alt

সম্পাদকীয়

কুষ্ঠ রোগ : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

: বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

দেশে কুষ্ঠ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত আছে। গত কয়েক দশকে এই রোগের সংক্রমণ হ্রাস পেয়েছে। তবে ২০২৪ সালে নতুন করে ৩,৫১৯ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক।

কুষ্ঠ রোগের অন্যতম বড় বাধা হলো এই রোগ নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার। একবিংশ শতাব্দীতেও অনেকের মধ্যে এই ভুল ধারণা আছে যে, এটি পাপ কার্যের ফল। ফলে কুষ্ঠ রোগীরা সামাজিক বর্জন এবং বৈষম্যের শিকার হন। রোগীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং অনেক সময় প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিতে পিছপা হন। এ পরিস্থিতি রোগ নিরাময়ে বড় অন্তরায়।

কুষ্ঠ রোগ নিরাময়ে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মহাখালী, নীলফামারী এবং সিলেটে তিনটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে, যেখানে কুষ্ঠ রোগীদের জন্য ১১০টি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে নীলফামারীতে ডেনিশ বাংলাদেশ লেপ্রোসি মিশন পরিচালিত ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল কার্যক্রম চালাচ্ছে।

তবে, এই সংস্থান যথেষ্ট নয়। জনবল সংকট এবং রোগ শনাক্তকরণের সীমাবদ্ধতা কুষ্ঠ নির্মূলের পথে বড় অন্তরায়। ২০২৪ সালে উত্তরবঙ্গের সাতটিসহ মোট ১২টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ প্রাদুর্ভাব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এসব এলাকায় বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।

জাতীয় কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ রোগী এবং এ রোগে প্রতিবন্ধিতাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এটি অর্জনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসার সুযোগ বাড়াতে হবে। বিনামূল্যে ওষুধ, বিশেষ জুতা এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ বাড়াতে হবে।

সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে কুষ্ঠরোগ নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করতে হবে। উত্তরবঙ্গসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে।

কুষ্ঠ রোগ নির্মূল একটি দীর্ঘমেয়াদি লড়াই। এটি শুধু একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা নয়, বরং একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৩০ সালের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করতে চাই। তবে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ, সচেতনতা এবং আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একতাবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি কুষ্ঠমুক্ত সমাজ গড়তে সক্ষম হব।

চাল-সয়াবিনের দামে অস্থিরতা, সবজিতে স্বস্তি

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

কড়াই বিলের গাছ কাটা প্রকৃতির প্রতি অবহেলা

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তবতা ও সম্ভাবনার দ্বন্দ্ব

অস্থির চালের বাজারে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা

রমজানের নামে নিগ্রহ : কারা এই ‘নৈতিকতার ঠিকাদার’?

সেতু নির্মাণে গাফিলতি : জনদুর্ভোগের শেষ কোথায়?

ধর্ষণ, মব ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা : শুধু যেন কথার কথা না হয়

নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

গণরোষের নামে নৃশংসতা : কোথায় সমাধান?

গাছের জীবন রক্ষায় এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশ্যে ধূমপান, মবের সংস্কৃতি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বয়ান

চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

লামায় শ্রমিক অপহরণ : প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা

রেলওয়ের তেল চুরি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা

মহাসড়কে নিরাপত্তাহীনতা ও পুলিশের দায়িত্বে শৈথিল্য

দেওয়ানগঞ্জ ডাম্পিং স্টেশন প্রকল্প : দায়িত্বহীনতার প্রতিচ্ছবি

রেলপথে নিরাপত্তাহীনতা : চুরি ও অব্যবস্থাপনার দুষ্টচক্র

সবজি সংরক্ষণে হিমাগার : কৃষকদের বাঁচানোর জরুরি পদক্ষেপ

অমর একুশে

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

আইনশৃঙ্খলার অবনতি : নাগরিক নিরাপত্তা কোথায়?

বাগাতিপাড়ার বিদ্যালয়গুলোর শৌচাগার সংকট দূর করুন

হাসপাতালগুলোতে জনবল সংকট দূর করুন

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

নতুন পাঠ্যবই বিতরণে ধীরগতি : শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে

সরকারি জমি রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

সার বিপণনে অনিয়মের অভিযোগ, ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতার অভিশাপ : পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও দুর্ভোগ

সেতুর জন্য আর কত অপেক্ষা

শবে বরাত: আত্মশুদ্ধির এক মহিমান্বিত রাত

অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই সংকট : ব্যর্থতার দায় কার?

মাদারীপুর পৌরসভায় ডাম্পিং স্টেশন কবে হবে

বায়ুদূষণ : আর উপেক্ষা করা যায় না

tab

সম্পাদকীয়

কুষ্ঠ রোগ : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

দেশে কুষ্ঠ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত আছে। গত কয়েক দশকে এই রোগের সংক্রমণ হ্রাস পেয়েছে। তবে ২০২৪ সালে নতুন করে ৩,৫১৯ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক।

কুষ্ঠ রোগের অন্যতম বড় বাধা হলো এই রোগ নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার। একবিংশ শতাব্দীতেও অনেকের মধ্যে এই ভুল ধারণা আছে যে, এটি পাপ কার্যের ফল। ফলে কুষ্ঠ রোগীরা সামাজিক বর্জন এবং বৈষম্যের শিকার হন। রোগীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং অনেক সময় প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিতে পিছপা হন। এ পরিস্থিতি রোগ নিরাময়ে বড় অন্তরায়।

কুষ্ঠ রোগ নিরাময়ে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মহাখালী, নীলফামারী এবং সিলেটে তিনটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে, যেখানে কুষ্ঠ রোগীদের জন্য ১১০টি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে নীলফামারীতে ডেনিশ বাংলাদেশ লেপ্রোসি মিশন পরিচালিত ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল কার্যক্রম চালাচ্ছে।

তবে, এই সংস্থান যথেষ্ট নয়। জনবল সংকট এবং রোগ শনাক্তকরণের সীমাবদ্ধতা কুষ্ঠ নির্মূলের পথে বড় অন্তরায়। ২০২৪ সালে উত্তরবঙ্গের সাতটিসহ মোট ১২টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ প্রাদুর্ভাব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এসব এলাকায় বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।

জাতীয় কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ রোগী এবং এ রোগে প্রতিবন্ধিতাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এটি অর্জনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসার সুযোগ বাড়াতে হবে। বিনামূল্যে ওষুধ, বিশেষ জুতা এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ বাড়াতে হবে।

সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে কুষ্ঠরোগ নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করতে হবে। উত্তরবঙ্গসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে।

কুষ্ঠ রোগ নির্মূল একটি দীর্ঘমেয়াদি লড়াই। এটি শুধু একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা নয়, বরং একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৩০ সালের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করতে চাই। তবে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ, সচেতনতা এবং আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একতাবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি কুষ্ঠমুক্ত সমাজ গড়তে সক্ষম হব।

back to top