বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪-এ বাংলাদেশের অবস্থান একটি দ্বৈতচিত্র উপস্থাপন করে। প্রতিবেদনে একদিকে আছে উন্নতির ইঙ্গিত, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জের বাস্তবতা। ১২৭টি দেশের মধ্যে ৮৪তম স্থানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। ১৯ দশমিক ৪ স্কোর পেয়ে মাঝারি ক্ষুধার কাতারে অবস্থান করছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে এটি ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চেয়ে ভালো, তবে নেপাল ও শ্রীলংকার তুলনায় পিছিয়ে।
বাংলাদেশের ক্ষুধা সূচকে উন্নতি গত কয়েক দশকের প্রচেষ্টার ফসল। অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু এবং খর্বকায়তার হার আগের চেয়ে কমেছে। তবে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনো জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২-এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। দেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে; ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ খর্বকায়। প্রশ্ন হচ্ছে এর কারণ কী।
জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় বাধা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব খাদ্যের উৎপাদন ও সরবরাহকে ব্যাহত করছে। পাশাপাশি, লিঙ্গবৈষম্যের কারণে নারীরা খাদ্য নিরাপত্তা থেকে আরও বঞ্চিত হন। নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের লোকজ জ্ঞান খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে করণীয় কী সেটা একটা প্রশ্ন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষুধা দূরীকরণে বাংলাদেশের জন্য কার্যকর ও টেকসই কৌশল গ্রহণ অপরিহার্য। জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে হবে। কৃষিতে টেকসই পদ্ধতি, সেচ ব্যবস্থা উন্নতকরণ, এবং খাদ্য বৈচিত্র্য রক্ষায় জোর দেয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি নিশ্চিত করতে সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়াতে হবে।
নারীর ক্ষমতায়ন ঘটানোও অত্যন্ত জরুরি। নারীর ভূমিকা ও জ্ঞান কাজে লাগাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। নিতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি। সব শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রয়োজন বিবেচনা করে খাদ্যনীতি তৈরি ও বাস্তবায়ন জরুরি।
ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, কার্যকর বাস্তবায়ন এবং সবাই অংশীদারের সমন্বিত প্রচেষ্টা। বর্তমান উন্নতি প্রশংসনীয়, তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও সাহসী পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শুধু একটি মানবিক চ্যালেঞ্জ নয়, এটি টেকসই উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪-এ বাংলাদেশের অবস্থান একটি দ্বৈতচিত্র উপস্থাপন করে। প্রতিবেদনে একদিকে আছে উন্নতির ইঙ্গিত, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জের বাস্তবতা। ১২৭টি দেশের মধ্যে ৮৪তম স্থানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। ১৯ দশমিক ৪ স্কোর পেয়ে মাঝারি ক্ষুধার কাতারে অবস্থান করছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে এটি ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চেয়ে ভালো, তবে নেপাল ও শ্রীলংকার তুলনায় পিছিয়ে।
বাংলাদেশের ক্ষুধা সূচকে উন্নতি গত কয়েক দশকের প্রচেষ্টার ফসল। অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু এবং খর্বকায়তার হার আগের চেয়ে কমেছে। তবে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনো জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২-এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। দেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে; ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ খর্বকায়। প্রশ্ন হচ্ছে এর কারণ কী।
জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় বাধা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব খাদ্যের উৎপাদন ও সরবরাহকে ব্যাহত করছে। পাশাপাশি, লিঙ্গবৈষম্যের কারণে নারীরা খাদ্য নিরাপত্তা থেকে আরও বঞ্চিত হন। নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের লোকজ জ্ঞান খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে করণীয় কী সেটা একটা প্রশ্ন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষুধা দূরীকরণে বাংলাদেশের জন্য কার্যকর ও টেকসই কৌশল গ্রহণ অপরিহার্য। জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে হবে। কৃষিতে টেকসই পদ্ধতি, সেচ ব্যবস্থা উন্নতকরণ, এবং খাদ্য বৈচিত্র্য রক্ষায় জোর দেয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি নিশ্চিত করতে সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়াতে হবে।
নারীর ক্ষমতায়ন ঘটানোও অত্যন্ত জরুরি। নারীর ভূমিকা ও জ্ঞান কাজে লাগাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। নিতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি। সব শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রয়োজন বিবেচনা করে খাদ্যনীতি তৈরি ও বাস্তবায়ন জরুরি।
ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, কার্যকর বাস্তবায়ন এবং সবাই অংশীদারের সমন্বিত প্রচেষ্টা। বর্তমান উন্নতি প্রশংসনীয়, তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও সাহসী পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শুধু একটি মানবিক চ্যালেঞ্জ নয়, এটি টেকসই উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।