মারুফার দূরন্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয় শুরু হয়
আইসিসি নারী বিশ্বকাপে দুর্দান্ত এক স্পেলে বিশ্ব ক্রিকেটে ঝড় তুললেন বাংলাদেশের পেসার মারুফা আক্তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে তার আগুনঝরা বোলিং মুগ্ধ করেছে শুধু সমর্থক নয়, কিংবদন্তি ক্রিকেটারদেরও। আর সেই তালিকায় আছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার লাসিথ মালিঙ্গাও।
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই বাংলাদেশের একমাত্র স্পেশালিস্ট ফাস্ট বোলার হিসেবে দায়িত্বটা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মারুফা। ম্যাচের প্রথম ওভারেই দুই নিখুঁত ইন-সুইংয়ে সাজঘরে ফেরান পাকিস্তানের ওপেনার ওমাইমা সোহেল ও সিদরা আমিনকে, দুজনই শূন্য রানে আউট।
তার শানিত সুইং আর নিখুঁত নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের টপ অর্ডার তছনছ। শেষ পর্যন্ত ৭ ওভারে ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়ে জিতে নেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
আইসিসি তাদের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজে মারুফার দুটি দুর্দান্ত ডেলিভারির ভিডিও প্রকাশ করলে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ভিডিও শেয়ার করে লাসিথ মালিঙ্গা লিখেন, ‘অসাধারণ দক্ষতা। দারুণ নিয়ন্ত্রণ। এ পর্যন্ত এই বিশ্বকাপের সেরা বল।’
বিশেষ করে সিদরা আমিনকে বোল্ড করা বলটি অনেকের চোখেই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ডেলিভারি। মালিঙ্গার এমন প্রশংসায় বিনম্রভাবে জবাব দিয়েছেন মারুফা, ‘ধন্যবাদ, লিজেন্ড।’
শুধু মালিঙ্গাই নন, ভারতের সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন মারুফাকে। ধারাভাষ্যে তিনি বলেন, ‘সে প্রচুর সুইং করিয়েছে, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক লেন্থে বল করেছে। এই স্তরে সফল হতে হলে এটাই করতে হয়। প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচেই সে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিল, এর চেয়ে দুর্দান্ত শুরু আর হতে পারে না! আমি তাকে প্রথম দেখেছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তখন থেকেই তার গতি ও আত্মবিশ্বাস আমাকে মুগ্ধ করেছিল।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন দারুণ সাফল্যের মাধ্যমে মারুফা যেন জানিয়ে দিলেন, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের নতুন ভরসা তিনি।
গত বৃহস্পতিবার ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের বোলিং নিয়ে মারুফা বলেন, ‘ভালো সুইং পাচ্ছিলাম। প্রথম বলেই দারুণ সুইং হলো। তারপর আমি শুধু লাইন আর লেন্থ ঠিক রেখে বল করেছি।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘মারুফা খুবই তরুণ অথচ পরিণত মানসিকতার। নিজের ভূমিকা ও দায়িত্ব সে ভালোমতো জানে এবং খুব আত্মবিশ্বাসী। আজ যেভাবে বোলিং করেছে, তা স্রেফ অসাধারণ! পাকিস্তানের ইনিংস শেষে আমরা ঠিক করি, রান তাড়ায় নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলব। ঝিলিক তার অভিষেক ম্যাচে চমৎকার ব্যাট করেছে।’
পাকিস্তানের দেয়া ১৩০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ওয়ানডে অভিষেকে ঝলক দেখান ওপেনার রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। তিনি আটটি চারের সাহায্যে ৭৭ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন। তার ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশ ১১৩ বল হাতে রেখে পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে।
দলের পারফরম্যান্স নিয়ে জ্যোতির মূল্যায়ন, ‘আমরা চেয়েছিলাম টুর্নামেন্টটা জয় দিয়ে শুরু করতে। এতে যে মোমেন্টাম আসবে, তা আমরা পরের ম্যাচগুলোতে কাজে লাগাতে পারব।’
এই জয়ে বাংলাদেশ আট দল নিয়ে আয়োজিত টুর্নামেন্টের পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া, আর তৃতীয় স্থানে ভারত। বাংলাদেশের ঝুলিতে এখন ২ পয়েন্ট, নেট রান রেট +১.৬২৩।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ৭ অক্টোবর গৌহাটি।
