alt

সম্পাদকীয়

সুন্দরবনে আবার অগ্নিকাণ্ড

: সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

সুন্দরবনে আবার আগুন লাগল। বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের রাতভর চেষ্টায় কলমতেজী টহল ফাঁড়ির টেপার বিল এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, গুলিশাখালী ও তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে আগুনের উপস্থিতি এই সংকটের গভীরতা আরও প্রকট করে তুলেছে। এই ঘটনা আমাদের সামনে বড় প্রশ্ন তুলেছেÑসুন্দরবনকে রক্ষা করার জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত?

এই অগ্নিকা- নিয়ন্ত্রণে বন বিভাগ ও স্থানীয়দের প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, পানির উৎসের দূরত্ব এবং প্রতিকূল ভূপ্রকৃতি আগুন নেভানোর কাজকে জটিল করে তুলেছে। ভোলা নদী থেকে আগুনের স্থান পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরত্ব, ফায়ার সার্ভিসের পানি পৌঁছাতে না পারা এবং বনের গভীরে পাইপলাইন স্থাপনের চ্যালেঞ্জÑএসবই প্রমাণ করে যে আমাদের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এখনো পর্যাপ্ত নয়। বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপলাইন দিয়ে রাত ৯টা থেকে পানি ছিটানো শুরু হলেও, এই প্রক্রিয়া শুরু হতে সময় লেগেছে। ফায়ারলাইন কাটা এবং স্থানীয়দের কোদাল-বালতি নিয়ে আগুন নেভানোর প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে বীরত্বপূর্ণ, কিন্তু এটি কার্যকর সমাধান নয়।

আগুনের কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ২৩ বছরে সুন্দরবনে ২৬টি অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে, এবং তদন্তে প্রায়ই জেলে-মৌয়ালদের অসাবধানতাকে দায়ী করা হয়। কিন্তু স্থানীয় বনজীবীদের দাবি, মাছ ধরার সুবিধার জন্য কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগাতে পারে। আমরা বলতে চাই, আগুনের সূত্রপাত যদি কারও অসাবধানতা বা স্বার্থপরতার ফল হয়, তবে এর জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সুন্দরবনের এই সংকট শুধু আগুন নেভানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের একটি ইঙ্গিত। গত বছর আমুরবুনিয়া এলাকায় আগুনে ৫ একর বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবারের ক্ষয়ক্ষতি কতটা হবে, তা তদন্ত প্রতিবেদনের পরই জানা যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি প্রতিবার আগুন লাগার পর তদন্ত আর প্রতিবেদনের অপেক্ষায় থাকব, নাকি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেব?

সুন্দরবন রক্ষায় এখন সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। বনের গভীরে পানির উৎস স্থাপন, আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের ব্যবহার, ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো এবং স্থানীয়দের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরি। একই সঙ্গে, বনের ওপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়ের জীবিকার বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যাতে তারা প্রকৃতির ক্ষতি না করে।

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

বালু সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা জরুরি

হিমাগার সংকট : কৃষকের দুর্ভোগ আর কতদিন?

স্বাধীনতা দিবস : একাত্তরের স্বপ্ন পুনর্জাগরণের প্রত্যয়

আজ সেই কালরাত্রি

হাওরের বুকে সড়ক : উন্নয়ন না ধ্বংস?

চাল-সয়াবিনের দামে অস্থিরতা, সবজিতে স্বস্তি

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

কড়াই বিলের গাছ কাটা প্রকৃতির প্রতি অবহেলা

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তবতা ও সম্ভাবনার দ্বন্দ্ব

অস্থির চালের বাজারে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা

রমজানের নামে নিগ্রহ : কারা এই ‘নৈতিকতার ঠিকাদার’?

সেতু নির্মাণে গাফিলতি : জনদুর্ভোগের শেষ কোথায়?

ধর্ষণ, মব ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা : শুধু যেন কথার কথা না হয়

নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

গণরোষের নামে নৃশংসতা : কোথায় সমাধান?

গাছের জীবন রক্ষায় এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশ্যে ধূমপান, মবের সংস্কৃতি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বয়ান

চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

tab

সম্পাদকীয়

সুন্দরবনে আবার অগ্নিকাণ্ড

সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

সুন্দরবনে আবার আগুন লাগল। বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের রাতভর চেষ্টায় কলমতেজী টহল ফাঁড়ির টেপার বিল এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, গুলিশাখালী ও তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে আগুনের উপস্থিতি এই সংকটের গভীরতা আরও প্রকট করে তুলেছে। এই ঘটনা আমাদের সামনে বড় প্রশ্ন তুলেছেÑসুন্দরবনকে রক্ষা করার জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত?

এই অগ্নিকা- নিয়ন্ত্রণে বন বিভাগ ও স্থানীয়দের প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, পানির উৎসের দূরত্ব এবং প্রতিকূল ভূপ্রকৃতি আগুন নেভানোর কাজকে জটিল করে তুলেছে। ভোলা নদী থেকে আগুনের স্থান পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরত্ব, ফায়ার সার্ভিসের পানি পৌঁছাতে না পারা এবং বনের গভীরে পাইপলাইন স্থাপনের চ্যালেঞ্জÑএসবই প্রমাণ করে যে আমাদের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এখনো পর্যাপ্ত নয়। বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপলাইন দিয়ে রাত ৯টা থেকে পানি ছিটানো শুরু হলেও, এই প্রক্রিয়া শুরু হতে সময় লেগেছে। ফায়ারলাইন কাটা এবং স্থানীয়দের কোদাল-বালতি নিয়ে আগুন নেভানোর প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে বীরত্বপূর্ণ, কিন্তু এটি কার্যকর সমাধান নয়।

আগুনের কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ২৩ বছরে সুন্দরবনে ২৬টি অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে, এবং তদন্তে প্রায়ই জেলে-মৌয়ালদের অসাবধানতাকে দায়ী করা হয়। কিন্তু স্থানীয় বনজীবীদের দাবি, মাছ ধরার সুবিধার জন্য কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগাতে পারে। আমরা বলতে চাই, আগুনের সূত্রপাত যদি কারও অসাবধানতা বা স্বার্থপরতার ফল হয়, তবে এর জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সুন্দরবনের এই সংকট শুধু আগুন নেভানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের একটি ইঙ্গিত। গত বছর আমুরবুনিয়া এলাকায় আগুনে ৫ একর বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবারের ক্ষয়ক্ষতি কতটা হবে, তা তদন্ত প্রতিবেদনের পরই জানা যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি প্রতিবার আগুন লাগার পর তদন্ত আর প্রতিবেদনের অপেক্ষায় থাকব, নাকি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেব?

সুন্দরবন রক্ষায় এখন সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। বনের গভীরে পানির উৎস স্থাপন, আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের ব্যবহার, ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো এবং স্থানীয়দের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরি। একই সঙ্গে, বনের ওপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়ের জীবিকার বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যাতে তারা প্রকৃতির ক্ষতি না করে।

back to top