alt

সম্পাদকীয়

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

: রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

ঝালকাঠিতে সমবায় সমিতির নামে প্রতারণার ঘটনা ক্রমশ উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে এসব সমিতি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা সমবায় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে এখন একের পর এক সমিতি গা-ঢাকা দিচ্ছে। ফলে হাজার হাজার গ্রাহক সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি শুধু আর্থিক ক্ষতির গল্প নয়, বরং সামাজিক বিশ্বাস ও নিরাপত্তার ভিত্তি নড়ে যাওয়ার এক করুণ চিত্র। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার ডুমুরিয়া বাজারের শিকড় সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি ২৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। একইভাবে সারথী, স্বদেশ, রূপসী বাংলাসহ আরও কয়েকটি সমিতি অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ৪৯১টি সমবায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশই আইন মানছে না। তারা ডিপিএস, স্থায়ী আমানত এবং দৈনিক-মাসিক সঞ্চয়ের নামে টাকা সংগ্রহ করছে, কিন্তু আমানত ফেরতের কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এরই মধ্যে ১৫টি সমিতি উধাও হয়ে গেছে, এবং তাদের অফিসে ঝুলছে তালা।

এই প্রতারণার দায় কার? জেলা সমবায় কর্মকর্তারা বলছেন, এসব কার্যক্রমে তাদের পরামর্শ নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, নিবন্ধন দেয়ার পর এসব সমিতির কার্যক্রমের ওপর নজরদারি কেন ছিল না? সমবায় আইন মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব কি তাদের নয়? গ্রাহকদের শেষ সম্বল হাতিয়ে নেয়ার আগে কেন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি? এই নীরবতা ও উদাসীনতা প্রতারকদের আরও উৎসাহিত করেছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি। প্রথমত, সমবায় সমিতিগুলোর কার্যক্রমের ওপর নিয়মিত তদারকি ও অডিট বাধ্যতামূলক করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যেসব সমিতি প্রতারণার সঙ্গে জড়িত, তাদের কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ঝিনাইদহের সমবায় কর্মকর্তারা যেমন ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ সমিতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথা বলেছেন, ঝালকাঠিতেও তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয়ত, গ্রাহকদের সচেতন করতে হবে, যাতে তারা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে প্রতারণার শিকার না হন।

সমবায় সমিতি গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের আর্থিক কল্যাণ। কিন্তু ঝালকাঠির ঘটনা প্রমাণ করে, এটি এখন অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই অরাজকতা বন্ধে কঠোর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। নইলে সাধারণ মানুষের আস্থা ও সঞ্চয় শুধু লুটপাটের শিকারই হবে না, সমাজে অস্থিরতাও বাড়বে। সময় এসেছে দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার।

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

tab

সম্পাদকীয়

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

ঝালকাঠিতে সমবায় সমিতির নামে প্রতারণার ঘটনা ক্রমশ উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে এসব সমিতি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা সমবায় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে এখন একের পর এক সমিতি গা-ঢাকা দিচ্ছে। ফলে হাজার হাজার গ্রাহক সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি শুধু আর্থিক ক্ষতির গল্প নয়, বরং সামাজিক বিশ্বাস ও নিরাপত্তার ভিত্তি নড়ে যাওয়ার এক করুণ চিত্র। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার ডুমুরিয়া বাজারের শিকড় সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি ২৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। একইভাবে সারথী, স্বদেশ, রূপসী বাংলাসহ আরও কয়েকটি সমিতি অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ৪৯১টি সমবায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশই আইন মানছে না। তারা ডিপিএস, স্থায়ী আমানত এবং দৈনিক-মাসিক সঞ্চয়ের নামে টাকা সংগ্রহ করছে, কিন্তু আমানত ফেরতের কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এরই মধ্যে ১৫টি সমিতি উধাও হয়ে গেছে, এবং তাদের অফিসে ঝুলছে তালা।

এই প্রতারণার দায় কার? জেলা সমবায় কর্মকর্তারা বলছেন, এসব কার্যক্রমে তাদের পরামর্শ নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, নিবন্ধন দেয়ার পর এসব সমিতির কার্যক্রমের ওপর নজরদারি কেন ছিল না? সমবায় আইন মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব কি তাদের নয়? গ্রাহকদের শেষ সম্বল হাতিয়ে নেয়ার আগে কেন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি? এই নীরবতা ও উদাসীনতা প্রতারকদের আরও উৎসাহিত করেছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি। প্রথমত, সমবায় সমিতিগুলোর কার্যক্রমের ওপর নিয়মিত তদারকি ও অডিট বাধ্যতামূলক করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যেসব সমিতি প্রতারণার সঙ্গে জড়িত, তাদের কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ঝিনাইদহের সমবায় কর্মকর্তারা যেমন ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ সমিতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথা বলেছেন, ঝালকাঠিতেও তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয়ত, গ্রাহকদের সচেতন করতে হবে, যাতে তারা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে প্রতারণার শিকার না হন।

সমবায় সমিতি গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের আর্থিক কল্যাণ। কিন্তু ঝালকাঠির ঘটনা প্রমাণ করে, এটি এখন অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই অরাজকতা বন্ধে কঠোর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। নইলে সাধারণ মানুষের আস্থা ও সঞ্চয় শুধু লুটপাটের শিকারই হবে না, সমাজে অস্থিরতাও বাড়বে। সময় এসেছে দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার।

back to top