মারুফার দূরন্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয় শুরু হয়
শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
আইসিসি নারী বিশ্বকাপে দুর্দান্ত এক স্পেলে বিশ্ব ক্রিকেটে ঝড় তুললেন বাংলাদেশের পেসার মারুফা আক্তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে তার আগুনঝরা বোলিং মুগ্ধ করেছে শুধু সমর্থক নয়, কিংবদন্তি ক্রিকেটারদেরও। আর সেই তালিকায় আছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার লাসিথ মালিঙ্গাও।
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই বাংলাদেশের একমাত্র স্পেশালিস্ট ফাস্ট বোলার হিসেবে দায়িত্বটা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মারুফা। ম্যাচের প্রথম ওভারেই দুই নিখুঁত ইন-সুইংয়ে সাজঘরে ফেরান পাকিস্তানের ওপেনার ওমাইমা সোহেল ও সিদরা আমিনকে, দুজনই শূন্য রানে আউট।
তার শানিত সুইং আর নিখুঁত নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের টপ অর্ডার তছনছ। শেষ পর্যন্ত ৭ ওভারে ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়ে জিতে নেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
আইসিসি তাদের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজে মারুফার দুটি দুর্দান্ত ডেলিভারির ভিডিও প্রকাশ করলে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ভিডিও শেয়ার করে লাসিথ মালিঙ্গা লিখেন, ‘অসাধারণ দক্ষতা। দারুণ নিয়ন্ত্রণ। এ পর্যন্ত এই বিশ্বকাপের সেরা বল।’
বিশেষ করে সিদরা আমিনকে বোল্ড করা বলটি অনেকের চোখেই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ডেলিভারি। মালিঙ্গার এমন প্রশংসায় বিনম্রভাবে জবাব দিয়েছেন মারুফা, ‘ধন্যবাদ, লিজেন্ড।’
শুধু মালিঙ্গাই নন, ভারতের সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন মারুফাকে। ধারাভাষ্যে তিনি বলেন, ‘সে প্রচুর সুইং করিয়েছে, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক লেন্থে বল করেছে। এই স্তরে সফল হতে হলে এটাই করতে হয়। প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচেই সে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিল, এর চেয়ে দুর্দান্ত শুরু আর হতে পারে না! আমি তাকে প্রথম দেখেছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তখন থেকেই তার গতি ও আত্মবিশ্বাস আমাকে মুগ্ধ করেছিল।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন দারুণ সাফল্যের মাধ্যমে মারুফা যেন জানিয়ে দিলেন, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের নতুন ভরসা তিনি।
গত বৃহস্পতিবার ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের বোলিং নিয়ে মারুফা বলেন, ‘ভালো সুইং পাচ্ছিলাম। প্রথম বলেই দারুণ সুইং হলো। তারপর আমি শুধু লাইন আর লেন্থ ঠিক রেখে বল করেছি।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘মারুফা খুবই তরুণ অথচ পরিণত মানসিকতার। নিজের ভূমিকা ও দায়িত্ব সে ভালোমতো জানে এবং খুব আত্মবিশ্বাসী। আজ যেভাবে বোলিং করেছে, তা স্রেফ অসাধারণ! পাকিস্তানের ইনিংস শেষে আমরা ঠিক করি, রান তাড়ায় নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলব। ঝিলিক তার অভিষেক ম্যাচে চমৎকার ব্যাট করেছে।’
পাকিস্তানের দেয়া ১৩০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ওয়ানডে অভিষেকে ঝলক দেখান ওপেনার রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। তিনি আটটি চারের সাহায্যে ৭৭ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন। তার ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশ ১১৩ বল হাতে রেখে পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে।
দলের পারফরম্যান্স নিয়ে জ্যোতির মূল্যায়ন, ‘আমরা চেয়েছিলাম টুর্নামেন্টটা জয় দিয়ে শুরু করতে। এতে যে মোমেন্টাম আসবে, তা আমরা পরের ম্যাচগুলোতে কাজে লাগাতে পারব।’
এই জয়ে বাংলাদেশ আট দল নিয়ে আয়োজিত টুর্নামেন্টের পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া, আর তৃতীয় স্থানে ভারত। বাংলাদেশের ঝুলিতে এখন ২ পয়েন্ট, নেট রান রেট +১.৬২৩।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ৭ অক্টোবর গৌহাটি।