কুষ্টিয়ায় ২১৩টি ইটভাটার মধ্যে মাত্র ১৭টি বৈধ। এই তথ্য শুধু উদ্বেগজনক নয়, পরিবেশ নীতিমালা ও প্রশাসনিক দুর্বলতার একটি কঠিন বাস্তবতাও প্রকাশ করে। নয়ম-কানুন উপেক্ষা করে জেলায় অবৈধভাবে ইটভাটা গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া বহুদিনের। সেখানে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া দুই শতাধিক ভাটা চালু রয়েছে। এসব ভাটা প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে নির্বিঘ্নে কাঠ পোড়ানো ও মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
একেকটি ভাটা স্থাপনে তিন থেকে চার একর কৃষিজমি নষ্ট হয়। এভাবে পুরো জেলায় হাজার হাজার একর উর্বর মাটি ইটভাটার কাঁচামালে পরিণত হচ্ছে। কৃষকরা বলেছেন, ভাটার ধোঁয়া, ছাই এবং কাঠ পোড়ানোর দূষণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, গাছপালা উজাড় হয়ে যাচ্ছে। নদী ও খাল থেকে পলি মাটি কেটে নেওয়ায় পানি ধারণক্ষমতা কমে বন্যার ঝুঁকিও বাড়ে।
দেশের অনেক ইটভাটা অবৈধ। এসব ভাটায় ৯৫ শতাংশ কাঠ পোড়ানো হয়। কাঠ ধ্বংস হওয়ার অর্থ হচ্ছে, দেশের বনসম্পদ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, মাটির উর্বরতা কমছে এবং বায়ুদূষণ মারাত্মক মাত্রায় পৌঁছাচ্ছে। ইটভাটার বিকল্প হিসেবে ব্লক ইট এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও পরিবেশবান্ধব উপায় হলেও আমাদের দেশে তার ব্যবহারের হার নগণ্য।
প্রশাসনিক দুর্বলতা, তদবির, রিট মামলা ও প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারণে অবৈধ ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারছে না। আইন প্রয়োগ দুর্বল হলে পরিবেশ বা জনস্বাস্থ্য কোনোটাই রক্ষা করা যায় না।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে যে, অভিযান শুরু হয়েছে। এটি অবশ্যই ইতিবাচক। তবে কুষ্টিয়ার মতো জেলার ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন অভিযান যথেষ্ট নয়। দরকার সমন্বিত পরিকল্পনা, নিয়মিত মনিটরিং। অবৈধ ভাটা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃষিজমি রক্ষায় কার্যকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
অবৈধ ইটভাটার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা জরুরি। ব্লক ইটের ব্যবহারে বড় ধরনের প্রণোদনা দেওয়া যায় কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে। না হলে অবৈধ ইটভাটার ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় দ্রুতই দেশের অন্য অঞ্চলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়বে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
কুষ্টিয়ায় ২১৩টি ইটভাটার মধ্যে মাত্র ১৭টি বৈধ। এই তথ্য শুধু উদ্বেগজনক নয়, পরিবেশ নীতিমালা ও প্রশাসনিক দুর্বলতার একটি কঠিন বাস্তবতাও প্রকাশ করে। নয়ম-কানুন উপেক্ষা করে জেলায় অবৈধভাবে ইটভাটা গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া বহুদিনের। সেখানে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া দুই শতাধিক ভাটা চালু রয়েছে। এসব ভাটা প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে নির্বিঘ্নে কাঠ পোড়ানো ও মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
একেকটি ভাটা স্থাপনে তিন থেকে চার একর কৃষিজমি নষ্ট হয়। এভাবে পুরো জেলায় হাজার হাজার একর উর্বর মাটি ইটভাটার কাঁচামালে পরিণত হচ্ছে। কৃষকরা বলেছেন, ভাটার ধোঁয়া, ছাই এবং কাঠ পোড়ানোর দূষণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, গাছপালা উজাড় হয়ে যাচ্ছে। নদী ও খাল থেকে পলি মাটি কেটে নেওয়ায় পানি ধারণক্ষমতা কমে বন্যার ঝুঁকিও বাড়ে।
দেশের অনেক ইটভাটা অবৈধ। এসব ভাটায় ৯৫ শতাংশ কাঠ পোড়ানো হয়। কাঠ ধ্বংস হওয়ার অর্থ হচ্ছে, দেশের বনসম্পদ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, মাটির উর্বরতা কমছে এবং বায়ুদূষণ মারাত্মক মাত্রায় পৌঁছাচ্ছে। ইটভাটার বিকল্প হিসেবে ব্লক ইট এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও পরিবেশবান্ধব উপায় হলেও আমাদের দেশে তার ব্যবহারের হার নগণ্য।
প্রশাসনিক দুর্বলতা, তদবির, রিট মামলা ও প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারণে অবৈধ ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারছে না। আইন প্রয়োগ দুর্বল হলে পরিবেশ বা জনস্বাস্থ্য কোনোটাই রক্ষা করা যায় না।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে যে, অভিযান শুরু হয়েছে। এটি অবশ্যই ইতিবাচক। তবে কুষ্টিয়ার মতো জেলার ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন অভিযান যথেষ্ট নয়। দরকার সমন্বিত পরিকল্পনা, নিয়মিত মনিটরিং। অবৈধ ভাটা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃষিজমি রক্ষায় কার্যকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
অবৈধ ইটভাটার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা জরুরি। ব্লক ইটের ব্যবহারে বড় ধরনের প্রণোদনা দেওয়া যায় কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে। না হলে অবৈধ ইটভাটার ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় দ্রুতই দেশের অন্য অঞ্চলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়বে।