দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের জয় এবং হোয়াইটওয়াশ এড়াতে দরকার ছিলো মাত্র ১৪৭ রান।ভারত সবকটি উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১২১ রান। হেরেছে ২৫ রানে। তিন টেস্টের ৩ টিতেই হেরে হয়েছে ধবলধোলাই।
ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র দল ভারত যারা ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হয়নি দুই ম্যাচের বেশী টেস্টের সিরিজে। ২০০০ সালে একমাত্র দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতকে ধবলধোলাই করেছিল নিজ মাঠে। তবে তা ছিলো দুই টেস্টের সিরিজ।
এরপর কেটে গেছে দুই যুগ। অবসান হয়েছে সাচীন রমেশ টেন্ডুলকার এবং হ্যান্সি ক্রনিয়ের যুগের। এরপর কেউ তা করে দেখাতে পারেনি।
নিউজিল্যান্ড এমন ঘটনা ঘটাবে সে কথা এই সিরিজের আগে বা মাঝপথেও কেউ বললে কারোই বিশ্বাস হতো না। আর তাকে নির্ঘাত ভারতীয় দর্শক ও মিডিয়ার উগ্র রোষানলে জ্বলতে হতো। তাও শ্রীলংকার কাছে টেস্টে ধবলধোলাই হয়ে, ভারতে পা রাখা নিউজিল্যান্ডের এমন কারিশমাটিক রেজাল্ট!!
রেকর্ড বইয়ের পাতা উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে এই পরাজয়ে।ভারত নিজ দেশে মাত্র দ্বিতীয় বার হোয়াইট ওয়াশ হলো। দুইয়ের অধিক টেস্ট সিরিজে যা আবার ইতিহাসে প্রথম।
গতকালই বুঝা গিয়েছিল এই টেস্ট কঠিন হবে ব্যাটসম্যানদের জন্য। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডে ১৭৪ রানে গুটিয়ে গেলে। প্রথম ইনিংসে ২৮ রানে লিড পাওয়া ভারতের দরকার হয় মুম্বাই টেস্ট জিততে মাত্র ১৪৭ রানের।বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনের জন্য বিখ্যাত ভারতের জন্য যা আহামরি কিছু ছিলো না।
কিন্তু খেলা যখন ক্রিকেট, ব্যাট আর বলের সেখানে নিশ্চয়তা বোকামি।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই ২৯ রানে নেই টপ অর্ডারের ৫ উইকেট। রোহিত,কোহলি, শুবমান গিল, জাইসওয়াল এবং নবাগত সরফরাজ খানের উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের দিকে ঝুঁকছিল ভারত।
তখন অন্যপ্রান্তে একাই দাঁড়িয়ে পুরো টিমের দায়িত্ব মাথায় নিয়ে, বুক পেতে লড়াই করছিলেন রিষাভ পান্ত। তাকে কিছু সময়ের জন্য সঙ্গ দিয়েছেন রাভিন্দ্র জাদেজা। তিনিও একসময় ২২ বলে ৬ রান করে এজাজ প্যাটেলের বলে ক্যাচ আউট হলে নিঃসঙ্গ শেরপার মতো চেয়ে চেয়ে তাকিয়ে রইলেন পান্ত।
ভয়ংকর রূপ ধারন করা নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস ও এজাজ প্যাটেলের ঘূর্ণি বলগুলো রিভার্স সুইপ খেলে প্রথমে সামাল দিয়েছেন পন্ত। বোলারদের বাধ্য করেছেন বলের গতিপথ পরিবর্তন করাতে। খেলেছেন সুইপশটও। কিন্তু কতক্ষণ, তাও আবার ব্যাটারদের জন্য মরণফাঁদ পাতা মুম্বাইয়ের উইকেটে।
এজাজ প্যাটেলের বল আগ বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে গিয়ে পান্তের ব্যাট ছুঁয়ে বল জমা হয় উইকেট কিপারের হাতে। আম্পায়ার নিশ্চিত ছিলেন না। নিউজিল্যান্ডের হাতে ছিলো শেষ রিভিউ। কিছুক্ষণ আগে পান্তের বিপক্ষে রিভিউ হারানো নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টম লাথাম সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে রিভিউ নিয়েই নিলেন।
তৃতীয় আম্পায়ার অনেকক্ষণ সময় নিয়ে দেখলেন। বল একেবারে আলতোভাবে পান্তের ব্যাট স্পর্শ করে আবার প্যাডে আঘাত করে উইকেট কিপার টম ব্লান্ডেলের হাতে জমা পরেছে। হতাশ পান্ত মাঠের আম্পায়ারদের কিছু বুঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাঠের আম্পায়ার সে দিকে নজর দেননি। আঙ্গুল তুলে দেন সাথে সাথে। শেষ হয় পান্তের মহাকাব্যিক ৫৭ বলে ৬৪ রানের লড়াকু ইনিংসের।
তখনো জয় থেকে ভারতের দূরত্ব ৪০ রানের। হাতে ছিলো ৩ উইকেট। কিন্তু দর্শকরা বুঝে গিয়েছিল আশার সলিলসমাধি হতে চলেছে মুম্বাইয়ে। ওয়াশিংটন সুন্দার শেষ ব্যাটার হিসেবে এজাজ প্যাটেলের শিকার হওয়ার আগে ২৫ বলে ১২ রান করেন। তবে তা শুধু পরাজয়ে ব্যবধানই কমিয়েছে।
ম্যাচসেরা নিউজিল্যান্ডের বোলার এজাজ প্যাটেল প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট আর দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৬ উইকেট। মোট ১১ উইকেট নিয়ে মুম্বাই টেস্টে ম্যাচ সেরা সে। মুম্বাই তার পয়া মাঠ।
সিরিজ সেরা হয়েছেন ব্যাটসম্যান উইল ইয়াং তিনি পুরো সিরিজে করেছেন ২৪৪ রান।
রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের জয় এবং হোয়াইটওয়াশ এড়াতে দরকার ছিলো মাত্র ১৪৭ রান।ভারত সবকটি উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১২১ রান। হেরেছে ২৫ রানে। তিন টেস্টের ৩ টিতেই হেরে হয়েছে ধবলধোলাই।
ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র দল ভারত যারা ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হয়নি দুই ম্যাচের বেশী টেস্টের সিরিজে। ২০০০ সালে একমাত্র দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতকে ধবলধোলাই করেছিল নিজ মাঠে। তবে তা ছিলো দুই টেস্টের সিরিজ।
এরপর কেটে গেছে দুই যুগ। অবসান হয়েছে সাচীন রমেশ টেন্ডুলকার এবং হ্যান্সি ক্রনিয়ের যুগের। এরপর কেউ তা করে দেখাতে পারেনি।
নিউজিল্যান্ড এমন ঘটনা ঘটাবে সে কথা এই সিরিজের আগে বা মাঝপথেও কেউ বললে কারোই বিশ্বাস হতো না। আর তাকে নির্ঘাত ভারতীয় দর্শক ও মিডিয়ার উগ্র রোষানলে জ্বলতে হতো। তাও শ্রীলংকার কাছে টেস্টে ধবলধোলাই হয়ে, ভারতে পা রাখা নিউজিল্যান্ডের এমন কারিশমাটিক রেজাল্ট!!
