বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের দেশান্তরকাঠী খালের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সেই দুই বাঁশের সাঁকো যেন চার যুগ ধরে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির করুণ সাক্ষী। গড়িয়াবুনিয়া, ফুলতলা, দেশান্তরকাঠী, রানীপুর ও পুটিয়াখালী-এই পাঁচ গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা এই সাঁকো দুটি।
নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সাঁকো পার হন। বর্ষাকালে সাঁকোর নিচ দিয়ে নৌকায় পার হতে হয়। শীতে আবার খালের পানি কমে গেলে কচুরিপানার জঞ্জাল আর পিচ্ছিল বাঁশের ওপর হাঁটা হয়ে ওঠে আরও বিপজ্জনক।
এই খাল কেবল যাতায়াতের পথ নয়, পাঁচ গ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকা-েরও কেন্দ্র। কৃষকের ধান, গম, সরিষা, পাট নৌকায় করে বাজারে নিতে হয়। সেতু না থাকায় সময়, শ্রম ও খরচ বাড়ে। উন্নয়নের মূল কথা যদি হয় মানুষের জীবন সহজ করা, তবে এই অঞ্চলে সেই উন্নয়ন আজও পৌঁছায়নি।
সেখানে একটি পাকা সেতুর দাবি নতুন নয়। স্থানীয় মানুষ চার দশকের বেশি সময় ধরে এই দাবি করছেন। ‘নকশা পাঠানো হয়েছে’, ‘চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে’, ‘বরাদ্দ এলে কাজ হবে’ এমন আশ্বাস মেলে কেবল। আশ্বাসের তালিকা দীর্ঘ হয়েছে, কিন্তু বাস্তবতা বদলায়নি।
উপকূলীয় এই জনপদের মানুষ কেবল নিরাপদ যাতায়াতের সুবিধা চান। এইটুকু সুবিধা করে দিতে আর কত সময় লাগবে সেই প্রশ্ন আমরা করতে চাই। কেবল আশ্বাস না দিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। দেশান্তরকাঠী খালের ওপর দ্রুত একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে এমনটাই আমরা দেখতে চাই।