টান টান উত্তেজনার ম্যাচে বাংলাদেশ-হংকং খেলায় হারলো ৪-৩ গোলে।
আজ বৃহস্পতিবার এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে শুরুতে দেশের ফুটবলের পোস্টার বয় হামজা চৌধুরীর গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর পিছিয়ে পড়ে ৩-১ গোলে। সেখান থেকে ঘুড়ে দাড়িয়ে শেষ দিকে সমিত সোম, মোরসালিনের গোলে স্কোর ৩-৩ করে বাংলাদেশ।
যখন উৎসব আনন্দেমেতে উঠেছে ঢাকা স্টেডিয়ামের গ্যালারি তখনই শেষ মিনিটের গোলে গ্যালারিতে বিষাদের কালো ছায়া নামিয়ে আনেন হংকং চায়নার হ্যাটট্রিক হিরো রাফায়েল মারকিস। ম্যাচের শেষে মিনিটে তার গোলে ৪-৩ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অ্যাশলে ওয়েস্টউডের শিষ্যরা। এই হারে বাংলাদেশের মূল পর্বে খেলার স্বপ্ন কার্যত অসম্ভবই বলা চলে।
হংকংয়ের বিপক্ষে ১৯ বছর আগে সবশেষ ম্যাচে এশিয়ান কাপের বাছাইয়েই গোলশুন্য ড্র করেছিল বাংলাদেশ। প্রায় দুই দশক পরের মুখোমুখি লড়াইয়ে একাধিক গোল পেলেও জিততে পারল না হাভিয়ের কাবরেরার দল।
চলতি বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত জয়হীন বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ড্র দিয়ে শুরুর পর সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছিল দল। এ নিয়ে তারা বাছাইয়ে পেল টানা দ্বিতীয় হারের তেতো স্বাদ।
তিন ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে বাংলাদেশ। বাকি আছে আর তিনটি ম্যাচ। গ্রুপ সেরা হয়ে মূল পর্বে যাওয়ার আশা আপাতত টিকে আছে স্রেফ কাগজে-কলমে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে হংকং, দ্বিতীয় স্থানে সিঙ্গাপুরের পয়েন্ট ৫। ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ভারত।
শোমিত সোম, জামাল ভূঁইয়া, ফাহামিদুল ইসলামদের বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান কাবরেরা। ষষ্ঠ মিনিটেই ভালো সুযোগ পায় হংকং। বাম দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ম্যাট অরের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। তিন মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে রাকিবের শট সরাসরি যায় গোলকিপারের কাছে।
এরপরই হামজার ওই গোল এবং গ্যালারিতে আনন্দের বন্যা। বক্সের বাম দিক থেকে হামজার বাঁকানো ফ্রি কিকে বল এক ডিফেন্ডারের মাথা ছুঁয়ে জালে জড়ায়। চলতি বাছাইয়ে বাংলাদেশের এটা দ্বিতীয় গোল। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে যাওয়া ম্যাচে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন রাকিব।
লাল-সবুজের জার্সিতে এ নিয়ে দ্বিতীয় গোল করলেন হামজা। গত জুনে জাতীয় স্টেডিয়ামেই ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত গোলের খাতা খুলেছিলেন লেস্টার সিটির এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ দিতে থাকে বাংলাদেশ। ২১তম মিনিটে সোহেল রানা জুনিয়রের শট ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে যায়।
৩৯তম মিনিটে এভারতন কামারগোর শট আটকাতে ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি মিতুল। তবে বল বেরিয়ে যায় দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে। একটু পর হামজার ব্যাক পাসে সোহেল রানা জুনিয়রের শট হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।
হংকং ৪২তম মিনিটে জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে পায়নি গোল। কিন্তু যোগ করা সময়ে জাল আর অক্ষত থাকেনি স্বাগতিকদের। কর্নার ক্লিয়ার করতে একের পর হেডে চেষ্টা করতে থাকেন ডিফেন্ডাররা। এক পর্যায়ে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের হেডে বল চলে যায় ফাঁকায় এভারতনের পায়ে। সহজেই টোকায় জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত এই ফরোয়ার্ড।
অদ্ভূতূড়ে গোল হজম করে ক্ষোভ উগরে দেন হামজা। বল কুড়িয়ে স্বজোরে মেরে মাঝমাঠে পাঠিয়ে দেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আরেক অভাবনীয় ভুলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তেমন কোনো চাপ ছিল না, তাড়াহুড়া করার দরকারও ছিল না, কিন্তু সোহেল রানা জুনিয়র বক্সের বাইরে থেকে ব্যাক পাস দিলেন মিতুলের উদ্দেশে। সেই পাসেও ছিল না গতি। ছুটে এসে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মিতুলকে পরাস্ত করলেন বদলি ফরোয়ার্ড রাফায়েল মার্কেস।
