alt

সম্পাদকীয়

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

নারীদের প্রতি সহিংসতা আমাদের সমাজের একটি কঠিন বাস্তবতা। এই সহিংসতার বিভিন্ন রূপের মধ্যে ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ, যা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও সামাজিকভাবেও একজন মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করে তার পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ বলার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই শব্দটি শুনতে খারাপ লাগে এবং আইনেও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।

তার এই বক্তব্য সমাজের বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক এটিকে ধর্ষকের পক্ষ নেয়ার শামিল বলে অভিযোগ করেছেন। অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরাও মনে করেন, ধর্ষণকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করলে অপরাধের গুরুত্ব কমে যায় এবং বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা মনে করি, সমস্যার মুখোমুখি হতে হলে প্রথমে তার সঠিক পরিচয় দিতে হবে। ধর্ষণ একটি নির্দিষ্ট অপরাধ, যার আইনি সংজ্ঞা ও শাস্তির বিধান রয়েছে। এটিকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করা মানে অপরাধের গুরুত্বকে হালকা করে দেয়া। নারী নির্যাতনের বিস্তৃত ক্ষেত্রে গালাগাল, শারীরিক নিপীড়ন, অর্থনৈতিক বঞ্চনাÑএমনকি মানসিক অত্যাচারও পড়ে। কিন্তু ধর্ষণ তার মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট এবং গুরুতর অপরাধ। এটির নাম পরিবর্তন করা হলে সমস্যার মূল থেকে দূরে সরে যেতে হবে। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে হবে। অপরাধের নাম স্পষ্টভাবে উচ্চারণ না করলে সমাজে তার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি হবে কীভাবে? শুনতে খারাপ লাগে বলে কি আমরা বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব?

ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যে নারীর সম্মান রক্ষার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তবে এই পন্থা সমাধান নয়, বরং সমস্যাকে আরও জটিল করে। ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি যখন তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে দ্বিধা করেন, সমাজ যখন তাকে দোষারোপ করে বা নীরবতা চাপিয়ে দেয়, তখন এই ধরনের বক্তব্য সেই নীরবতাকে আরও উৎসাহিত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা সাহসী ও স্পষ্ট অবস্থান প্রত্যাশা করি। ধর্ষণকে ধর্ষণ বলে স্বীকার করা এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়াই তাদের প্রধান দায়িত্ব।

একই সঙ্গে সুখবর হলো, গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘হেল্প’ অ্যাপের উদ্বোধন হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। নারীরা এখন তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা চাইতে পারবেন। তবে শুধু প্রযুক্তি নয়, সমাজের মানসিকতা বদলাতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি দুমকি হাসপাতাল

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক উদ্যোগ

আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি থামবে না

এসএসসি পরীক্ষার ফল : বাস্তবতা মেনে, ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলতে হবে

বন্যা : কেন নেই টেকসই সমাধান?

জলাবদ্ধ নগরজীবন

ভূমিধসের হুমকি ও প্রস্তুতি

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

tab

সম্পাদকীয়

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

নারীদের প্রতি সহিংসতা আমাদের সমাজের একটি কঠিন বাস্তবতা। এই সহিংসতার বিভিন্ন রূপের মধ্যে ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ, যা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও সামাজিকভাবেও একজন মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করে তার পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ বলার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই শব্দটি শুনতে খারাপ লাগে এবং আইনেও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।

তার এই বক্তব্য সমাজের বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক এটিকে ধর্ষকের পক্ষ নেয়ার শামিল বলে অভিযোগ করেছেন। অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরাও মনে করেন, ধর্ষণকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করলে অপরাধের গুরুত্ব কমে যায় এবং বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা মনে করি, সমস্যার মুখোমুখি হতে হলে প্রথমে তার সঠিক পরিচয় দিতে হবে। ধর্ষণ একটি নির্দিষ্ট অপরাধ, যার আইনি সংজ্ঞা ও শাস্তির বিধান রয়েছে। এটিকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করা মানে অপরাধের গুরুত্বকে হালকা করে দেয়া। নারী নির্যাতনের বিস্তৃত ক্ষেত্রে গালাগাল, শারীরিক নিপীড়ন, অর্থনৈতিক বঞ্চনাÑএমনকি মানসিক অত্যাচারও পড়ে। কিন্তু ধর্ষণ তার মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট এবং গুরুতর অপরাধ। এটির নাম পরিবর্তন করা হলে সমস্যার মূল থেকে দূরে সরে যেতে হবে। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে হবে। অপরাধের নাম স্পষ্টভাবে উচ্চারণ না করলে সমাজে তার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি হবে কীভাবে? শুনতে খারাপ লাগে বলে কি আমরা বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব?

ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যে নারীর সম্মান রক্ষার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তবে এই পন্থা সমাধান নয়, বরং সমস্যাকে আরও জটিল করে। ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি যখন তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে দ্বিধা করেন, সমাজ যখন তাকে দোষারোপ করে বা নীরবতা চাপিয়ে দেয়, তখন এই ধরনের বক্তব্য সেই নীরবতাকে আরও উৎসাহিত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা সাহসী ও স্পষ্ট অবস্থান প্রত্যাশা করি। ধর্ষণকে ধর্ষণ বলে স্বীকার করা এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়াই তাদের প্রধান দায়িত্ব।

একই সঙ্গে সুখবর হলো, গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘হেল্প’ অ্যাপের উদ্বোধন হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। নারীরা এখন তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা চাইতে পারবেন। তবে শুধু প্রযুক্তি নয়, সমাজের মানসিকতা বদলাতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

back to top