মুম্বাইয়ের অনুষ্ঠানে ব্রায়ান লারা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটে দুঃসময়ের পালা চলছে অনেক বছর ধরেই। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। যে সংস্করণে একসময় তারা ছিল বিশ্বসেরা, বছরের পর বছর টেস্ট সিরিজ হারেনি তারা, সেই সংস্করণে অনেক দিন ধরেই তারা আছে তলানির দিকে।
চলতি ভারত সফরে প্রথম টেস্টে তারা সাড়ে তিন দিনেই হেরে যাওয়ার পর ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক রোস্টন চেস বলেছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতনের কারণ অবকাঠামোর সমস্যা ও অর্থের ভোগান্তি।
তার সঙ্গে একমত ব্রায়ান লারাও।
মুম্বাইয়ে এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সর্বকালের সেরা ব্যাটারদের একজন লারা সংবাদিকদের বলেছেনÑ ‘কিছু করতে হলে অবশ্যই সেটির জন্য মূলধন লাগবে। অবশ্যই সেটি বড় একটি ব্যাপার। তবে রোস্টন চেস ও অন্যদের প্রতি আমার তাগিদ, ক্রিকেট কি তারা হৃদয়ে ধারণ করে? তারা কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চায়? এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব থাকলেই কেবল পথ বের করা সম্ভব।’
লারা বলেছেন, আমি বোঝাতে চাচ্ছি ৩০-৪০ বছর আগেও তো সুযোগ-সুবিধা তেমন কিছু ছিল না। ভিভ রিচার্ডস তো আরও ভালো কোনো অনুশীলন পিচে ব্যাট করেননি বা এমন কিছু। আমাদেরকে একই কাজ করতে হয়েছে, একই লড়াই করতে হয়েছে। তবে আমাদের তাড়না ছিল ভিন্ন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার আবেগ ভিন্ন ছিল। আমি তাই তরুণ ক্রিকেটারদের বলবো, এই সুযোগটা (দেশের হয়ে খেলার) অসাধারণ। আমি প্রায় নিশ্চিত প্রতিটি অভিভাবকের ভাবনায়ও এটি থাকত যে- তাদের ছেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ভালো করবে। কারণ, ওই সময় এসবের গর্ব ছিল অনেক।’
‘আমি অবশ্যই চেসের সঙ্গে একমত (অর্থের ঘাটতি আছে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে)। তবে তারপরও আমি বিশ্বাস করি- ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার ভালোবাসা ও তাড়না তৈরি দায়িত্বটি প্রতিটি তরুণ ক্রিকেটারের।’
অর্থের হাতছানির কথা চিন্তা করে, এটায় দোষের কিছু দেখেন না লারা। তবে জাতীয় দলকে গুরুত্ব দেয়ার দিকটিও তুলে ধরলেন টেস্টে ৪০০ রানের ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটসম্যান।
‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টা করায় একজন ক্রিকেটারকেও দায় দিতে পারবো না। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা আর পাঁচ-ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে খেলার যে অসমতা (আয়ের ক্ষেত্রে), এটা অন্যরকম। ক্রিকেটারদের প্রতি সেই দরদ থাকতে হবে। পাশাপাশি দেশে এটাও নিশ্চিত করতে হবে- ক্রিকেটাররা এবং ভবিষ্যতের ক্রিকেটাররা যেন উপলব্ধি করতে পারে যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্যারিয়ার ও জাতীয় দলের মধ্যে সমন্বয় গড়ার ক্ষেত্রেই লারা তুলে ধরলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মেসিকে।
‘আর্জেন্টিনার দিকে যদি তাকান, মেসি তো বেড়ে উঠেছে ইউরোপে। কিন্তু খেলে আর্জেন্টিনার হয়ে। (ক্লাব ফুটবলে) সে খেলেছে বার্সেলোনা, পিএসজিতে, তাকে খেলতে দেয়া হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার আরও অনেক ফুটবলারই ইউরো খেলে এবং দেশের হয়েও খেলে, সেটায় গর্ব খুঁজে নেয়।’
‘অস্ট্রেলিয়া তো কাজটা ঠিকঠাক করতে পারছে। ইংল্যান্ড পারছে। নিজেদের ক্রিকেটারদের দেশের প্রতি অনুগত রাখতে পারছে। আমাদেরকেও সেটির পথ খুঁজে বের করতে হবে। কারও দিকে আঙুল তোলার ব্যাপার নয় এটি। দল হিসেবে- প্রশাসক, কোচ, ক্রিকেটার, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সত্যিকার অর্থেই যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে হৃদয়ে ধারণ করা যায়, অবশ্যই সামনে এগোনোর পথ মিলবে।’
