alt

সম্পাদকীয়

কিশোর গ্যাং : আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা ও সামাজিক সংকট

: সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানী আদাবর ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাংয়ের তা-ব একটি গভীর সামাজিক সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আদাবরের মেহেদীবাগে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীর ওপর সংঘবদ্ধ হামলা এবং কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকায় অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির করুণ দশার উদাহরণ। এসব ঘটনা কেবল শারীরিক আঘাতেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি সমাজের শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, এবং নৈতিক কাঠামোকে আঘাত করছে।

কিশোর গ্যাংয়ের প্রসারকে রাজনৈতিক মদদপ্রাপ্তির একটি কুৎসিত দৃষ্টান্ত বলা যেতে পারে। আদাবরের ঘটনার পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও তাদের অনুগামীদের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে, কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা অতীতে আওয়ামী লীগের একাংশের সহযোগিতা পেয়েছে, আর এখন তারা বিএনপির সঙ্গে মিশে অপরাধ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সহযোগিতা ও আশ্রয়ে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

কিশোর গ্যাং দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা হতাশাজনক। আদাবর ও কুমিল্লার ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং গ্যাং দমনে বিশেষ অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয়া হলেও এসব উদ্যোগের কার্যকারিতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। পুলিশের এই ব্যর্থতা শুধু বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করছে না, বরং জনসাধারণের আস্থা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

কিশোর গ্যাংয়ের উত্থানের কারণগুলো চিহ্নিত করা জরুরি। পারিবারিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে সমস্যার শিকড় নির্ধারণ করতে হবে। কিশোরদের সঠিক পথনির্দেশনা দিতে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিহার্য।

কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া অপরিহার্য। আইন প্রয়োগে কঠোরতার বিকল্প নেই। বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীদের কোনো ধরনের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া দেয়া হলে তা বন্ধ করতে হবে। দলীয় পরিচয় বিবেচনা না করে অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে।

যারা অপরাধ থেকে সরে আসতে চায় তাদের জন্য পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, কাউন্সেলিং সেবা এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সমাজে পুনঃস্থাপন করা যেতে পারে।

কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত একটি বহুমুখী সমস্যা। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলার সংকট নয়; এটি আমাদের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়েরও প্রতিফলন। সমস্যার সমাধানে একটি সমন্বিত, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। পরিবার, সমাজ, রাজনীতি এবং প্রশাসনের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে কিশোরদের অপরাধের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে।

স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি দুমকি হাসপাতাল

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক উদ্যোগ

আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি থামবে না

এসএসসি পরীক্ষার ফল : বাস্তবতা মেনে, ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলতে হবে

বন্যা : কেন নেই টেকসই সমাধান?

জলাবদ্ধ নগরজীবন

ভূমিধসের হুমকি ও প্রস্তুতি

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

tab

সম্পাদকীয়

কিশোর গ্যাং : আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা ও সামাজিক সংকট

সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানী আদাবর ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাংয়ের তা-ব একটি গভীর সামাজিক সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আদাবরের মেহেদীবাগে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীর ওপর সংঘবদ্ধ হামলা এবং কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকায় অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির করুণ দশার উদাহরণ। এসব ঘটনা কেবল শারীরিক আঘাতেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি সমাজের শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, এবং নৈতিক কাঠামোকে আঘাত করছে।

কিশোর গ্যাংয়ের প্রসারকে রাজনৈতিক মদদপ্রাপ্তির একটি কুৎসিত দৃষ্টান্ত বলা যেতে পারে। আদাবরের ঘটনার পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও তাদের অনুগামীদের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে, কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা অতীতে আওয়ামী লীগের একাংশের সহযোগিতা পেয়েছে, আর এখন তারা বিএনপির সঙ্গে মিশে অপরাধ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সহযোগিতা ও আশ্রয়ে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

কিশোর গ্যাং দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা হতাশাজনক। আদাবর ও কুমিল্লার ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং গ্যাং দমনে বিশেষ অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয়া হলেও এসব উদ্যোগের কার্যকারিতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। পুলিশের এই ব্যর্থতা শুধু বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করছে না, বরং জনসাধারণের আস্থা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

কিশোর গ্যাংয়ের উত্থানের কারণগুলো চিহ্নিত করা জরুরি। পারিবারিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে সমস্যার শিকড় নির্ধারণ করতে হবে। কিশোরদের সঠিক পথনির্দেশনা দিতে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিহার্য।

কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া অপরিহার্য। আইন প্রয়োগে কঠোরতার বিকল্প নেই। বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীদের কোনো ধরনের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া দেয়া হলে তা বন্ধ করতে হবে। দলীয় পরিচয় বিবেচনা না করে অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে।

যারা অপরাধ থেকে সরে আসতে চায় তাদের জন্য পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, কাউন্সেলিং সেবা এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সমাজে পুনঃস্থাপন করা যেতে পারে।

কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত একটি বহুমুখী সমস্যা। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলার সংকট নয়; এটি আমাদের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়েরও প্রতিফলন। সমস্যার সমাধানে একটি সমন্বিত, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। পরিবার, সমাজ, রাজনীতি এবং প্রশাসনের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে কিশোরদের অপরাধের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে।

back to top