বহুল আলোচিত রানা প্লাজা ধসের আট বছর পূর্ণ হলো গত শনিবার। ২০১৩ সালের এই দিনে আট তলা ভবন ধসে নিহত হন ১ হাজার ১৩৮ জন। আহত হন আরও প্রায় ২ হাজার। আট বছর পার হলেও এ ঘটনায় দায়ীদের এখনো বিচার হয়নি।
রানা প্লাজা ধসের বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়ার বিষয়টি হতাশাজনক। দুর্ঘটনার পর নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তবে শ্রমিকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিতে অগ্রগতি খুব একটা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গার্মেন্টস কারখানা খুলে এত শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের কারও এখনও শাস্তি হয়নি। রহস্যজনক কারণে তাজরিন, স্পেকট্রামসহ আলোচিত অন্যান্য কারখানার অগ্নিকান্ড কিংবা ভবন ধসের ঘটনাতেও আজ পর্যন্ত কোনো মালিক শাস্তি পাননি। এটা মনে রাখা উচিত, এসব ঘটনা কোন দুর্ঘটনা নয়, অমার্জনীয় অপরাধ। এ জন্য দোষীদের ফৌজদারি অপরাধের যেমন বিচার হতে হবে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এ ধরনের বড় দুর্ঘটনায় যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তা অনেক সময় স্বল্পকালে বোঝা যায় না। দীর্ঘকালীন প্রেক্ষাপটে সে ধরনের প্রতিক্রিয়াগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। যদি পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের সমস্যার সমাধান না হয় তা আরও প্রকট হতে থাকে। যে শ্রমিকরা আহত হয়েছিলেন, তারা যদি উপযুক্ত চিকিৎসা পেতেন এবং সুস্থ হয়ে আগের মতো কর্মক্ষম হতে পারতেন, তাহলে পরিবারে এবং সমাজে তাদের যে আগের মূল্য ছিল, তা তারা ফিরে পেতেন।
এটা দুঃখজনক যে, দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকের জন্য যে উদ্যোগ নেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল, তার গতি কমে গেছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা ছিল। তারপরও এর আইনি ভিত্তি তৈরি হয়নি। রানা প্লাজা ধসের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ওই ধসে নিহত শ্রমিকদের অসহায় পরিবারের কথা ভুলে গেলে চলবে না। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া যাতে যথাযথভাবে হয় সেদিকে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে হাইকোর্টের যে নির্দেশনা ছিল তা বাস্তবায়নে তৎপর হতে হবে।
শ্রম ইস্যুতে নিরাপত্তা ও শাসন ব্যবস্থায় উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে আর এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনতে হবে। পাশাপাশি কারখানাগুলোয় শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। ক্ষতিপূরণ আইন স্বচ্ছভাবে তৈরি করা প্রয়োজন। কারখানায় সুন্দর কর্মপরিবেশ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি তৈরি করার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন, মালিক ও সরকারপক্ষ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১
বহুল আলোচিত রানা প্লাজা ধসের আট বছর পূর্ণ হলো গত শনিবার। ২০১৩ সালের এই দিনে আট তলা ভবন ধসে নিহত হন ১ হাজার ১৩৮ জন। আহত হন আরও প্রায় ২ হাজার। আট বছর পার হলেও এ ঘটনায় দায়ীদের এখনো বিচার হয়নি।
রানা প্লাজা ধসের বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়ার বিষয়টি হতাশাজনক। দুর্ঘটনার পর নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তবে শ্রমিকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিতে অগ্রগতি খুব একটা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গার্মেন্টস কারখানা খুলে এত শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের কারও এখনও শাস্তি হয়নি। রহস্যজনক কারণে তাজরিন, স্পেকট্রামসহ আলোচিত অন্যান্য কারখানার অগ্নিকান্ড কিংবা ভবন ধসের ঘটনাতেও আজ পর্যন্ত কোনো মালিক শাস্তি পাননি। এটা মনে রাখা উচিত, এসব ঘটনা কোন দুর্ঘটনা নয়, অমার্জনীয় অপরাধ। এ জন্য দোষীদের ফৌজদারি অপরাধের যেমন বিচার হতে হবে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এ ধরনের বড় দুর্ঘটনায় যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তা অনেক সময় স্বল্পকালে বোঝা যায় না। দীর্ঘকালীন প্রেক্ষাপটে সে ধরনের প্রতিক্রিয়াগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। যদি পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের সমস্যার সমাধান না হয় তা আরও প্রকট হতে থাকে। যে শ্রমিকরা আহত হয়েছিলেন, তারা যদি উপযুক্ত চিকিৎসা পেতেন এবং সুস্থ হয়ে আগের মতো কর্মক্ষম হতে পারতেন, তাহলে পরিবারে এবং সমাজে তাদের যে আগের মূল্য ছিল, তা তারা ফিরে পেতেন।
এটা দুঃখজনক যে, দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকের জন্য যে উদ্যোগ নেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল, তার গতি কমে গেছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা ছিল। তারপরও এর আইনি ভিত্তি তৈরি হয়নি। রানা প্লাজা ধসের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ওই ধসে নিহত শ্রমিকদের অসহায় পরিবারের কথা ভুলে গেলে চলবে না। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া যাতে যথাযথভাবে হয় সেদিকে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে হাইকোর্টের যে নির্দেশনা ছিল তা বাস্তবায়নে তৎপর হতে হবে।
শ্রম ইস্যুতে নিরাপত্তা ও শাসন ব্যবস্থায় উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে আর এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনতে হবে। পাশাপাশি কারখানাগুলোয় শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। ক্ষতিপূরণ আইন স্বচ্ছভাবে তৈরি করা প্রয়োজন। কারখানায় সুন্দর কর্মপরিবেশ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি তৈরি করার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন, মালিক ও সরকারপক্ষ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।