দেশে অনেক দিন পর ভালো একটি নির্বাচন হলো। সংঘাত-সহিংসতার পথ এড়িয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা যে সম্ভব তার উজ্জ্বল উদাহরণ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন। তবে ভালো নির্বাচনের কোন কৃতিত্ব যদি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিতে চায় তবে সেটা ভুল হবে।
কারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা যা করার দরকার তা ইসি নারায়ণগঞ্জে করতে পেরেছে বলে জানা যায় না। ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যকে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সংবাদ সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন জানাতে দেখা গেছে। তার বিরুদ্ধে ইসি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা তখন বলেছেন, ‘এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন আচরণবিধি লঙ্ঘন। তবে একেবারে তাকে নোটিস করে বা শাস্তি দেয়া বা আইনের আওতায় নিতে হবে এমন আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি।’ সিইসির এই কথার অর্থ কী আমরা তা বুঝতে পারিনি।
ইসি তার কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন না করা সত্ত্বেও নাসিক নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কারণ, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীই চেয়েছেন নির্বাচন ভালো হোক। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের অনেক প্রার্থী ভোটারদের ভয় দেখিয়ে, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পেশীশক্তি প্রয়োগ করে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভোটের ফল নিজেদের পক্ষে আনবার চেষ্টা করেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু নাসিক নির্বাচনে আইভি রহমানকে এর কোনটাই করতে দেখা যায়নি। যদিও তিনি মেয়র পদে থেকেই নির্বাচন করেছেন, তার দল রয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতায়। কিন্তু তাকে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে বা দলের আনুকূল্য নিতে দেখা যায়নি। আর এ কারণেই সেখানে সংঘাত-সংঘর্ষহীন সুষ্ঠু একটি নির্বাচন হতে পেরেছে। নাসিক নির্বাচন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, ইসি যদি ঠুঁটো জগন্নাথও হয় কিন্তু ক্ষমতাসীনরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে।
আর নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সেটা জনগণ সানন্দে গ্রহণ করে। তখন কারো কোন ওজর-আপত্তি হালে পানি পায় না। নাসিক নির্বাচনে হেরে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, ইভিএম কারসাজিতে তাকে হারানো হয়েছে। কিন্তু তার অভিযোগ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মনে হয় না।
নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হতে পারে সেই শিক্ষা ইসি চাইলে নারায়ণগঞ্জ থেকে নিতে পারে। কোন নির্বাচন বিতর্কিত হওয়ার পেছনে কী ভুল থাকে সেগুলো চিহ্নিত করে ইসিকে আত্মমূল্যায়ন করতে হবে। আগামীতে এসব ভুলের পুনরাবৃত্তি সম্পর্কে থাকতে হবে সতর্ক। ঠুঁটো জগন্নাথ সেজে বসে না থেকে নির্বাচনে ইসি যেন ভূমিকা রাখতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে ভূমিকা রাখবার মতো যথেষ্ট স্বাধীনতা ইসিকে আইন দিয়েছে।
সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২
দেশে অনেক দিন পর ভালো একটি নির্বাচন হলো। সংঘাত-সহিংসতার পথ এড়িয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা যে সম্ভব তার উজ্জ্বল উদাহরণ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন। তবে ভালো নির্বাচনের কোন কৃতিত্ব যদি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিতে চায় তবে সেটা ভুল হবে।
কারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা যা করার দরকার তা ইসি নারায়ণগঞ্জে করতে পেরেছে বলে জানা যায় না। ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যকে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সংবাদ সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন জানাতে দেখা গেছে। তার বিরুদ্ধে ইসি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা তখন বলেছেন, ‘এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন আচরণবিধি লঙ্ঘন। তবে একেবারে তাকে নোটিস করে বা শাস্তি দেয়া বা আইনের আওতায় নিতে হবে এমন আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি।’ সিইসির এই কথার অর্থ কী আমরা তা বুঝতে পারিনি।
ইসি তার কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন না করা সত্ত্বেও নাসিক নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কারণ, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীই চেয়েছেন নির্বাচন ভালো হোক। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের অনেক প্রার্থী ভোটারদের ভয় দেখিয়ে, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পেশীশক্তি প্রয়োগ করে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভোটের ফল নিজেদের পক্ষে আনবার চেষ্টা করেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু নাসিক নির্বাচনে আইভি রহমানকে এর কোনটাই করতে দেখা যায়নি। যদিও তিনি মেয়র পদে থেকেই নির্বাচন করেছেন, তার দল রয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতায়। কিন্তু তাকে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে বা দলের আনুকূল্য নিতে দেখা যায়নি। আর এ কারণেই সেখানে সংঘাত-সংঘর্ষহীন সুষ্ঠু একটি নির্বাচন হতে পেরেছে। নাসিক নির্বাচন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, ইসি যদি ঠুঁটো জগন্নাথও হয় কিন্তু ক্ষমতাসীনরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে।
আর নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সেটা জনগণ সানন্দে গ্রহণ করে। তখন কারো কোন ওজর-আপত্তি হালে পানি পায় না। নাসিক নির্বাচনে হেরে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, ইভিএম কারসাজিতে তাকে হারানো হয়েছে। কিন্তু তার অভিযোগ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মনে হয় না।
নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হতে পারে সেই শিক্ষা ইসি চাইলে নারায়ণগঞ্জ থেকে নিতে পারে। কোন নির্বাচন বিতর্কিত হওয়ার পেছনে কী ভুল থাকে সেগুলো চিহ্নিত করে ইসিকে আত্মমূল্যায়ন করতে হবে। আগামীতে এসব ভুলের পুনরাবৃত্তি সম্পর্কে থাকতে হবে সতর্ক। ঠুঁটো জগন্নাথ সেজে বসে না থেকে নির্বাচনে ইসি যেন ভূমিকা রাখতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে ভূমিকা রাখবার মতো যথেষ্ট স্বাধীনতা ইসিকে আইন দিয়েছে।