এরপর একসাথে তিনটি পরিবর্তন আনেন কাবরেরা। সোহেল রানা সিনিয়র, সোহেল রানা জুনিয়র ও ফাহিমকে তুলে জামাল, শোমিত ও ফাহামিদুলকে নামান কোচ। ৬৮তম মিনিটে শেখ মোরসালিন ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশা বাড়ান।
৭৪তম মিনিটে বাংলাদেশ হয়ে পড়ে আরও কোণঠাসা। সতীর্থের লং পাস এভারতন নিয়ন্ত্রণে নেন। দেখে-শুনে সাদ উদ্দিনের পায়ের ফাঁক দিয়ে গোলমুখে বল বাড়ান তিনি। নিখুঁত প্লেসিং শটে বাকি কাজটুকু সারেন রাফায়েল।
এরপরই জাতীয় দলের হয়ে অভিষিক্ত হন জায়ান আহমেদ। তাজ উদ্দিনকে তুলে যুক্তরাষ্ট্র প্রাবাসী এই ডিফেন্ডারকে নামান কাবরেরা।
বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরা উপলক্ষ পায় ৮৪তম মিনিটে। জামালের ফ্রি কিক হংকংয়ের এক ডিফেন্ডার হেড করার পর বল চলে যায় ফাহামিদুলের পায়ে। ইতালি প্রবাসী এই ফরোয়ার্ডের উঁচু করে বাড়ানো বল তালগোল পাকিয়ে গ্লাভসে জমাতে পারেননি হংকং গোলকিপার। তার গ্লাভস গলে বেরিয়ে যাওয়া বল সহজ টোকায় জালে জড়িয়ে দেন শেখ মোরসালিন।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা হংকংয়ের রক্ষণে চাপ দিতে থাকে বাংলাদেশ। একেবারে শেষ সময়ে কর্নার আদায় করে নেয় তারা। মোরসালিনের কর্নারে এক ডিফেন্ডারের হেডে বলে চলে যায় দূরের পোস্টে। সেখান থেকেই হেডেই লক্ষ্যভেদ করেন শোমিত। সমতার উল্লাসে মেতে ওঠে গ্যালারি।
কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। কিক-অফের পরই আক্রমণে ওঠে হংকং। ডান দিক থেকে আসা ক্রসে লাফিয়ে মাথা ছোঁয়ালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি শাকিল আহাদ তপু। বল চলে যায় সাদ উদ্দিনের পায়ে। তিনিও ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে সুযোগ কাজে লাগান রাফায়েল।
আরেকটি হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
টান টান উত্তেজনার ম্যাচে বাংলাদেশ-হংকং খেলায় হারলো ৪-৩ গোলে।
আজ বৃহস্পতিবার এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে শুরুতে দেশের ফুটবলের পোস্টার বয় হামজা চৌধুরীর গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর পিছিয়ে পড়ে ৩-১ গোলে। সেখান থেকে ঘুড়ে দাড়িয়ে শেষ দিকে সমিত সোম, মোরসালিনের গোলে স্কোর ৩-৩ করে বাংলাদেশ।
যখন উৎসব আনন্দেমেতে উঠেছে ঢাকা স্টেডিয়ামের গ্যালারি তখনই শেষ মিনিটের গোলে গ্যালারিতে বিষাদের কালো ছায়া নামিয়ে আনেন হংকং চায়নার হ্যাটট্রিক হিরো রাফায়েল মারকিস। ম্যাচের শেষে মিনিটে তার গোলে ৪-৩ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অ্যাশলে ওয়েস্টউডের শিষ্যরা। এই হারে বাংলাদেশের মূল পর্বে খেলার স্বপ্ন কার্যত অসম্ভবই বলা চলে।
হংকংয়ের বিপক্ষে ১৯ বছর আগে সবশেষ ম্যাচে এশিয়ান কাপের বাছাইয়েই গোলশুন্য ড্র করেছিল বাংলাদেশ। প্রায় দুই দশক পরের মুখোমুখি লড়াইয়ে একাধিক গোল পেলেও জিততে পারল না হাভিয়ের কাবরেরার দল।
চলতি বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত জয়হীন বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ড্র দিয়ে শুরুর পর সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছিল দল। এ নিয়ে তারা বাছাইয়ে পেল টানা দ্বিতীয় হারের তেতো স্বাদ।
তিন ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে বাংলাদেশ। বাকি আছে আর তিনটি ম্যাচ। গ্রুপ সেরা হয়ে মূল পর্বে যাওয়ার আশা আপাতত টিকে আছে স্রেফ কাগজে-কলমে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে হংকং, দ্বিতীয় স্থানে সিঙ্গাপুরের পয়েন্ট ৫। ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ভারত।
শোমিত সোম, জামাল ভূঁইয়া, ফাহামিদুল ইসলামদের বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান কাবরেরা। ষষ্ঠ মিনিটেই ভালো সুযোগ পায় হংকং। বাম দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ম্যাট অরের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। তিন মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে রাকিবের শট সরাসরি যায় গোলকিপারের কাছে।
