রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুলের প্রধান ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। এখনো অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। লক্ষণীয়ভাবে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করছে। এটা করতে গিয়ে অনেক স্থানে শিক্ষক নিগ্রহের মতো ঘটনাও ঘটেছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত-অপমানিত করা হচ্ছে।
গত বুধবার কুমিল্লার দেবীদ্বারে মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ করেন, তিনি বিদ্যালয়ের অর্থে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ছেড়ে যান। তাপর প্রধানশিক্ষকের চেয়ারে বসে পড়ে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।
যেসব শিক্ষকদের পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এসব শিক্ষক নিয়োগ বা পদায়নে বিগত সরকার আমলে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে।
কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকতে পারে। তবে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই কাউকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো যায় কিনা, তার ওপর হামলা চালানো বা অপমান-অপদস্ত করা যায় কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে। অভিযোগ থাকলে সেটার সুষ্ঠু তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। সেজন্য সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।
কিন্তু অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে বলপ্রয়োগ করতে দেখা যাচ্ছে। তারা শিক্ষককে নানাভাবে হেনস্তা করছে। দেশে এই পরিস্থিতির উদ্ভব কেন হলো সেটা একটা প্রশ্ন। এটা কি শুধু একটি সরকার আমলের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সৃষ্ট ক্ষোভ থেকে হচ্ছে নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। অনেকে বলছেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর নতুন করে রাজনীতির খপ্পরে পড়েছে।
আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্ট নৈরাজ্যের অবসান চাই। কোনো শিক্ষক নিগ্রহের শিকার হোন সেটা কাম্য হতে পারে না। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক লাঞ্ছনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তার আহ্বান কোনো কাজে এসেছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না। আমরা বলতে চাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। শিক্ষক লাঞ্ছনা বা পদত্যাগের পেছনে কেবলই কি শিক্ষার্থীরা জড়িত নাকি এর পেছনে অন্য কেউ আছে সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুলের প্রধান ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। এখনো অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। লক্ষণীয়ভাবে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করছে। এটা করতে গিয়ে অনেক স্থানে শিক্ষক নিগ্রহের মতো ঘটনাও ঘটেছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত-অপমানিত করা হচ্ছে।
গত বুধবার কুমিল্লার দেবীদ্বারে মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ করেন, তিনি বিদ্যালয়ের অর্থে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ছেড়ে যান। তাপর প্রধানশিক্ষকের চেয়ারে বসে পড়ে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।
যেসব শিক্ষকদের পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এসব শিক্ষক নিয়োগ বা পদায়নে বিগত সরকার আমলে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে।
কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকতে পারে। তবে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই কাউকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো যায় কিনা, তার ওপর হামলা চালানো বা অপমান-অপদস্ত করা যায় কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে। অভিযোগ থাকলে সেটার সুষ্ঠু তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। সেজন্য সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।
কিন্তু অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে বলপ্রয়োগ করতে দেখা যাচ্ছে। তারা শিক্ষককে নানাভাবে হেনস্তা করছে। দেশে এই পরিস্থিতির উদ্ভব কেন হলো সেটা একটা প্রশ্ন। এটা কি শুধু একটি সরকার আমলের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সৃষ্ট ক্ষোভ থেকে হচ্ছে নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। অনেকে বলছেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর নতুন করে রাজনীতির খপ্পরে পড়েছে।
আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্ট নৈরাজ্যের অবসান চাই। কোনো শিক্ষক নিগ্রহের শিকার হোন সেটা কাম্য হতে পারে না। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক লাঞ্ছনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তার আহ্বান কোনো কাজে এসেছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না। আমরা বলতে চাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। শিক্ষক লাঞ্ছনা বা পদত্যাগের পেছনে কেবলই কি শিক্ষার্থীরা জড়িত নাকি এর পেছনে অন্য কেউ আছে সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।