শরীয়তপুরে রবি শস্য আবাদের ভরা মৌসুমে সারের সরবরাহ অর্ধেকেরও কম। পেঁয়াজ বীজসহ কৃষি উপকরণের দামও বেড়েছে। এতেকরে সেখানকার কৃষকেরা সংকটে পড়েছেন। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এই সংকট শুধু কৃষকের ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, এটি সরাসরি দেশের খাদ্য উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থার জন্যও উদ্বেগজনক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে প্রয়োজনের তুলনায় ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি-সব ধরনের সারের বরাদ্দই উল্লেখযোগ্যভাবে কম। বিশেষ করে এমওপি সারের ঘাটতি ৭৫ শতাংশ, যা রবি ফসলের জন্য ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়। এমন সংকটের সুযোগ নিয়ে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের একটি অংশ সরকার নির্ধারিত দামের বাইরে গিয়ে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ প্রতি শতাংশ জমিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পেঁয়াজ বীজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। মৌসুমের শুরুতে বীজের দাম ছিল তুলনামূলক কম। এখন এর দাম কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের পক্ষে আবাদ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেক কৃষক ধার করে কিংবা সঞ্চয় ভেঙে চাষ করছেন।
উদ্বেগের বিষয় হলো, উৎপাদন খরচ বাড়লেও কৃষক ন্যায্য মূল্য পাবেন কি না, সে নিশ্চয়তা নেই। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, পেঁয়াজ বাজারে উঠলে দাম পড়ে যায়। লাভ তো দূরের কথা, অনেক সময় কৃষকের উৎপাদন খরচও ওঠে না। এতে কৃষকের চাষাবাদে আগ্রহ কমে যায়, যা ভবিষ্যতে ফসল উৎপাদন হ্রাসের কারণ হতে পারে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সারের ঘাটতি পূরণে জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের ওপর কঠোর নজরদারি চালিয়ে সরকার নির্ধারিত দামে সার বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে। কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে বাজার ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে হবে, যাতে কৃষক উৎপাদনের ন্যূনতম লাভ পান।