ছবি: সংগৃহীত
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ম্যাচের শুরুতে গ্যালারিতে একটা পোস্টার ‘থ্যাঙ্ক ইউ নেদারল্যান্ডস।’ সত্যি, প্রত্যেক পাকিস্তানি সমর্থক ডাচদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। পাকিস্তানকে সেমিফাইনাল উপহার দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস, ফাইনাল গিফট করলেন বাবর-রেজওয়ান। নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেট আর ৫ বল হাতে রেখে হারিয়ে দিলো বাবর আজমের দল, ১৩ বছর পর আবারও নাম লেখালো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে।
এবারের আগে ২০০৭ ও ২০০৯ আসরে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলেছে পাকিস্তান। ২০০৭ সালের আসরে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়েই ফাইনালের টিকেট পেয়েছিল দলটি। পরেরবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।
এর আগে প্রথম দল হিসেবে তিনবার ফাইনাল খেলার কীর্তি গড়েছিল শ্রীলঙ্কা; ২০০৯, ২০১২ ও ২০১৪ সালের আসরে।
বুধবার (৯ নভেম্বর) সিডনিতে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের প্রথম বলেই শাহীন শাহ আফ্রিদিকে চার মেরে দারুণভাবে ইনিংসের শুরু করেন কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন। পরের বলেই অবশ্য এলবিডব্লিউ হয়ে যান অ্যালেন। পরে রিভিউতে দেখা যায় ব্যাটে স্পর্শ করেছিল বল। ফলে এ যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। তার পরের বলে আবারও তাকে এলবিডব্লিউ দিয়ে দেন আম্পায়ার। এবার অবশ্য রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। দলীয় ৪ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন ঘটে কিউইদের।
শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিতে ধীরেসুস্থে খেলতে থাকেন তিনে নামা অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে। দলীয় ৩৮ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ফিরে যান কনওয়ে। এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি গ্লেন ফিলিপসও। ৪৯ রানের মাথায় ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপেই পড়ে যায় কিউইরা।
সেই চাপ থেকে দলকে টেনে তোলেন ড্যারেল মিচেল। অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে সাথে নিয়ে ৬৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন মিচেল। যথেষ্ট মারমুখি ছিলেন মিচেল, পেয়েছেন ফিফটির দেখাও। ১১৭ রানের মাথায় ৪২ বলে ৪৬ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে বিদায় নেন উইলিয়ামসন। এরপর ইনিংসে বাকি পথ জেমস নিশামকে সাথে নিয়ে পাড়ি দেন মিচেল। শেষপর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় নিউজিল্যান্ড। ৩৫ বলে ৫৩ করে অপরাজিত থাকেন মিচেল। ১২ বলে ১৬ করে অপরাজিত ছিলেন নিশাম।
পাকিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন পেসার শাহীন আফ্রিদি। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন শাহীন। এছাড়া ১টি উইকেট নেন মোহাম্মদ নাওয়াজ।
১৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানকে বিস্ফোরক সূচনা এনে দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিউই বোলারদের পিটিয়ে তুলোধুনো করে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন তিনি। অপর পাশ থেকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন দলীয় অধিনায়ক বাবর আজম, যদিও কিছুটা ধীরগতিতেই আগাচ্ছিলেন বাবর। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৫৫ রান তুলে ফেলে পাকিস্তান। ফলে ম্যাচ জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় পাকিস্তান।
পাওয়ারপ্লে শেষ হলেও থামছিল না পাকিস্তানের ঝড়ো ব্যাটিং। রিজওয়ানের ধুন্ধুমার ব্যাটিং তো চলছিলই, সেই সাথে যেন খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসছিলেন বাবরও। মারকুটে ব্যাটিংয়ে রিজওয়ানের আগেই ফিফটি তুলে নেন বাবর। দুজনে মিলে গড়েন ১০৫ রানের বিস্ফোরক ওপেনিং জুটি, ম্যাচটা সম্ভবত সেখানেই জিতে যায় পাকিস্তান।
দলীয় ১০৫ রানের মাথায় ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান বাবর। আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ৫৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। তবে দ্রুতগতিতে রান তুলছিলেন রিজওয়ান, তুলে নেন ফিফটিও। শেষমেশ দলীয় ১৩২ রানের মাথায় থামেন রিজওয়ান। বোল্টের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৪৩ বলে ৫৭ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন তিনি। বাকি পথটা ভালোভাবেই পারি দিচ্ছিলেন মোহাম্মদ হারিস এবং শান মাসুদ। তবে শেষের আগের ওভারে এসে ২৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে মিচেল স্যান্টনারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান হারিস। অন্যদিকে ৪ বলে ৩ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মাসুদ। ৫ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪ ওভার বল করে ৩৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন ট্রেন্ট বোল্ট। এছাড়া ২৬ রানে ১ উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার।
ছবি: সংগৃহীত
