alt

মতামত » সম্পাদকীয়

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে উপকূল

: শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আজ আর কল্পনা নয়, বাস্তবতা। বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত বিপর্যয়ের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো। এর প্রমাণ বাঁশখালীর ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র উপকূল। অথচ এই অঞ্চলের জীবন-জীবিকা রক্ষায় নেয়া হয়নি কার্যকর কোনো উদ্যোগ, বরং জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যবহারে বৈষম্য এবং অগ্রাধিকারের অভাব চট্টগ্রামের এই উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাঁচার লড়াই আরও কঠিন করে তুলেছে।

বাঁশখালীর উপকূলবর্তী গ্রামগুলো অরক্ষিত বেড়িবাঁধের কারণে নিয়মিত জোয়ার, ঘূণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের শিকার। বেড়িবাঁধ শক্তিশালী করার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এখানে বাস্তবায়ন না হওয়ায় মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল এবং নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এসব এলাকার জনগণ প্রতিদিন সাগরের লবণাক্ত পানি এবং জমি হারানোর শঙ্কায় দিন কাটায়, অথচ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বরাদ্দকৃত অর্থ বাঁশখালীর মতো ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের পরিবর্তে কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশু। বাঁশখালীর মতো এলাকায় এই প্রভাব আরও বেশি প্রকট। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার সুযোগ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর প্রকল্পের অভাবে নারী ও শিশুরা এখানে দ্বিগুণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অথচ জাতীয় পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তাদের সুরক্ষা অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা ছিল।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার নামে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও প্রকৃত অভিযোজনমূলক প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে নীতিগত দুর্বলতা রয়েছে। জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং স্থানীয় অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে প্রকল্প গ্রহণ না করলে এসব উদ্যোগ কার্যকর হবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঁশখালীসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে ঝুঁকি মানচিত্র তৈরি করা জরুরি। এতে প্রকল্প পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার পাওয়া সহজ হবে। উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা জরুরি। প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া উচিত। বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য একটি জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করা আবশ্যক।

বাঁশখালীর উপকূলীয় জনগণ আজ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়ে বেঁচে থাকার লড়াই করছে। এই অঞ্চলকে বাঁচাতে প্রয়োজন ন্যায্য অর্থায়ন, সঠিক পরিকল্পনা এবং দ্রুত বাস্তবায়ন। উন্নয়ন নয়, এখানে প্রয়োজন টিকে থাকার ব্যবস্থা। বাঁশখালীর উপকূল যদি হারিয়ে যায়, তা শুধু একটি এলাকার ক্ষতি নয়; এটি হবে গোটা দেশের জন্য একটি বড় ধরনের ক্ষতি।

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ আমলে নিন

ধানখেতে পোকার আক্রমণ: কৃষকের পাশে দাঁড়ান

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে উপকূল

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আজ আর কল্পনা নয়, বাস্তবতা। বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত বিপর্যয়ের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো। এর প্রমাণ বাঁশখালীর ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র উপকূল। অথচ এই অঞ্চলের জীবন-জীবিকা রক্ষায় নেয়া হয়নি কার্যকর কোনো উদ্যোগ, বরং জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যবহারে বৈষম্য এবং অগ্রাধিকারের অভাব চট্টগ্রামের এই উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাঁচার লড়াই আরও কঠিন করে তুলেছে।

বাঁশখালীর উপকূলবর্তী গ্রামগুলো অরক্ষিত বেড়িবাঁধের কারণে নিয়মিত জোয়ার, ঘূণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের শিকার। বেড়িবাঁধ শক্তিশালী করার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এখানে বাস্তবায়ন না হওয়ায় মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল এবং নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এসব এলাকার জনগণ প্রতিদিন সাগরের লবণাক্ত পানি এবং জমি হারানোর শঙ্কায় দিন কাটায়, অথচ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বরাদ্দকৃত অর্থ বাঁশখালীর মতো ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের পরিবর্তে কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশু। বাঁশখালীর মতো এলাকায় এই প্রভাব আরও বেশি প্রকট। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার সুযোগ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর প্রকল্পের অভাবে নারী ও শিশুরা এখানে দ্বিগুণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অথচ জাতীয় পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তাদের সুরক্ষা অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা ছিল।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার নামে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও প্রকৃত অভিযোজনমূলক প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে নীতিগত দুর্বলতা রয়েছে। জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং স্থানীয় অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে প্রকল্প গ্রহণ না করলে এসব উদ্যোগ কার্যকর হবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঁশখালীসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে ঝুঁকি মানচিত্র তৈরি করা জরুরি। এতে প্রকল্প পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার পাওয়া সহজ হবে। উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা জরুরি। প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া উচিত। বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য একটি জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করা আবশ্যক।

বাঁশখালীর উপকূলীয় জনগণ আজ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়ে বেঁচে থাকার লড়াই করছে। এই অঞ্চলকে বাঁচাতে প্রয়োজন ন্যায্য অর্থায়ন, সঠিক পরিকল্পনা এবং দ্রুত বাস্তবায়ন। উন্নয়ন নয়, এখানে প্রয়োজন টিকে থাকার ব্যবস্থা। বাঁশখালীর উপকূল যদি হারিয়ে যায়, তা শুধু একটি এলাকার ক্ষতি নয়; এটি হবে গোটা দেশের জন্য একটি বড় ধরনের ক্ষতি।

back to top