বুধবার বাংলাদেশ-আমিরাত ৩য় টি-২০
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
টি-টোয়েন্টিতে ১৭৯ রানের বেশি তাড়া করে আগে কখনোই জিততে পারেনি আরব আমিরাত। সেই দল এবার জিতে গেল ২০৬ রান তাড়ায়, সেটিও বাংলাদেশের মতো টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে! আমিরাতের ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয় দিনটিই বাংলাদেশের জন্য চরম বিব্রতকর। বড় পুঁজি নিয়েও বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে পরাজয়ের পর অধিনায়ক লিটন কুমার দাস দায় দিলেন শিশিরকে।
শারজাহ স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৯১ রান করে ২৭ রানে জয়ী বাংলাদেশ গতকাল সোমবার রাতে দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে যায় ২০৫ রান করেও। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম দুইশর বেশি রান করেও পরাজিত দলে রইল লিটনের দল।
বিশাল লক্ষ্যে শুরু থেকেই চাহিদা মিটিয়ে রান করেছেন স্বাগতিক অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম। এলোমেলো বোলিংয়ে তার কাজ সহজ করে দিয়েছেন তানজিম হাসান, নাহিদ রানারা।
প্রথম সাত ওভারের প্রতিটিতেই বাউন্ডারি মারেন আরব আমিরাতের ওপেনাররা। প্রথম ১০ ওভারে তারা করে ফেলে ১০৭ রান। পানি বিরতির পর টানা দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।
তবু ওয়াসিমের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চাপে পড়েনি আরব আমিরাত। এক পর্যায়ে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩৬ বলে ৬০ রান। সেখান থেকে প্রতি ওভারে একটি করে উইকেট নেয় বাংলাদেশ।
শেষ দিকে মাত্র ৩ উইকেট বাকি থাকতে ১১ বলে ২৯ রান প্রয়োজন ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু তালগোল পাকিয়ে ওভারের শেষ ৫ বলে ১৭ রান দিয়ে ফেলেন পেসার শরিফুল । পরে শেষ ওভারে ওয়াইড-নো মিলিয়ে ৫ বলেই বাকি ১২ রান দেন তানজিম হাসান।
এমন পরাজয়ের পর পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে বাজে ফিল্ডিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি শিশিরের প্রভাবের কথাও তুলে ধরেন লিটন।
‘যে কোনো পরাজয়ই বেদনাদায়ক। তবু আমরা এই উইকেটে ভালো ব্যাটিং করেছি। উইকেট খুব ভালো ছিল। আমার মনে হয়েছে, পরে ব্যাটিংয়ের সময় তারা শিশিরের সুবিধাটা পেয়েছে। তার পরও আমরা চেষ্টা করেছি। তবে ফিল্ডিং ও মাঝের ওভারের বোলিংয়ের আমরা কিছু ভুল করেছি।’
এই সংস্করণে আরব আমিরাতের মাঠে প্রায় ১৬ বছরে ২৬৫ ম্যাচে এবারই প্রথম কোনো দল দুইশর বেশি রান তাড়া করে জয়ের স্বাদ পেল।
আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে যে কোনো সহযোগী দেশের এটিই সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল তখনও টেস্ট স্ট্যাটাস না পাওয়া আফগানিস্তান।
প্রথম ম্যাচে জেতার পরই লিটন বলেছিলেন, শারজাহর মাঠে কোনো ধরনের বোলিং কার্যকর হবে, তা শিখতে হবে তার দলের। পরের ম্যাচেই যেন এর গুরুত্ব আরও ভালোভাবে টের পেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আরও একবার ছোট সীমানার মাঠে হিসেবী বোলিং পারফরম্যান্সের তাগিদ দিলেন তিনি।
‘বুঝতে হবে যে, এই ধরনের ছোট মাঠে খেলার সময় শিশিরের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই বোলিংয়ের সময় হিসেবী হতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন ব্যাটারের জন্য আলাদা পরিকল্পনা করতে হবে।’
স্বাগতিকদের গতি দিয়ে কাবু করতে এই ম্যাচে নাহিদ রানার অভিষেক করিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্ত প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স পায়নি তারা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম বলটি পিচেই রাখতে পারেননি তরুণ পেসার। পরের বলে ‘বিমার’ করে হজম করেন ছক্কা।
এলোমেলো বোলিংয়ের ধারা ম্যাচজুড়েই অব্যাহত রাখেন ২২ বছর বয়সী পেসার। প্রথম তিন ওভারে তিনি খরচ করেন ৪৪ রান। স্পেলের শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হজম করে টি-টোয়েন্টি অভিষেক ৫০ বা তার বেশি রান দেয়া তৃতীয় বাংলাদেশি হন নাহিদ।
শেষ পাঁচ বলে কোনো রান দেননি তিনি। তবে পুরো স্পেলে সে অর্থে ব্যাটারদের পরীক্ষা নিতে পারেননি তরুণ গতিতারকা। তার ৪ ওভারে ৭টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন স্বাগতিক ব্যাটাররা।
ম্যাচ হারের পর তাই নাহিদের বোলিংয়ে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার হতাশা লুকাননি বাংলাদেশ অধিনায়ক।
‘অবশ্যই (নাহিদের বোলিংয়ে প্রতিশ্রুতি ছিল)। তবে রানা এর আগে যা করেছে, তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা আরও বেশি ছিল। ক্রিকেটে ভালো দিন, খারাপ দিন থাকবে। আমরা বসে আলোচনা করব এবং আবারও ঘুরে দাঁড়াব।’
আগের ম্যাচে অল্প রানে আউট হওয়া লিটনের ব্যাটে এ দিন ছিল ভালো কিছুর প্রতিশ্রুতি। কিন্তু ইতিবাচক শুরু করেও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি।
মোহাম্মাদ জাওয়াদউল্লাহর অফ স্টাম্পের বাইরের বল অন সাইডে টেনে খেলার চেষ্টায় আউট হন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
৩ চারের সঙ্গে ১ ছক্কায় খেলা ৩২ বলে ৪০ রানের ইনিংসে লিটন নিজেও তৃপ্ত নন, ‘আমি যা করেছি, যথেষ্ট ছিল না। তবে আমি সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব।’
প্রাথমিকভাবে সিরিজটি ছিল দুই ম্যাচের। তবে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সমঝোতায় বাড়ানো হয়েছে একটি ম্যাচ। সেটিই এখন সিরিজ নির্ধারণী। এই মাঠেই আজ ট্রফির লড়াইয়ে নামবে দুই দল।
বুধবার বাংলাদেশ-আমিরাত ৩য় টি-২০
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
টি-টোয়েন্টিতে ১৭৯ রানের বেশি তাড়া করে আগে কখনোই জিততে পারেনি আরব আমিরাত। সেই দল এবার জিতে গেল ২০৬ রান তাড়ায়, সেটিও বাংলাদেশের মতো টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে! আমিরাতের ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয় দিনটিই বাংলাদেশের জন্য চরম বিব্রতকর। বড় পুঁজি নিয়েও বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে পরাজয়ের পর অধিনায়ক লিটন কুমার দাস দায় দিলেন শিশিরকে।
শারজাহ স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৯১ রান করে ২৭ রানে জয়ী বাংলাদেশ গতকাল সোমবার রাতে দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে যায় ২০৫ রান করেও। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম দুইশর বেশি রান করেও পরাজিত দলে রইল লিটনের দল।
বিশাল লক্ষ্যে শুরু থেকেই চাহিদা মিটিয়ে রান করেছেন স্বাগতিক অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম। এলোমেলো বোলিংয়ে তার কাজ সহজ করে দিয়েছেন তানজিম হাসান, নাহিদ রানারা।
প্রথম সাত ওভারের প্রতিটিতেই বাউন্ডারি মারেন আরব আমিরাতের ওপেনাররা। প্রথম ১০ ওভারে তারা করে ফেলে ১০৭ রান। পানি বিরতির পর টানা দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।
তবু ওয়াসিমের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চাপে পড়েনি আরব আমিরাত। এক পর্যায়ে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩৬ বলে ৬০ রান। সেখান থেকে প্রতি ওভারে একটি করে উইকেট নেয় বাংলাদেশ।
শেষ দিকে মাত্র ৩ উইকেট বাকি থাকতে ১১ বলে ২৯ রান প্রয়োজন ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু তালগোল পাকিয়ে ওভারের শেষ ৫ বলে ১৭ রান দিয়ে ফেলেন পেসার শরিফুল । পরে শেষ ওভারে ওয়াইড-নো মিলিয়ে ৫ বলেই বাকি ১২ রান দেন তানজিম হাসান।
