প্রতিনিয়ত দেশের রেলক্রসিংগুলোতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা এক করুণ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সর্বশেষ ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ের মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের আরও একবার সতর্ক করল। এই ঘটনায় পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে প্রাণহানির এমন শোকাবহ চিত্র বারবার দেখা গেলেও সমস্যার কার্যকর সমাধান আজও অজানা।
ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিং এবং জামালপুরের সরিষাবাড়ী রেলক্রসিংয়ের সাম্প্রতিক দুটি দুর্ঘটনা রেলপথের নিরাপত্তার অভাবকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ে কোনো গেট বা গেটম্যান ছিল না। ট্রেনের হুইসেলও সঠিক সময়ে শোনা যায়নি। দোকানপাট ও গাছপালায় ঢেকে থাকা রেলপথ ট্রেন আসার সংকেতকে কার্যত অদৃশ্য করে দিয়েছে। আর সরিষাবাড়ীতে গেটম্যান থাকলেও দায়িত্বে অবহেলার কারণে গেটের বার ফেলা হয়নি, যার ফলে ট্রাকটি ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে ট্রেন আসা-যাওয়ার বিষয়টি বোঝা যায় না। এটি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং এমন বহু দুর্ঘটনার অনিবার্যতা প্রতিফলিত করে।
রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বহু রেলক্রসিং অনুমোদনহীন। এগুলো স্থানীয় জনগণের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি হলেও রেলের কোনো আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় নেই। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংও এমনই একটি।
এছাড়া গেটম্যান স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে গাফিলতিÑএগুলোর কারণেই দুর্ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। স্টেশনমাস্টারদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিতে বিলম্ব রেলপথের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এই দুর্ঘটনাগুলো শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। প্রতিটি মৃত্যু একটি পরিবারকে শোকের সমুদ্রে ফেলে দেয়। আহতদের চিকিৎসা এবং দুর্ঘটনার পরবর্তী ব্যয় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। রেলপথে চলাচল বন্ধ হয়ে জনদুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়।
মুন্সিবাজার এবং সরিষাবাড়ীর ঘটনার মতো দুর্ঘটনা আর কতদিন আমাদের দেখতে হবে? নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার? প্রতিটি প্রাণ অমূল্য। সময় এসেছে রেলপথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার ও বাস্তবায়নের। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে না। নিরাপদ রেলপথ নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য। এখনই সময় প্রতিকারের।
আমরা বলতে চাই, দেশের প্রতিটি অরক্ষিত রেলক্রসিং চিহ্নিত করে তা সুরক্ষিত করতে হবে। প্রতিটি রেলক্রসিংয়ে স্বয়ংক্রিয় গেট স্থাপন এবং প্রশিক্ষিত গেটম্যান নিয়োগ করা জরুরি। স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত প্রচার কার্যক্রম চালানো উচিত। রেলক্রসিং পারাপারে ট্রেন আসার সময় সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা জানাতে হবে।
বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫
প্রতিনিয়ত দেশের রেলক্রসিংগুলোতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা এক করুণ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সর্বশেষ ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ের মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের আরও একবার সতর্ক করল। এই ঘটনায় পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে প্রাণহানির এমন শোকাবহ চিত্র বারবার দেখা গেলেও সমস্যার কার্যকর সমাধান আজও অজানা।
ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিং এবং জামালপুরের সরিষাবাড়ী রেলক্রসিংয়ের সাম্প্রতিক দুটি দুর্ঘটনা রেলপথের নিরাপত্তার অভাবকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ে কোনো গেট বা গেটম্যান ছিল না। ট্রেনের হুইসেলও সঠিক সময়ে শোনা যায়নি। দোকানপাট ও গাছপালায় ঢেকে থাকা রেলপথ ট্রেন আসার সংকেতকে কার্যত অদৃশ্য করে দিয়েছে। আর সরিষাবাড়ীতে গেটম্যান থাকলেও দায়িত্বে অবহেলার কারণে গেটের বার ফেলা হয়নি, যার ফলে ট্রাকটি ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে ট্রেন আসা-যাওয়ার বিষয়টি বোঝা যায় না। এটি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং এমন বহু দুর্ঘটনার অনিবার্যতা প্রতিফলিত করে।
রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বহু রেলক্রসিং অনুমোদনহীন। এগুলো স্থানীয় জনগণের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি হলেও রেলের কোনো আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় নেই। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংও এমনই একটি।
এছাড়া গেটম্যান স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে গাফিলতিÑএগুলোর কারণেই দুর্ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। স্টেশনমাস্টারদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিতে বিলম্ব রেলপথের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এই দুর্ঘটনাগুলো শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। প্রতিটি মৃত্যু একটি পরিবারকে শোকের সমুদ্রে ফেলে দেয়। আহতদের চিকিৎসা এবং দুর্ঘটনার পরবর্তী ব্যয় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। রেলপথে চলাচল বন্ধ হয়ে জনদুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়।
মুন্সিবাজার এবং সরিষাবাড়ীর ঘটনার মতো দুর্ঘটনা আর কতদিন আমাদের দেখতে হবে? নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার? প্রতিটি প্রাণ অমূল্য। সময় এসেছে রেলপথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার ও বাস্তবায়নের। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে না। নিরাপদ রেলপথ নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য। এখনই সময় প্রতিকারের।
আমরা বলতে চাই, দেশের প্রতিটি অরক্ষিত রেলক্রসিং চিহ্নিত করে তা সুরক্ষিত করতে হবে। প্রতিটি রেলক্রসিংয়ে স্বয়ংক্রিয় গেট স্থাপন এবং প্রশিক্ষিত গেটম্যান নিয়োগ করা জরুরি। স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত প্রচার কার্যক্রম চালানো উচিত। রেলক্রসিং পারাপারে ট্রেন আসার সময় সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা জানাতে হবে।