alt

মতামত » সম্পাদকীয়

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি : সমাধান কোথায়?

: বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫

প্রতিনিয়ত দেশের রেলক্রসিংগুলোতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা এক করুণ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সর্বশেষ ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ের মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের আরও একবার সতর্ক করল। এই ঘটনায় পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে প্রাণহানির এমন শোকাবহ চিত্র বারবার দেখা গেলেও সমস্যার কার্যকর সমাধান আজও অজানা।

ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিং এবং জামালপুরের সরিষাবাড়ী রেলক্রসিংয়ের সাম্প্রতিক দুটি দুর্ঘটনা রেলপথের নিরাপত্তার অভাবকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ে কোনো গেট বা গেটম্যান ছিল না। ট্রেনের হুইসেলও সঠিক সময়ে শোনা যায়নি। দোকানপাট ও গাছপালায় ঢেকে থাকা রেলপথ ট্রেন আসার সংকেতকে কার্যত অদৃশ্য করে দিয়েছে। আর সরিষাবাড়ীতে গেটম্যান থাকলেও দায়িত্বে অবহেলার কারণে গেটের বার ফেলা হয়নি, যার ফলে ট্রাকটি ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে ট্রেন আসা-যাওয়ার বিষয়টি বোঝা যায় না। এটি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং এমন বহু দুর্ঘটনার অনিবার্যতা প্রতিফলিত করে।

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বহু রেলক্রসিং অনুমোদনহীন। এগুলো স্থানীয় জনগণের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি হলেও রেলের কোনো আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় নেই। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংও এমনই একটি।

এছাড়া গেটম্যান স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে গাফিলতিÑএগুলোর কারণেই দুর্ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। স্টেশনমাস্টারদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিতে বিলম্ব রেলপথের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

এই দুর্ঘটনাগুলো শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। প্রতিটি মৃত্যু একটি পরিবারকে শোকের সমুদ্রে ফেলে দেয়। আহতদের চিকিৎসা এবং দুর্ঘটনার পরবর্তী ব্যয় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। রেলপথে চলাচল বন্ধ হয়ে জনদুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়।

মুন্সিবাজার এবং সরিষাবাড়ীর ঘটনার মতো দুর্ঘটনা আর কতদিন আমাদের দেখতে হবে? নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার? প্রতিটি প্রাণ অমূল্য। সময় এসেছে রেলপথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার ও বাস্তবায়নের। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে না। নিরাপদ রেলপথ নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য। এখনই সময় প্রতিকারের।

আমরা বলতে চাই, দেশের প্রতিটি অরক্ষিত রেলক্রসিং চিহ্নিত করে তা সুরক্ষিত করতে হবে। প্রতিটি রেলক্রসিংয়ে স্বয়ংক্রিয় গেট স্থাপন এবং প্রশিক্ষিত গেটম্যান নিয়োগ করা জরুরি। স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত প্রচার কার্যক্রম চালানো উচিত। রেলক্রসিং পারাপারে ট্রেন আসার সময় সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা জানাতে হবে।

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি : সমাধান কোথায়?

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫

প্রতিনিয়ত দেশের রেলক্রসিংগুলোতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা এক করুণ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সর্বশেষ ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ের মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের আরও একবার সতর্ক করল। এই ঘটনায় পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে প্রাণহানির এমন শোকাবহ চিত্র বারবার দেখা গেলেও সমস্যার কার্যকর সমাধান আজও অজানা।

ফরিদপুরের মুন্সিবাজার রেলক্রসিং এবং জামালপুরের সরিষাবাড়ী রেলক্রসিংয়ের সাম্প্রতিক দুটি দুর্ঘটনা রেলপথের নিরাপত্তার অভাবকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংয়ে কোনো গেট বা গেটম্যান ছিল না। ট্রেনের হুইসেলও সঠিক সময়ে শোনা যায়নি। দোকানপাট ও গাছপালায় ঢেকে থাকা রেলপথ ট্রেন আসার সংকেতকে কার্যত অদৃশ্য করে দিয়েছে। আর সরিষাবাড়ীতে গেটম্যান থাকলেও দায়িত্বে অবহেলার কারণে গেটের বার ফেলা হয়নি, যার ফলে ট্রাকটি ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে ট্রেন আসা-যাওয়ার বিষয়টি বোঝা যায় না। এটি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং এমন বহু দুর্ঘটনার অনিবার্যতা প্রতিফলিত করে।

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বহু রেলক্রসিং অনুমোদনহীন। এগুলো স্থানীয় জনগণের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি হলেও রেলের কোনো আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় নেই। মুন্সিবাজার রেলক্রসিংও এমনই একটি।

এছাড়া গেটম্যান স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে গাফিলতিÑএগুলোর কারণেই দুর্ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। স্টেশনমাস্টারদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিতে বিলম্ব রেলপথের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

এই দুর্ঘটনাগুলো শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। প্রতিটি মৃত্যু একটি পরিবারকে শোকের সমুদ্রে ফেলে দেয়। আহতদের চিকিৎসা এবং দুর্ঘটনার পরবর্তী ব্যয় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। রেলপথে চলাচল বন্ধ হয়ে জনদুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়।

মুন্সিবাজার এবং সরিষাবাড়ীর ঘটনার মতো দুর্ঘটনা আর কতদিন আমাদের দেখতে হবে? নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার? প্রতিটি প্রাণ অমূল্য। সময় এসেছে রেলপথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার ও বাস্তবায়নের। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে না। নিরাপদ রেলপথ নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য। এখনই সময় প্রতিকারের।

আমরা বলতে চাই, দেশের প্রতিটি অরক্ষিত রেলক্রসিং চিহ্নিত করে তা সুরক্ষিত করতে হবে। প্রতিটি রেলক্রসিংয়ে স্বয়ংক্রিয় গেট স্থাপন এবং প্রশিক্ষিত গেটম্যান নিয়োগ করা জরুরি। স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত প্রচার কার্যক্রম চালানো উচিত। রেলক্রসিং পারাপারে ট্রেন আসার সময় সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা জানাতে হবে।

back to top