এরপরই হামজার ওই গোল এবং গ্যালারিতে আনন্দের বন্যা। বক্সের বাম দিক থেকে হামজার বাঁকানো ফ্রি কিকে বল এক ডিফেন্ডারের মাথা ছুঁয়ে জালে জড়ায়। চলতি বাছাইয়ে বাংলাদেশের এটা দ্বিতীয় গোল। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে যাওয়া ম্যাচে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন রাকিব।
লাল-সবুজের জার্সিতে এ নিয়ে দ্বিতীয় গোল করলেন হামজা। গত জুনে জাতীয় স্টেডিয়ামেই ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত গোলের খাতা খুলেছিলেন লেস্টার সিটির এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ দিতে থাকে বাংলাদেশ। ২১তম মিনিটে সোহেল রানা জুনিয়রের শট ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে যায়।
৩৯তম মিনিটে এভারতন কামারগোর শট আটকাতে ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি মিতুল। তবে বল বেরিয়ে যায় দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে। একটু পর হামজার ব্যাক পাসে সোহেল রানা জুনিয়রের শট হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।
হংকং ৪২তম মিনিটে জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে পায়নি গোল। কিন্তু যোগ করা সময়ে জাল আর অক্ষত থাকেনি স্বাগতিকদের। কর্নার ক্লিয়ার করতে একের পর হেডে চেষ্টা করতে থাকেন ডিফেন্ডাররা। এক পর্যায়ে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের হেডে বল চলে যায় ফাঁকায় এভারতনের পায়ে। সহজেই টোকায় জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত এই ফরোয়ার্ড।
অদ্ভূতূড়ে গোল হজম করে ক্ষোভ উগরে দেন হামজা। বল কুড়িয়ে স্বজোরে মেরে মাঝমাঠে পাঠিয়ে দেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আরেক অভাবনীয় ভুলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তেমন কোনো চাপ ছিল না, তাড়াহুড়া করার দরকারও ছিল না, কিন্তু সোহেল রানা জুনিয়র বক্সের বাইরে থেকে ব্যাক পাস দিলেন মিতুলের উদ্দেশে। সেই পাসেও ছিল না গতি। ছুটে এসে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মিতুলকে পরাস্ত করলেন বদলি ফরোয়ার্ড রাফায়েল মার্কেস।
এরপর একসাথে তিনটি পরিবর্তন আনেন কাবরেরা। সোহেল রানা সিনিয়র, সোহেল রানা জুনিয়র ও ফাহিমকে তুলে জামাল, শোমিত ও ফাহামিদুলকে নামান কোচ। ৬৮তম মিনিটে শেখ মোরসালিন ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশা বাড়ান।
৭৪তম মিনিটে বাংলাদেশ হয়ে পড়ে আরও কোণঠাসা। সতীর্থের লং পাস এভারতন নিয়ন্ত্রণে নেন। দেখে-শুনে সাদ উদ্দিনের পায়ের ফাঁক দিয়ে গোলমুখে বল বাড়ান তিনি। নিখুঁত প্লেসিং শটে বাকি কাজটুকু সারেন রাফায়েল।
এরপরই জাতীয় দলের হয়ে অভিষিক্ত হন জায়ান আহমেদ। তাজ উদ্দিনকে তুলে যুক্তরাষ্ট্র প্রাবাসী এই ডিফেন্ডারকে নামান কাবরেরা।
বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরা উপলক্ষ পায় ৮৪তম মিনিটে। জামালের ফ্রি কিক হংকংয়ের এক ডিফেন্ডার হেড করার পর বল চলে যায় ফাহামিদুলের পায়ে। ইতালি প্রবাসী এই ফরোয়ার্ডের উঁচু করে বাড়ানো বল তালগোল পাকিয়ে গ্লাভসে জমাতে পারেননি হংকং গোলকিপার। তার গ্লাভস গলে বেরিয়ে যাওয়া বল সহজ টোকায় জালে জড়িয়ে দেন শেখ মোরসালিন।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা হংকংয়ের রক্ষণে চাপ দিতে থাকে বাংলাদেশ। একেবারে শেষ সময়ে কর্নার আদায় করে নেয় তারা। মোরসালিনের কর্নারে এক ডিফেন্ডারের হেডে বলে চলে যায় দূরের পোস্টে। সেখান থেকেই হেডেই লক্ষ্যভেদ করেন শোমিত। সমতার উল্লাসে মেতে ওঠে গ্যালারি।
কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। কিক-অফের পরই আক্রমণে ওঠে হংকং। ডান দিক থেকে আসা ক্রসে লাফিয়ে মাথা ছোঁয়ালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি শাকিল আহাদ তপু। বল চলে যায় সাদ উদ্দিনের পায়ে। তিনিও ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে সুযোগ কাজে লাগান রাফায়েল।
আরেকটি হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।