নাটোরের বাগাতিপাড়ার খাদ্যগুদামে গত পাঁচ বছর ধরে এক মুঠো ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের এ সংকটের কারণ কী?
সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি কেজি ধানের নির্ধারিত মূল্য কৃষকদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বোরো ও আমন মৌসুমে ধানের জন্য সরকার প্রতি কেজি মূল্য নির্ধারণ করেছে যথাক্রমে ৩০ থেকে ৩৩ টাকা; কিন্তু স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ধানের মূল্য গড়ে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা। এমন অবস্থায় কৃষকদের জন্য সরকারের কাছে ধান বিক্রি করাটা আর্থিকভাবে অযৌক্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে হলে কৃষকদের যেসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তা বেশ জটিল। আর্দ্রতা যাচাই, পরিবহন ব্যয়, অনলাইন নিবন্ধন এবং ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের প্রক্রিয়া কৃষকদের জন্য অপ্রত্যাশিত ও কষ্টসাধ্য। ফলে সহজতর প্রক্রিয়া ও বেশি দাম পেয়ে স্থানীয় বাজারে ধান বিক্রি করাই তাদের কাছে বেশি লাভজনক।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বাগাতিপাড়া উপজেলা খাদ্যগুদামের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে কোনো মৌসুমেই ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমও হুমকির মুখে পড়ছে।
বাজারমূল্যে ধান বিক্রি করে কৃষকরা আপাতত কিছুটা লাভবান হলেও দীর্ঘমেয়াদে সরকারি গুদাম খালি থাকলে খাদ্যসংকট তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। গুদামে ধান সরবরাহ না হলে সরকারের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে কিনা বা জাতীয় অর্থনীতিতে এর কী প্রভাব পড়বে সেই প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। ধানের দাম বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা যায় কিনা সেটা সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা জরুরি। কৃষকদের আস্থা অর্জনে এটি একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। পরিবহন ব্যয় ও আর্দ্রতা যাচাইয়ের খরচ কমাতে কৃষকদের জন্য ভর্তুকি বা প্রণোদনার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ধান সরবরাহের জন্য অনলাইন নিবন্ধন ও ব্যাংক লেনদেনের ঝামেলা কমিয়ে সরাসরি লেনদেনের ব্যবস্থা চালু করা উচিত।
ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের এই ব্যর্থতা কেবল একটি উপজেলার সমস্যা নয়, এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বাজার অর্থনীতির বাস্তবতা ও কৃষকদের সমস্যাগুলো বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর সমাধান গ্রহণ করা সময়ের দাবি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত কৃষকদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা প্রণয়ন করা, যা সবার জন্য লাভজনক হবে।
শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
নাটোরের বাগাতিপাড়ার খাদ্যগুদামে গত পাঁচ বছর ধরে এক মুঠো ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের এ সংকটের কারণ কী?
সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি কেজি ধানের নির্ধারিত মূল্য কৃষকদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বোরো ও আমন মৌসুমে ধানের জন্য সরকার প্রতি কেজি মূল্য নির্ধারণ করেছে যথাক্রমে ৩০ থেকে ৩৩ টাকা; কিন্তু স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ধানের মূল্য গড়ে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা। এমন অবস্থায় কৃষকদের জন্য সরকারের কাছে ধান বিক্রি করাটা আর্থিকভাবে অযৌক্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে হলে কৃষকদের যেসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তা বেশ জটিল। আর্দ্রতা যাচাই, পরিবহন ব্যয়, অনলাইন নিবন্ধন এবং ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের প্রক্রিয়া কৃষকদের জন্য অপ্রত্যাশিত ও কষ্টসাধ্য। ফলে সহজতর প্রক্রিয়া ও বেশি দাম পেয়ে স্থানীয় বাজারে ধান বিক্রি করাই তাদের কাছে বেশি লাভজনক।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বাগাতিপাড়া উপজেলা খাদ্যগুদামের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে কোনো মৌসুমেই ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমও হুমকির মুখে পড়ছে।
বাজারমূল্যে ধান বিক্রি করে কৃষকরা আপাতত কিছুটা লাভবান হলেও দীর্ঘমেয়াদে সরকারি গুদাম খালি থাকলে খাদ্যসংকট তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। গুদামে ধান সরবরাহ না হলে সরকারের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে কিনা বা জাতীয় অর্থনীতিতে এর কী প্রভাব পড়বে সেই প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। ধানের দাম বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা যায় কিনা সেটা সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা জরুরি। কৃষকদের আস্থা অর্জনে এটি একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। পরিবহন ব্যয় ও আর্দ্রতা যাচাইয়ের খরচ কমাতে কৃষকদের জন্য ভর্তুকি বা প্রণোদনার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ধান সরবরাহের জন্য অনলাইন নিবন্ধন ও ব্যাংক লেনদেনের ঝামেলা কমিয়ে সরাসরি লেনদেনের ব্যবস্থা চালু করা উচিত।
ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের এই ব্যর্থতা কেবল একটি উপজেলার সমস্যা নয়, এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বাজার অর্থনীতির বাস্তবতা ও কৃষকদের সমস্যাগুলো বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর সমাধান গ্রহণ করা সময়ের দাবি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত কৃষকদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা প্রণয়ন করা, যা সবার জন্য লাভজনক হবে।