নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলি ও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য সমাজে এক গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যেÑকোন যুক্তিতে এই মামলা করা হলো, কোন আইনি ও প্রাসঙ্গিক ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। এসব প্রশ্নের কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর মেলেনি। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ যা বলছেন তা বাকওয়াজ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন, “নুসরাত ফারিয়ার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় তিনি নিরপরাধ কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর সেই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
এ বক্তব্য কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন উঠেছে। আমরা বলতে চাই, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী ভাবার এই প্রবণতা বিপজ্জনক। কারণ, এই মানসিকতা যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে তো যে কাউকে শুধু ‘তদন্ত চলছে’Ñএই অজুহাতে আটক রাখা যাবে।
সরকারের মধ্যেই অনেকে এ গ্রেপ্তারে প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ খোলাখুলি সমালোচনা করছেন। একজন উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি ‘বিব্রত’। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে ঢালাও মামলা ও গ্রেপ্তারের এই অদ্ভুত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে কারা? আর কেন?
পাঁচ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে আশা তৈরি হয়েছিল, বাস্তব চিত্র যেন একেবারেই উল্টো। বরং মনে হচ্ছে, মামলার বন্যা বইছেÑসাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, আইনজীবী, এমনকি সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধেও। একেকটি মামলায় একশ থেকে দেড়শ জনের মতো আসামি। কোনও কোনও মামলায় সেই সংখ্যা আরও বেশী।
খেয়াল-খুশি মতো মামলা করা, ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তার করা, জামিন না দেওয়া- কী চলছে এসব! একে কী আইনের শাসন বলে! পাঁচ আগস্টের পর দেশে পরিবর্তনটা কী হলো? আমরা তো সেরকম কোনও পরিবর্তন দেখছি না। দেশ যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলছে।
আইন উপদেষ্টা আগে বলেছেন, “কেউ মামলা করতে চাইলে বাধা দেওয়া যায় না।”
প্রশ্ন হচ্ছে, আইনের শাসন কি তাহলে খেয়াল-খুশির বিষয় হয়ে গেল? সাধারণ মানুষ কি সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে তা নেওয়া হবে? সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি মামলা হয়ও তাহলে কি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা গ্রেপ্তারও হবেন?
মামলা, গ্রেপ্তার এবং জামিনের প্রশ্নে যদি নূন্যতম নিয়ম মানা না হয় তাহলে সেটা হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়। আজ দেখা যাচ্ছে, একই অভিযোগে একজন জামিন পাচ্ছেন, অন্যজন পাচ্ছেন না। কাউকে মামলা দিয়েই তুলে আনা হচ্ছে। এ কেমন বিচারব্যবস্থা?
এই প্রহসনমূলক মামলা ও গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। ঢালাও মামলা, নির্বিচার গ্রেপ্তার আর জামিন না দেওয়ার এই প্রবণতা না থামলে ভবিষ্যতে কেউই এই প্রবণতা থেকে রেহাই পাবেন না।
দেশের বিচার ব্যবস্থায় ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা না গেলে, পাঁচ আগস্টের পরিবর্তনের অর্থ দাঁড়াবে কেবল এক তারিখ বদলের গল্পÑব্যবস্থা বদলের নয়।
বুধবার, ২১ মে ২০২৫
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলি ও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য সমাজে এক গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যেÑকোন যুক্তিতে এই মামলা করা হলো, কোন আইনি ও প্রাসঙ্গিক ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। এসব প্রশ্নের কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর মেলেনি। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ যা বলছেন তা বাকওয়াজ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন, “নুসরাত ফারিয়ার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় তিনি নিরপরাধ কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর সেই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
এ বক্তব্য কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন উঠেছে। আমরা বলতে চাই, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী ভাবার এই প্রবণতা বিপজ্জনক। কারণ, এই মানসিকতা যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে তো যে কাউকে শুধু ‘তদন্ত চলছে’Ñএই অজুহাতে আটক রাখা যাবে।
সরকারের মধ্যেই অনেকে এ গ্রেপ্তারে প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ খোলাখুলি সমালোচনা করছেন। একজন উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি ‘বিব্রত’। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে ঢালাও মামলা ও গ্রেপ্তারের এই অদ্ভুত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে কারা? আর কেন?
পাঁচ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে আশা তৈরি হয়েছিল, বাস্তব চিত্র যেন একেবারেই উল্টো। বরং মনে হচ্ছে, মামলার বন্যা বইছেÑসাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, আইনজীবী, এমনকি সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধেও। একেকটি মামলায় একশ থেকে দেড়শ জনের মতো আসামি। কোনও কোনও মামলায় সেই সংখ্যা আরও বেশী।
খেয়াল-খুশি মতো মামলা করা, ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তার করা, জামিন না দেওয়া- কী চলছে এসব! একে কী আইনের শাসন বলে! পাঁচ আগস্টের পর দেশে পরিবর্তনটা কী হলো? আমরা তো সেরকম কোনও পরিবর্তন দেখছি না। দেশ যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলছে।
আইন উপদেষ্টা আগে বলেছেন, “কেউ মামলা করতে চাইলে বাধা দেওয়া যায় না।”
প্রশ্ন হচ্ছে, আইনের শাসন কি তাহলে খেয়াল-খুশির বিষয় হয়ে গেল? সাধারণ মানুষ কি সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে তা নেওয়া হবে? সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি মামলা হয়ও তাহলে কি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা গ্রেপ্তারও হবেন?
মামলা, গ্রেপ্তার এবং জামিনের প্রশ্নে যদি নূন্যতম নিয়ম মানা না হয় তাহলে সেটা হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়। আজ দেখা যাচ্ছে, একই অভিযোগে একজন জামিন পাচ্ছেন, অন্যজন পাচ্ছেন না। কাউকে মামলা দিয়েই তুলে আনা হচ্ছে। এ কেমন বিচারব্যবস্থা?
এই প্রহসনমূলক মামলা ও গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। ঢালাও মামলা, নির্বিচার গ্রেপ্তার আর জামিন না দেওয়ার এই প্রবণতা না থামলে ভবিষ্যতে কেউই এই প্রবণতা থেকে রেহাই পাবেন না।
দেশের বিচার ব্যবস্থায় ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা না গেলে, পাঁচ আগস্টের পরিবর্তনের অর্থ দাঁড়াবে কেবল এক তারিখ বদলের গল্পÑব্যবস্থা বদলের নয়।