মুম্বাইয়ের অনুষ্ঠানে ব্রায়ান লারা
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটে দুঃসময়ের পালা চলছে অনেক বছর ধরেই। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। যে সংস্করণে একসময় তারা ছিল বিশ্বসেরা, বছরের পর বছর টেস্ট সিরিজ হারেনি তারা, সেই সংস্করণে অনেক দিন ধরেই তারা আছে তলানির দিকে।
চলতি ভারত সফরে প্রথম টেস্টে তারা সাড়ে তিন দিনেই হেরে যাওয়ার পর ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক রোস্টন চেস বলেছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতনের কারণ অবকাঠামোর সমস্যা ও অর্থের ভোগান্তি।
তার সঙ্গে একমত ব্রায়ান লারাও।
মুম্বাইয়ে এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সর্বকালের সেরা ব্যাটারদের একজন লারা সংবাদিকদের বলেছেনÑ ‘কিছু করতে হলে অবশ্যই সেটির জন্য মূলধন লাগবে। অবশ্যই সেটি বড় একটি ব্যাপার। তবে রোস্টন চেস ও অন্যদের প্রতি আমার তাগিদ, ক্রিকেট কি তারা হৃদয়ে ধারণ করে? তারা কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চায়? এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব থাকলেই কেবল পথ বের করা সম্ভব।’
লারা বলেছেন, আমি বোঝাতে চাচ্ছি ৩০-৪০ বছর আগেও তো সুযোগ-সুবিধা তেমন কিছু ছিল না। ভিভ রিচার্ডস তো আরও ভালো কোনো অনুশীলন পিচে ব্যাট করেননি বা এমন কিছু। আমাদেরকে একই কাজ করতে হয়েছে, একই লড়াই করতে হয়েছে। তবে আমাদের তাড়না ছিল ভিন্ন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার আবেগ ভিন্ন ছিল। আমি তাই তরুণ ক্রিকেটারদের বলবো, এই সুযোগটা (দেশের হয়ে খেলার) অসাধারণ। আমি প্রায় নিশ্চিত প্রতিটি অভিভাবকের ভাবনায়ও এটি থাকত যে- তাদের ছেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ভালো করবে। কারণ, ওই সময় এসবের গর্ব ছিল অনেক।’
‘আমি অবশ্যই চেসের সঙ্গে একমত (অর্থের ঘাটতি আছে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে)। তবে তারপরও আমি বিশ্বাস করি- ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার ভালোবাসা ও তাড়না তৈরি দায়িত্বটি প্রতিটি তরুণ ক্রিকেটারের।’
অর্থের হাতছানির কথা চিন্তা করে, এটায় দোষের কিছু দেখেন না লারা। তবে জাতীয় দলকে গুরুত্ব দেয়ার দিকটিও তুলে ধরলেন টেস্টে ৪০০ রানের ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটসম্যান।
‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টা করায় একজন ক্রিকেটারকেও দায় দিতে পারবো না। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা আর পাঁচ-ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে খেলার যে অসমতা (আয়ের ক্ষেত্রে), এটা অন্যরকম। ক্রিকেটারদের প্রতি সেই দরদ থাকতে হবে। পাশাপাশি দেশে এটাও নিশ্চিত করতে হবে- ক্রিকেটাররা এবং ভবিষ্যতের ক্রিকেটাররা যেন উপলব্ধি করতে পারে যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্যারিয়ার ও জাতীয় দলের মধ্যে সমন্বয় গড়ার ক্ষেত্রেই লারা তুলে ধরলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মেসিকে।
‘আর্জেন্টিনার দিকে যদি তাকান, মেসি তো বেড়ে উঠেছে ইউরোপে। কিন্তু খেলে আর্জেন্টিনার হয়ে। (ক্লাব ফুটবলে) সে খেলেছে বার্সেলোনা, পিএসজিতে, তাকে খেলতে দেয়া হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার আরও অনেক ফুটবলারই ইউরো খেলে এবং দেশের হয়েও খেলে, সেটায় গর্ব খুঁজে নেয়।’
‘অস্ট্রেলিয়া তো কাজটা ঠিকঠাক করতে পারছে। ইংল্যান্ড পারছে। নিজেদের ক্রিকেটারদের দেশের প্রতি অনুগত রাখতে পারছে। আমাদেরকেও সেটির পথ খুঁজে বের করতে হবে। কারও দিকে আঙুল তোলার ব্যাপার নয় এটি। দল হিসেবে- প্রশাসক, কোচ, ক্রিকেটার, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সত্যিকার অর্থেই যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে হৃদয়ে ধারণ করা যায়, অবশ্যই সামনে এগোনোর পথ মিলবে।’