বুধবার, ০৯ নভেম্বর ২০২২
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ম্যাচের শুরুতে গ্যালারিতে একটা পোস্টার ‘থ্যাঙ্ক ইউ নেদারল্যান্ডস।’ সত্যি, প্রত্যেক পাকিস্তানি সমর্থক ডাচদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। পাকিস্তানকে সেমিফাইনাল উপহার দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস, ফাইনাল গিফট করলেন বাবর-রেজওয়ান। নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেট আর ৫ বল হাতে রেখে হারিয়ে দিলো বাবর আজমের দল, ১৩ বছর পর আবারও নাম লেখালো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে।
এবারের আগে ২০০৭ ও ২০০৯ আসরে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলেছে পাকিস্তান। ২০০৭ সালের আসরে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়েই ফাইনালের টিকেট পেয়েছিল দলটি। পরেরবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।
এর আগে প্রথম দল হিসেবে তিনবার ফাইনাল খেলার কীর্তি গড়েছিল শ্রীলঙ্কা; ২০০৯, ২০১২ ও ২০১৪ সালের আসরে।
বুধবার (৯ নভেম্বর) সিডনিতে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের প্রথম বলেই শাহীন শাহ আফ্রিদিকে চার মেরে দারুণভাবে ইনিংসের শুরু করেন কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন। পরের বলেই অবশ্য এলবিডব্লিউ হয়ে যান অ্যালেন। পরে রিভিউতে দেখা যায় ব্যাটে স্পর্শ করেছিল বল। ফলে এ যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। তার পরের বলে আবারও তাকে এলবিডব্লিউ দিয়ে দেন আম্পায়ার। এবার অবশ্য রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। দলীয় ৪ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন ঘটে কিউইদের।
শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিতে ধীরেসুস্থে খেলতে থাকেন তিনে নামা অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে। দলীয় ৩৮ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ফিরে যান কনওয়ে। এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি গ্লেন ফিলিপসও। ৪৯ রানের মাথায় ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপেই পড়ে যায় কিউইরা।
সেই চাপ থেকে দলকে টেনে তোলেন ড্যারেল মিচেল। অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে সাথে নিয়ে ৬৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন মিচেল। যথেষ্ট মারমুখি ছিলেন মিচেল, পেয়েছেন ফিফটির দেখাও। ১১৭ রানের মাথায় ৪২ বলে ৪৬ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে বিদায় নেন উইলিয়ামসন। এরপর ইনিংসে বাকি পথ জেমস নিশামকে সাথে নিয়ে পাড়ি দেন মিচেল। শেষপর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় নিউজিল্যান্ড। ৩৫ বলে ৫৩ করে অপরাজিত থাকেন মিচেল। ১২ বলে ১৬ করে অপরাজিত ছিলেন নিশাম।
পাকিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন পেসার শাহীন আফ্রিদি। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন শাহীন। এছাড়া ১টি উইকেট নেন মোহাম্মদ নাওয়াজ।
১৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানকে বিস্ফোরক সূচনা এনে দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিউই বোলারদের পিটিয়ে তুলোধুনো করে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন তিনি। অপর পাশ থেকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন দলীয় অধিনায়ক বাবর আজম, যদিও কিছুটা ধীরগতিতেই আগাচ্ছিলেন বাবর। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৫৫ রান তুলে ফেলে পাকিস্তান। ফলে ম্যাচ জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় পাকিস্তান।
পাওয়ারপ্লে শেষ হলেও থামছিল না পাকিস্তানের ঝড়ো ব্যাটিং। রিজওয়ানের ধুন্ধুমার ব্যাটিং তো চলছিলই, সেই সাথে যেন খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসছিলেন বাবরও। মারকুটে ব্যাটিংয়ে রিজওয়ানের আগেই ফিফটি তুলে নেন বাবর। দুজনে মিলে গড়েন ১০৫ রানের বিস্ফোরক ওপেনিং জুটি, ম্যাচটা সম্ভবত সেখানেই জিতে যায় পাকিস্তান।
দলীয় ১০৫ রানের মাথায় ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান বাবর। আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ৫৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। তবে দ্রুতগতিতে রান তুলছিলেন রিজওয়ান, তুলে নেন ফিফটিও। শেষমেশ দলীয় ১৩২ রানের মাথায় থামেন রিজওয়ান। বোল্টের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৪৩ বলে ৫৭ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন তিনি। বাকি পথটা ভালোভাবেই পারি দিচ্ছিলেন মোহাম্মদ হারিস এবং শান মাসুদ। তবে শেষের আগের ওভারে এসে ২৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে মিচেল স্যান্টনারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান হারিস। অন্যদিকে ৪ বলে ৩ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মাসুদ। ৫ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪ ওভার বল করে ৩৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন ট্রেন্ট বোল্ট। এছাড়া ২৬ রানে ১ উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার।