রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) গত ২০ এপ্রিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক প্রকাশ করেছে। তাদের সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতির চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। ২০২১ সালের সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫২তম। গত বছর অবস্থান ছিল ১৫১তম। আর ২০১৯ সাল অবস্থান ছিল ১৫০তম। উক্ত সূচক অনুযায়ী, আফগানিস্তান (১২২), মায়ানমার (১৪০) এবং পাকিস্তানের (১৪৫) অবস্থান বাংলাদেশের চেয়ে ঢের ভালো।
৩ মে ছিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। সংশ্লিষ্ট নানান প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে যে মূল্যায়ন করে তা থেকে জানা যায়, গণমাধ্যমের ঝুঁকি বিশ্বজুড়েই বেড়ে চলেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সুখকর নয়। মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে দেশের অবস্থান যদি পাকিস্তান-আফগানিস্তান বা মায়ানমারের চেয়েও নিচে হয় তখন উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না। দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। অথচ মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে দেশ দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। গণমাধ্যমের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে মুক্তবুদ্ধির চর্চা বাড়ানো জরুরি। আরএসএফ বলেছে, গত বছর বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংকট চলাকালে সাংবাদিকদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসামরিক সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এ সময় মহামারী ও সমাজে তার প্রভাব নিয়ে লেখার জন্য সাংবাদিকদের পাশাপাশি অনেক ব্লগার ও কার্টুনিস্ট গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর ব্যবহার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিবর্তনমূলক এ আইনের কারণে সেলফ সেন্সরশিপের প্রবণতা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতিবাজ অপরাধী চক্রের রোষানলেও পড়তে হয় সাংবাদিকদের। প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য অনেককেই নির্যাতিত হতে হয়। সাংবাদিক হত্যার ঘটনাও ঘটে। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের সিংহভাগ ঘটনার বিচার হয় না।
আমরা মনে করি, মুক্ত সাংবাদিকতা ও টেকসই উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। উন্নয়ন কার্যক্রমের পথে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় সাংবাদিকরা সেসব তথ্য প্রকাশ করে সরকারের কাজে সহায়তাই করেন। গুজব ও মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর ভ্যাকসিন হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম। জাতিসংঘ যথার্থই বলেছে যে, সাংবাদিকতা হলো গণসম্পদ।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বলেছেন, ‘আমি সব সরকারকে তাদের ক্ষমতানুযায়ী একটি মুক্ত, স্বাধীন এবং বহুমুখী প্রচার মাধ্যমকে সমর্থন করার জন্য সবকিছু করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তার আহ্বানে বিশ্বের নেতারা সাড়া দেবেন সেটা আমাদের প্রত্যাশা।
বাংলাদেশের সংবিধানে বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুক্ত গণমাধ্যমের পক্ষে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সব প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে দেশের গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা ও তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এজন্য স্বাধীন মতপ্রকাশের পথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা অবিলম্বে দূর করা জরুরি।
সোমবার, ০৩ মে ২০২১
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) গত ২০ এপ্রিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক প্রকাশ করেছে। তাদের সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতির চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। ২০২১ সালের সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫২তম। গত বছর অবস্থান ছিল ১৫১তম। আর ২০১৯ সাল অবস্থান ছিল ১৫০তম। উক্ত সূচক অনুযায়ী, আফগানিস্তান (১২২), মায়ানমার (১৪০) এবং পাকিস্তানের (১৪৫) অবস্থান বাংলাদেশের চেয়ে ঢের ভালো।
৩ মে ছিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। সংশ্লিষ্ট নানান প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে যে মূল্যায়ন করে তা থেকে জানা যায়, গণমাধ্যমের ঝুঁকি বিশ্বজুড়েই বেড়ে চলেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সুখকর নয়। মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে দেশের অবস্থান যদি পাকিস্তান-আফগানিস্তান বা মায়ানমারের চেয়েও নিচে হয় তখন উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না। দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। অথচ মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে দেশ দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। গণমাধ্যমের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে মুক্তবুদ্ধির চর্চা বাড়ানো জরুরি। আরএসএফ বলেছে, গত বছর বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংকট চলাকালে সাংবাদিকদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসামরিক সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এ সময় মহামারী ও সমাজে তার প্রভাব নিয়ে লেখার জন্য সাংবাদিকদের পাশাপাশি অনেক ব্লগার ও কার্টুনিস্ট গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর ব্যবহার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিবর্তনমূলক এ আইনের কারণে সেলফ সেন্সরশিপের প্রবণতা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতিবাজ অপরাধী চক্রের রোষানলেও পড়তে হয় সাংবাদিকদের। প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য অনেককেই নির্যাতিত হতে হয়। সাংবাদিক হত্যার ঘটনাও ঘটে। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের সিংহভাগ ঘটনার বিচার হয় না।
আমরা মনে করি, মুক্ত সাংবাদিকতা ও টেকসই উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। উন্নয়ন কার্যক্রমের পথে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় সাংবাদিকরা সেসব তথ্য প্রকাশ করে সরকারের কাজে সহায়তাই করেন। গুজব ও মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর ভ্যাকসিন হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম। জাতিসংঘ যথার্থই বলেছে যে, সাংবাদিকতা হলো গণসম্পদ।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বলেছেন, ‘আমি সব সরকারকে তাদের ক্ষমতানুযায়ী একটি মুক্ত, স্বাধীন এবং বহুমুখী প্রচার মাধ্যমকে সমর্থন করার জন্য সবকিছু করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তার আহ্বানে বিশ্বের নেতারা সাড়া দেবেন সেটা আমাদের প্রত্যাশা।
বাংলাদেশের সংবিধানে বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুক্ত গণমাধ্যমের পক্ষে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সব প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে দেশের গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা ও তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এজন্য স্বাধীন মতপ্রকাশের পথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা অবিলম্বে দূর করা জরুরি।