তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে টিকে থাকার লক্ষ্য নিয়ে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬ টায় ।
গতকাল সোমবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৬ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ফলে সিরিজে সমতা ফেরাতে হলে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই টাইগারদের।
প্রথম ম্যাচে ব্যাট-বল হাতে দারুণ পারফরমেন্স করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৩ তম ওভারে ৮২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ডেথ ওভারে ঝড় তুলেন ক্যারিবীয় দুই ব্যাটার শাই হোপ ও রোভম্যান পাওয়েল।
দু’জনে অপরাজিত থেকে ৪৬ বলে ৮৩ রান যোগ করেন। এর মধ্যে শেষ তিন ওভারে তোলেন ৫১ রান। সমান ২৮ করে বল খেলে হোপ ৪৬ এবং পাওয়েল ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন। দু’জনে সমান ১টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারি মারেন।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬৫ রানের সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জয়ের জন্য ১৬৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২ ওভারে ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষদিকে তানজিম হাসান সাকিবের ৩৩, নাসুম আহমেদের ২০, তাসকিন আহমেদের ১০ ও মোস্তাফিজুর রহমানের অপরাজিত ১১ রানে বড় হারের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ রানে অলআউট হয় তারা।
সিরিজে সমতা আনতে হলে ব্যাটারদের কাছ থেকে বড় ইনিংসের প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। প্রথম ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, ‘আমি মনে করি তারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) প্রথম ১০ ওভারে সত্যি ভালো ব্যাটিং করেছে। উইকেট ধীর গতির ছিল। আমরা যদি শুরুতে উইকেট নিতে পারতাম তাহলে চাপে থাকতো তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেষ কয়েক ওভার ছাড়া পুরো ম্যাচে আমরা সত্যিই ভাল বোলিং করেছি। আমরা এ ম্যাচে যা ভুল করেছি এসব থেকে দ্রুত আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’
পুরস্কার বিতরণী লিটন বলেন, ‘আমার মনে হয় পাওয়ার প্লেতে আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলেছি। শামীম হোসেনের ব্যাটিং দেখে আমি খুবই হতাশ। এটা (ব্যাটিং) নিয়ে ভাবতে হবে ওকে; সবসময় শুধু এসেই ব্যাটিং উপভোগ করতে পারবেন না, দায়িত্ব নিতে হবে।
টি-টোয়েন্টির আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে প্রতিশোধ নিতে চায় ক্যারিবীয়রা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ বলেন, ‘যখন পরিকল্পনাগুলো কাজে লাগে তখন সব কাজই সহজ হয়ে যায়। বিশেষ করে অধিনায়ক হিসেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব কৃতিত্ব ছেলেদের। প্রথম ম্যাচে সব বিভাগেই ভালো খেলেছে তারা। এমন পারফরমেন্স ও ফলাফল দেখে আমি খুশি।’ সিরিজে সমতা আনার লক্ষ্যে একাদশে পরিবর্তন আনতে পারে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচের জয়ের কম্বিনেশনই ধরে রাখার চেষ্টা করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২০ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরমধ্যে বাংলাদেশের জয় ৮টিতে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ১০ ম্যাচে। দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
নিজের ইনিংস নিয়ে আক্ষেপ তানজিমের
গতকাল সোমবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয়ের জন্য ১৬৬ রান করতে নেমে পাওয়ার প্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে তাওহিদ হৃদয় যখন আউট হন, ১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ৭৭।
সেখান থেকে নাসুম আহমেদের সঙ্গে জুটিতে কিছুটা সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন তানজিম। কিন্তু তানজিমের বিদায়ে ২৩ বলে ৪০ রানের ইনিংস সর্বোচ্চ জুটি ভাঙার পর আর পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ। তিন বল বাকি থাকতে ১৪৯ রানে গুটিয়ে ১৬ রানে হেরে যায় লিটন দাসের দল। সাগরিকায় ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তানজিম বলেন, একজন থিতু ব্যাটার থাকলে জিততেও পারতেন তারা।
‘দেখেন, শেষের দিকে শিশিরের কারণে বল অনেক সহজে ব্যাটে আসছিল। আমার মনে হয়, যদি একজন থিতু ব্যাটার থাকতো, তাহলে ম্যাচটা অনেক সহজ হয়ে যেত। শেষ দুই ওভারে ৩০ রান দরকার ছিল, একজন থিতু ব্যাটার থাকলে ম্যাচ হাতের মধ্যেই থাকতো।’
শেষ পর্যন্ত থাকতে না পারায় নিজের ইনিংস নিয়েও আক্ষেপ ঝরলো তানজিমের কণ্ঠে। ‘আমি যদি ম্যাচ শেষ করতে পারতাম, খুব ভালো লাগতো।
বল ব্যাটে ভালোভাবে আসছিল, আমি সেট ছিলাম, নাসুম ভাইও ভালো সাপোর্ট দিচ্ছিলেন, বাউন্ডারি মারছিলেন। মনে হচ্ছিল, আমি এক ব্যাটসম্যানকে নিয়েই ব্যাট করছি। যদি আরও কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম, হয়তো ম্যাচটা একদম শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতাম। রিশাদও তখন আসতো, ম্যাচটা হয়তো অন্যরকম হতো।’
তানজিম জানান, ‘আমরা পাওয়ার প্লেতে উইকেট হারিয়েছি। তারা যদি থিতু হয়ে আউট হতো, তাহলে চিত্রটা আলাদা হতো। কিন্তু বেশিরভাগই থিতু হওয়ার আগেই আউট হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা আরও একটু দায়িত্ব নিতে পারতো। যদি তারা ম্যাচটা গভীরে নিয়ে যেতে পারতো, তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকম হতো।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে টিকে থাকার লক্ষ্য নিয়ে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬ টায় ।
গতকাল সোমবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৬ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ফলে সিরিজে সমতা ফেরাতে হলে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই টাইগারদের।
প্রথম ম্যাচে ব্যাট-বল হাতে দারুণ পারফরমেন্স করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৩ তম ওভারে ৮২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ডেথ ওভারে ঝড় তুলেন ক্যারিবীয় দুই ব্যাটার শাই হোপ ও রোভম্যান পাওয়েল।
দু’জনে অপরাজিত থেকে ৪৬ বলে ৮৩ রান যোগ করেন। এর মধ্যে শেষ তিন ওভারে তোলেন ৫১ রান। সমান ২৮ করে বল খেলে হোপ ৪৬ এবং পাওয়েল ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন। দু’জনে সমান ১টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারি মারেন।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬৫ রানের সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জয়ের জন্য ১৬৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২ ওভারে ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষদিকে তানজিম হাসান সাকিবের ৩৩, নাসুম আহমেদের ২০, তাসকিন আহমেদের ১০ ও মোস্তাফিজুর রহমানের অপরাজিত ১১ রানে বড় হারের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ রানে অলআউট হয় তারা।
সিরিজে সমতা আনতে হলে ব্যাটারদের কাছ থেকে বড় ইনিংসের প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। প্রথম ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, ‘আমি মনে করি তারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) প্রথম ১০ ওভারে সত্যি ভালো ব্যাটিং করেছে। উইকেট ধীর গতির ছিল। আমরা যদি শুরুতে উইকেট নিতে পারতাম তাহলে চাপে থাকতো তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেষ কয়েক ওভার ছাড়া পুরো ম্যাচে আমরা সত্যিই ভাল বোলিং করেছি। আমরা এ ম্যাচে যা ভুল করেছি এসব থেকে দ্রুত আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’
পুরস্কার বিতরণী লিটন বলেন, ‘আমার মনে হয় পাওয়ার প্লেতে আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলেছি। শামীম হোসেনের ব্যাটিং দেখে আমি খুবই হতাশ। এটা (ব্যাটিং) নিয়ে ভাবতে হবে ওকে; সবসময় শুধু এসেই ব্যাটিং উপভোগ করতে পারবেন না, দায়িত্ব নিতে হবে।
টি-টোয়েন্টির আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে প্রতিশোধ নিতে চায় ক্যারিবীয়রা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ বলেন, ‘যখন পরিকল্পনাগুলো কাজে লাগে তখন সব কাজই সহজ হয়ে যায়। বিশেষ করে অধিনায়ক হিসেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব কৃতিত্ব ছেলেদের। প্রথম ম্যাচে সব বিভাগেই ভালো খেলেছে তারা। এমন পারফরমেন্স ও ফলাফল দেখে আমি খুশি।’ সিরিজে সমতা আনার লক্ষ্যে একাদশে পরিবর্তন আনতে পারে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচের জয়ের কম্বিনেশনই ধরে রাখার চেষ্টা করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২০ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরমধ্যে বাংলাদেশের জয় ৮টিতে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ১০ ম্যাচে। দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
নিজের ইনিংস নিয়ে আক্ষেপ তানজিমের
গতকাল সোমবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয়ের জন্য ১৬৬ রান করতে নেমে পাওয়ার প্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে তাওহিদ হৃদয় যখন আউট হন, ১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ৭৭।
সেখান থেকে নাসুম আহমেদের সঙ্গে জুটিতে কিছুটা সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন তানজিম। কিন্তু তানজিমের বিদায়ে ২৩ বলে ৪০ রানের ইনিংস সর্বোচ্চ জুটি ভাঙার পর আর পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ। তিন বল বাকি থাকতে ১৪৯ রানে গুটিয়ে ১৬ রানে হেরে যায় লিটন দাসের দল। সাগরিকায় ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তানজিম বলেন, একজন থিতু ব্যাটার থাকলে জিততেও পারতেন তারা।
‘দেখেন, শেষের দিকে শিশিরের কারণে বল অনেক সহজে ব্যাটে আসছিল। আমার মনে হয়, যদি একজন থিতু ব্যাটার থাকতো, তাহলে ম্যাচটা অনেক সহজ হয়ে যেত। শেষ দুই ওভারে ৩০ রান দরকার ছিল, একজন থিতু ব্যাটার থাকলে ম্যাচ হাতের মধ্যেই থাকতো।’
শেষ পর্যন্ত থাকতে না পারায় নিজের ইনিংস নিয়েও আক্ষেপ ঝরলো তানজিমের কণ্ঠে। ‘আমি যদি ম্যাচ শেষ করতে পারতাম, খুব ভালো লাগতো।
বল ব্যাটে ভালোভাবে আসছিল, আমি সেট ছিলাম, নাসুম ভাইও ভালো সাপোর্ট দিচ্ছিলেন, বাউন্ডারি মারছিলেন। মনে হচ্ছিল, আমি এক ব্যাটসম্যানকে নিয়েই ব্যাট করছি। যদি আরও কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম, হয়তো ম্যাচটা একদম শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতাম। রিশাদও তখন আসতো, ম্যাচটা হয়তো অন্যরকম হতো।’
তানজিম জানান, ‘আমরা পাওয়ার প্লেতে উইকেট হারিয়েছি। তারা যদি থিতু হয়ে আউট হতো, তাহলে চিত্রটা আলাদা হতো। কিন্তু বেশিরভাগই থিতু হওয়ার আগেই আউট হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা আরও একটু দায়িত্ব নিতে পারতো। যদি তারা ম্যাচটা গভীরে নিয়ে যেতে পারতো, তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকম হতো।’