানে বলেছি, সেখানেই হবে। দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে অনুমতির অপেক্ষা করতে হয় না। অনুমতি দিলেও করব, না দিলেও করব।’

নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে সারা দেশে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সর্বশেষ গণসমাবেশ করবে দলটি। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশের বিষয়টি জানিয়ে গত ১৫ নভেম্বর ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দেয় বিএনপি। ওইদিনই পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের জন্য একাধিক বিকল্প স্থান বিবেচনা করতে বিএনপি নেতাদের বলা হয়।

এর পরই ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের স্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কথা চালাচালি শুরু হয়। সমাবেশে ১০ লাখ লোক জমায়েত করা হবে—বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য ছিল, ‘১০ লাখ মানুষ জমায়েতের মতো জায়গা নেই নয়াপল্টনে। তাই তাদের অন্য জায়গায় সমাবেশ করা উচিত।’ এরপর গত বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যেহেতু আমরা সব সময় নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করি, অবশ্যই সেখানে ১০ তারিখেও করব।’

একই দিন সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা যেভাবে সমাবেশ করতে চাচ্ছে, বিপুলসংখ্যক মানুষ হবে, সে রকম মাঠ তো ঢাকা শহরের মধ্যে নেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানও তত বড় না। কাজেই সে রকম সমাবেশ করতে হলে পূর্বাচল ছাড়া আর কোনো জায়গা আমি দেখছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা কেন নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায়, সেটি সহজেই অনুমান করা যায়। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। হেফাজতে ইসলাম যে ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তারাও সেটা করতে চায়।’

দুই দলের নেতাদের এমন বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্যের মধ্যেই গুঞ্জন ওঠে, ঢাকা শহরের পরিবর্তে বিএনপিকে পূর্বাচল, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান কিংবা পল্লবীর কালশী মাঠে গণসমাবেশ করতে দেওয়া হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার প্রস্তাব দেওয়া হলো। আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর একই স্থানে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা।

back to top