এমন পরাজয়ের পর পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে বাজে ফিল্ডিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি শিশিরের প্রভাবের কথাও তুলে ধরেন লিটন।
‘যে কোনো পরাজয়ই বেদনাদায়ক। তবু আমরা এই উইকেটে ভালো ব্যাটিং করেছি। উইকেট খুব ভালো ছিল। আমার মনে হয়েছে, পরে ব্যাটিংয়ের সময় তারা শিশিরের সুবিধাটা পেয়েছে। তার পরও আমরা চেষ্টা করেছি। তবে ফিল্ডিং ও মাঝের ওভারের বোলিংয়ের আমরা কিছু ভুল করেছি।’
এই সংস্করণে আরব আমিরাতের মাঠে প্রায় ১৬ বছরে ২৬৫ ম্যাচে এবারই প্রথম কোনো দল দুইশর বেশি রান তাড়া করে জয়ের স্বাদ পেল।
আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে যে কোনো সহযোগী দেশের এটিই সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল তখনও টেস্ট স্ট্যাটাস না পাওয়া আফগানিস্তান।
প্রথম ম্যাচে জেতার পরই লিটন বলেছিলেন, শারজাহর মাঠে কোনো ধরনের বোলিং কার্যকর হবে, তা শিখতে হবে তার দলের। পরের ম্যাচেই যেন এর গুরুত্ব আরও ভালোভাবে টের পেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আরও একবার ছোট সীমানার মাঠে হিসেবী বোলিং পারফরম্যান্সের তাগিদ দিলেন তিনি।
‘বুঝতে হবে যে, এই ধরনের ছোট মাঠে খেলার সময় শিশিরের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই বোলিংয়ের সময় হিসেবী হতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন ব্যাটারের জন্য আলাদা পরিকল্পনা করতে হবে।’
স্বাগতিকদের গতি দিয়ে কাবু করতে এই ম্যাচে নাহিদ রানার অভিষেক করিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্ত প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স পায়নি তারা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম বলটি পিচেই রাখতে পারেননি তরুণ পেসার। পরের বলে ‘বিমার’ করে হজম করেন ছক্কা।
এলোমেলো বোলিংয়ের ধারা ম্যাচজুড়েই অব্যাহত রাখেন ২২ বছর বয়সী পেসার। প্রথম তিন ওভারে তিনি খরচ করেন ৪৪ রান। স্পেলের শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হজম করে টি-টোয়েন্টি অভিষেক ৫০ বা তার বেশি রান দেয়া তৃতীয় বাংলাদেশি হন নাহিদ।
শেষ পাঁচ বলে কোনো রান দেননি তিনি। তবে পুরো স্পেলে সে অর্থে ব্যাটারদের পরীক্ষা নিতে পারেননি তরুণ গতিতারকা। তার ৪ ওভারে ৭টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন স্বাগতিক ব্যাটাররা।
ম্যাচ হারের পর তাই নাহিদের বোলিংয়ে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার হতাশা লুকাননি বাংলাদেশ অধিনায়ক।
‘অবশ্যই (নাহিদের বোলিংয়ে প্রতিশ্রুতি ছিল)। তবে রানা এর আগে যা করেছে, তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা আরও বেশি ছিল। ক্রিকেটে ভালো দিন, খারাপ দিন থাকবে। আমরা বসে আলোচনা করব এবং আবারও ঘুরে দাঁড়াব।’
আগের ম্যাচে অল্প রানে আউট হওয়া লিটনের ব্যাটে এ দিন ছিল ভালো কিছুর প্রতিশ্রুতি। কিন্তু ইতিবাচক শুরু করেও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি।
মোহাম্মাদ জাওয়াদউল্লাহর অফ স্টাম্পের বাইরের বল অন সাইডে টেনে খেলার চেষ্টায় আউট হন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
৩ চারের সঙ্গে ১ ছক্কায় খেলা ৩২ বলে ৪০ রানের ইনিংসে লিটন নিজেও তৃপ্ত নন, ‘আমি যা করেছি, যথেষ্ট ছিল না। তবে আমি সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব।’
প্রাথমিকভাবে সিরিজটি ছিল দুই ম্যাচের। তবে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সমঝোতায় বাড়ানো হয়েছে একটি ম্যাচ। সেটিই এখন সিরিজ নির্ধারণী। এই মাঠেই আজ ট্রফির লড়াইয়ে নামবে দুই দল।