ফেনী জেলায় এবারের বন্যা শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার বহিঃপ্রকাশও বটে। মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে ১৩৭টি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। এখনো অনেক পরিবার ঘরছাড়া।
জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৪৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, অবকাঠামোÑসবকিছুতেই এ ক্ষতির ছাপ স্পষ্ট। ধান, সবজি, আদা, হলুদসহ হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে কোটি টাকার মাছ। মারা গেছে পোলট্রি ও গবাদিপশু।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসনের কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করছেন। তবে এই তৎপরতা সংকটের তুলনায় যথেষ্ট নয়। যেসব বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে, সেগুলোর মেরামতের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এই অবহেলা ভবিষ্যতের জন্য আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।
এবারের দুর্যোগ থেকে শিক্ষা না নিলে শুধু ক্ষতির পরিমাণই বাড়বে। প্রতি বছর বন্যা হবে, ক্ষয়ক্ষতি হবে, ত্রাণ দেয়া হবেÑএই চক্র চলতে থাকলে জনগণের দুর্ভোগ কোনোদিন কমবে না। টেকসই বাঁধ নির্মাণ, নদী শাসন, জলাধার সংরক্ষণ ও বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে।
বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব দ্রুত প্রস্তুত করে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে হাতে হাতে, নয়তো অনেকেই আবারও দারিদ্র্যের ফাঁদে আটকে যাবেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ পুরোপুরি সম্ভব নয়। তবে প্রস্তুতির ঘাটতি প্রতিবার এই দুর্যোগকে মানুষের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত করে। তাই এখনই সময় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার। নীতিনির্ধারকদের আন্তরিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ছাড়া এই বাস্তবতা বদলানো কঠিন। ফেনীর মানুষ আরেকটি বর্ষায় নতুন করে ভাসুকÑএটা কেউ চায় না।
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
ফেনী জেলায় এবারের বন্যা শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার বহিঃপ্রকাশও বটে। মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে ১৩৭টি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। এখনো অনেক পরিবার ঘরছাড়া।
জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৪৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, অবকাঠামোÑসবকিছুতেই এ ক্ষতির ছাপ স্পষ্ট। ধান, সবজি, আদা, হলুদসহ হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে কোটি টাকার মাছ। মারা গেছে পোলট্রি ও গবাদিপশু।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসনের কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করছেন। তবে এই তৎপরতা সংকটের তুলনায় যথেষ্ট নয়। যেসব বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে, সেগুলোর মেরামতের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এই অবহেলা ভবিষ্যতের জন্য আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।
এবারের দুর্যোগ থেকে শিক্ষা না নিলে শুধু ক্ষতির পরিমাণই বাড়বে। প্রতি বছর বন্যা হবে, ক্ষয়ক্ষতি হবে, ত্রাণ দেয়া হবেÑএই চক্র চলতে থাকলে জনগণের দুর্ভোগ কোনোদিন কমবে না। টেকসই বাঁধ নির্মাণ, নদী শাসন, জলাধার সংরক্ষণ ও বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে।
বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব দ্রুত প্রস্তুত করে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে হাতে হাতে, নয়তো অনেকেই আবারও দারিদ্র্যের ফাঁদে আটকে যাবেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ পুরোপুরি সম্ভব নয়। তবে প্রস্তুতির ঘাটতি প্রতিবার এই দুর্যোগকে মানুষের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত করে। তাই এখনই সময় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার। নীতিনির্ধারকদের আন্তরিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ছাড়া এই বাস্তবতা বদলানো কঠিন। ফেনীর মানুষ আরেকটি বর্ষায় নতুন করে ভাসুকÑএটা কেউ চায় না।