রেকর্ড বইয়ের পাতা উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে এই পরাজয়ে।ভারত নিজ দেশে মাত্র দ্বিতীয় বার হোয়াইট ওয়াশ হলো। দুইয়ের অধিক টেস্ট সিরিজে যা আবার ইতিহাসে প্রথম।
গতকালই বুঝা গিয়েছিল এই টেস্ট কঠিন হবে ব্যাটসম্যানদের জন্য। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডে ১৭৪ রানে গুটিয়ে গেলে। প্রথম ইনিংসে ২৮ রানে লিড পাওয়া ভারতের দরকার হয় মুম্বাই টেস্ট জিততে মাত্র ১৪৭ রানের।বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনের জন্য বিখ্যাত ভারতের জন্য যা আহামরি কিছু ছিলো না।
কিন্তু খেলা যখন ক্রিকেট, ব্যাট আর বলের সেখানে নিশ্চয়তা বোকামি।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই ২৯ রানে নেই টপ অর্ডারের ৫ উইকেট। রোহিত,কোহলি, শুবমান গিল, জাইসওয়াল এবং নবাগত সরফরাজ খানের উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের দিকে ঝুঁকছিল ভারত।
তখন অন্যপ্রান্তে একাই দাঁড়িয়ে পুরো টিমের দায়িত্ব মাথায় নিয়ে, বুক পেতে লড়াই করছিলেন রিষাভ পান্ত। তাকে কিছু সময়ের জন্য সঙ্গ দিয়েছেন রাভিন্দ্র জাদেজা। তিনিও একসময় ২২ বলে ৬ রান করে এজাজ প্যাটেলের বলে ক্যাচ আউট হলে নিঃসঙ্গ শেরপার মতো চেয়ে চেয়ে তাকিয়ে রইলেন পান্ত।
ভয়ংকর রূপ ধারন করা নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস ও এজাজ প্যাটেলের ঘূর্ণি বলগুলো রিভার্স সুইপ খেলে প্রথমে সামাল দিয়েছেন পন্ত। বোলারদের বাধ্য করেছেন বলের গতিপথ পরিবর্তন করাতে। খেলেছেন সুইপশটও। কিন্তু কতক্ষণ, তাও আবার ব্যাটারদের জন্য মরণফাঁদ পাতা মুম্বাইয়ের উইকেটে।
এজাজ প্যাটেলের বল আগ বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে গিয়ে পান্তের ব্যাট ছুঁয়ে বল জমা হয় উইকেট কিপারের হাতে। আম্পায়ার নিশ্চিত ছিলেন না। নিউজিল্যান্ডের হাতে ছিলো শেষ রিভিউ। কিছুক্ষণ আগে পান্তের বিপক্ষে রিভিউ হারানো নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টম লাথাম সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে রিভিউ নিয়েই নিলেন।
তৃতীয় আম্পায়ার অনেকক্ষণ সময় নিয়ে দেখলেন। বল একেবারে আলতোভাবে পান্তের ব্যাট স্পর্শ করে আবার প্যাডে আঘাত করে উইকেট কিপার টম ব্লান্ডেলের হাতে জমা পরেছে। হতাশ পান্ত মাঠের আম্পায়ারদের কিছু বুঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাঠের আম্পায়ার সে দিকে নজর দেননি। আঙ্গুল তুলে দেন সাথে সাথে। শেষ হয় পান্তের মহাকাব্যিক ৫৭ বলে ৬৪ রানের লড়াকু ইনিংসের।
তখনো জয় থেকে ভারতের দূরত্ব ৪০ রানের। হাতে ছিলো ৩ উইকেট। কিন্তু দর্শকরা বুঝে গিয়েছিল আশার সলিলসমাধি হতে চলেছে মুম্বাইয়ে। ওয়াশিংটন সুন্দার শেষ ব্যাটার হিসেবে এজাজ প্যাটেলের শিকার হওয়ার আগে ২৫ বলে ১২ রান করেন। তবে তা শুধু পরাজয়ে ব্যবধানই কমিয়েছে।
ম্যাচসেরা নিউজিল্যান্ডের বোলার এজাজ প্যাটেল প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট আর দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৬ উইকেট। মোট ১১ উইকেট নিয়ে মুম্বাই টেস্টে ম্যাচ সেরা সে। মুম্বাই তার পয়া মাঠ।
সিরিজ সেরা হয়েছেন ব্যাটসম্যান উইল ইয়াং তিনি পুরো সিরিজে করেছেন ২৪৪ রান।