২০২০ সালের মধ্যে দেশের মোট ভূখন্ডের ১৭ শতাংশকে রক্ষিত বনাঞ্চল করার লক্ষ্য ছিল। জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্যবিষয়ক সনদে (সিবিডি) বাংলাদেশ স্বাক্ষর করে ২০১১ সালে। সনদ অনুযায়ী দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে এ লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার।
নির্ধারিত সময়ের এক বছর পরে এসে জানা গেল, সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ২০২১ সাল পর্যন্ত মাত্র ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ এলাকাকে রক্ষিত বন করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ‘দক্ষিণ এশিয়ার রক্ষিত বনের অবস্থা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্ষিত বন রক্ষার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০-এর মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়।
নির্ধারিত লক্ষ্য আর বাস্তব অর্জনের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধানের কারণ কী- সেটা আমরা জানতে চাই। বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে না, নাকি লক্ষ্য বাস্তবায়নে কোন ঘাটতি আছে? সরকার নিশ্চয়ই বুঝেশুনে লক্ষ্য নির্ধারণ করে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের ওপর অর্পণ করা হয়। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা অর্জনে প্রায়ই ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। এটা শুধু রক্ষিত বনাঞ্চলের ক্ষেত্রেই নয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরকার একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করছে- কিন্তু সেটা অর্জিত হচ্ছে না।
লক্ষ্য নির্ধারণ ও অর্জনের মধ্যে যদি যোজন যোজন দূরত্ব থাকে তাহলে দেশ টেকসইভাবে উন্নত হবে কীভাবে? পরিবেশকে বাদ দিয়ে নিশ্চয় উন্নতিকে টেকসই করা যায় না। গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ভুটান ৪৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ বনাঞ্চল রক্ষিত করতে পেরেছে। যা সিবিডি সনদের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় তিনগুণ। তারা সফল হলে বাংলাদেশ কেন পারছে না?
দেশে একের পর এক বনকে রক্ষিত হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সুরক্ষা দেয়ার কাজ এখনো প্রকল্পভিত্তিকই রয়ে গেছে। এমনকি বন বিভাগ ও সরকারের অন্য সংস্থাগুলো কোনো কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেনি।
রক্ষিত বন ব্যবস্থাপনায় একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার আইনি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রধান বন সংরক্ষক। এসব বন রক্ষায় নিয়মিত তহবিল সৃষ্টি করার কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। সিবিডি স্বাক্ষর অনুযায়ী রক্ষিত বন রক্ষার নির্ধারিত সময়য়ের পরে ‘কাজ শুরু হয়েছে’। তাহলে এটি কবে শেষ হবে তা সহজেই অনুমেয়। তার ওপর ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট ভূখন্ডের ৩০ শতাংশ এলাকাকে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘আইনি কাঠামো তৈরি হয়েছে’, ‘কাজ শুরু হয়েছে’- আমরা এমন কথা আর শুনতে চাই না। দৃশ্যমান কাজ দেখতে চাই। ঢিমেতেতালে কাজ করলে হবে না। নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্য অর্জনের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
শনিবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২২
২০২০ সালের মধ্যে দেশের মোট ভূখন্ডের ১৭ শতাংশকে রক্ষিত বনাঞ্চল করার লক্ষ্য ছিল। জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্যবিষয়ক সনদে (সিবিডি) বাংলাদেশ স্বাক্ষর করে ২০১১ সালে। সনদ অনুযায়ী দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে এ লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার।
নির্ধারিত সময়ের এক বছর পরে এসে জানা গেল, সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ২০২১ সাল পর্যন্ত মাত্র ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ এলাকাকে রক্ষিত বন করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ‘দক্ষিণ এশিয়ার রক্ষিত বনের অবস্থা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্ষিত বন রক্ষার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০-এর মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়।
নির্ধারিত লক্ষ্য আর বাস্তব অর্জনের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধানের কারণ কী- সেটা আমরা জানতে চাই। বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে না, নাকি লক্ষ্য বাস্তবায়নে কোন ঘাটতি আছে? সরকার নিশ্চয়ই বুঝেশুনে লক্ষ্য নির্ধারণ করে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের ওপর অর্পণ করা হয়। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা অর্জনে প্রায়ই ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। এটা শুধু রক্ষিত বনাঞ্চলের ক্ষেত্রেই নয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরকার একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করছে- কিন্তু সেটা অর্জিত হচ্ছে না।
লক্ষ্য নির্ধারণ ও অর্জনের মধ্যে যদি যোজন যোজন দূরত্ব থাকে তাহলে দেশ টেকসইভাবে উন্নত হবে কীভাবে? পরিবেশকে বাদ দিয়ে নিশ্চয় উন্নতিকে টেকসই করা যায় না। গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ভুটান ৪৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ বনাঞ্চল রক্ষিত করতে পেরেছে। যা সিবিডি সনদের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় তিনগুণ। তারা সফল হলে বাংলাদেশ কেন পারছে না?
দেশে একের পর এক বনকে রক্ষিত হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সুরক্ষা দেয়ার কাজ এখনো প্রকল্পভিত্তিকই রয়ে গেছে। এমনকি বন বিভাগ ও সরকারের অন্য সংস্থাগুলো কোনো কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেনি।
রক্ষিত বন ব্যবস্থাপনায় একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার আইনি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রধান বন সংরক্ষক। এসব বন রক্ষায় নিয়মিত তহবিল সৃষ্টি করার কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। সিবিডি স্বাক্ষর অনুযায়ী রক্ষিত বন রক্ষার নির্ধারিত সময়য়ের পরে ‘কাজ শুরু হয়েছে’। তাহলে এটি কবে শেষ হবে তা সহজেই অনুমেয়। তার ওপর ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট ভূখন্ডের ৩০ শতাংশ এলাকাকে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘আইনি কাঠামো তৈরি হয়েছে’, ‘কাজ শুরু হয়েছে’- আমরা এমন কথা আর শুনতে চাই না। দৃশ্যমান কাজ দেখতে চাই। ঢিমেতেতালে কাজ করলে হবে না। নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্য অর্জনের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।