বহুমুখী ক্ষতির প্রভাব ফেলেছে ইটভাটা। একদিকে পরিবেশ দূষণ করছে, অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে ফসলি জমি। গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রায়ই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত মঙ্গলবার সংবাদ-এ প্রকাশিত সচিত্র প্রতিবেদন থেকে জানা গেল, সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নির্বিচারে পোড়ানো হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত কাঠ ও টায়ার। কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ, স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে।
সাতক্ষীরায় ইটভাটা রয়েছে ১৪০টির মতো। যেগুলোর অধিকাংশই নদীর দু’ধারে ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে। এসব ভাটায় পরিবেশ আইন বা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন মানা হচ্ছে না।
সংবাদ-এ প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, নওগাঁর বদলগাছীতে দু-তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে মাটি ব্যবসায়ী ও বালুমহালের ইজারদাররা। ফলে জমির উর্বরতা শক্তি হারিয়ে অনাবাদি হয়ে পড়ছে। কমতে শুরু করেছে ফসলের উৎপাদনও।
মাটি ব্যবসায়ীরা কোন বিধিনিষেধ মানছে না। অভিযোগ আছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাটি কেটে অবৈধভাবে নির্মিত ইটভাটায় বিক্রি করছে। তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় জোর করে জমির মালিকদের বাধ্য করছে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করাতে। কেউ বাধা দিলে উল্টো ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন।
শুধু সাতক্ষীরা বা নওগাঁতে নয়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে সারা দেশেই অনেক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। লোকালয় ও ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা এসব ভাটায় কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ বা ক্ষতিকর টায়ার। পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে। আর এর সবকিছুই হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর নাকের ডগায়। এগুলো নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।
উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য নানা অবকাঠামো নির্মাণে ইটের প্রয়োজন। এজন্য ইটভাটারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটা স্থাপনে বা ইট তৈরিতে নিয়ম-নীতি মানতে হবে। যাতে করে পরিবেশ দূষিত এবং ফসলি জমির ক্ষতি না হয়। দেশে পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন রয়েছে। ইটভাটা স্থাপন ও ইট পোড়ানোর সুনির্দিষ্ট বিধি-বিধান রয়েছে। তাছাড়া ইটভাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআইসহ কয়েকটি দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ নিয়ম-কানুনের অধিকাংশই মানা হয় না। ইটভাটার মালিকরা যেমন মানেন না, আবার পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও নিয়ম নীতি প্রয়োগ করতে দেখা যায় না।
অবৈধ ইটভাটাগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। ভাটায় বেআইনিভাবে কাঠ পোড়ানো এবং ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধে দ্রুত অভিযান চালাতে হবে। আশা করি, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন। বিপন্ন পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসবেন। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে, সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে।
বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২২
বহুমুখী ক্ষতির প্রভাব ফেলেছে ইটভাটা। একদিকে পরিবেশ দূষণ করছে, অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে ফসলি জমি। গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রায়ই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত মঙ্গলবার সংবাদ-এ প্রকাশিত সচিত্র প্রতিবেদন থেকে জানা গেল, সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নির্বিচারে পোড়ানো হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত কাঠ ও টায়ার। কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ, স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে।
সাতক্ষীরায় ইটভাটা রয়েছে ১৪০টির মতো। যেগুলোর অধিকাংশই নদীর দু’ধারে ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে। এসব ভাটায় পরিবেশ আইন বা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন মানা হচ্ছে না।
সংবাদ-এ প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, নওগাঁর বদলগাছীতে দু-তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে মাটি ব্যবসায়ী ও বালুমহালের ইজারদাররা। ফলে জমির উর্বরতা শক্তি হারিয়ে অনাবাদি হয়ে পড়ছে। কমতে শুরু করেছে ফসলের উৎপাদনও।
মাটি ব্যবসায়ীরা কোন বিধিনিষেধ মানছে না। অভিযোগ আছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাটি কেটে অবৈধভাবে নির্মিত ইটভাটায় বিক্রি করছে। তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় জোর করে জমির মালিকদের বাধ্য করছে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করাতে। কেউ বাধা দিলে উল্টো ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন।
শুধু সাতক্ষীরা বা নওগাঁতে নয়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে সারা দেশেই অনেক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। লোকালয় ও ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা এসব ভাটায় কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ বা ক্ষতিকর টায়ার। পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে। আর এর সবকিছুই হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর নাকের ডগায়। এগুলো নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।
উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য নানা অবকাঠামো নির্মাণে ইটের প্রয়োজন। এজন্য ইটভাটারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটা স্থাপনে বা ইট তৈরিতে নিয়ম-নীতি মানতে হবে। যাতে করে পরিবেশ দূষিত এবং ফসলি জমির ক্ষতি না হয়। দেশে পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন রয়েছে। ইটভাটা স্থাপন ও ইট পোড়ানোর সুনির্দিষ্ট বিধি-বিধান রয়েছে। তাছাড়া ইটভাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআইসহ কয়েকটি দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ নিয়ম-কানুনের অধিকাংশই মানা হয় না। ইটভাটার মালিকরা যেমন মানেন না, আবার পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও নিয়ম নীতি প্রয়োগ করতে দেখা যায় না।
অবৈধ ইটভাটাগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। ভাটায় বেআইনিভাবে কাঠ পোড়ানো এবং ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধে দ্রুত অভিযান চালাতে হবে। আশা করি, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন। বিপন্ন পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসবেন। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে, সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে।