চাওয়া ছিল সামান্যই। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ডাবলিং নিষিদ্ধ করা, গণরুম না রাখা, অভিভাবকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়া, খাবারের মান উন্নত করা ইত্যাদি। দাবিগুলো তুলেছিল সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রীরা। গত বৃহস্পতিবার তারা এ দাবি নিয়ে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কখাও বলেছিল। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে আন্দোলন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যেই পদত্যাগ করতে হয়েছে ওই হলের প্রাধ্যক্ষকে।
শিক্ষার্থীদের সামান্য কিছু চাওয়ার জের ধরে আজকে শাবিপ্রবিতে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলো কেন- আমরা সেটা জানতে চাই। যেসব দাবি তারা তুলেছে সেগুলো পাওয়ার অধিকার কী শিক্ষার্থীদের নেই। নাকি এগুলো পূরণ করার সামর্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ছিল না। কোন দাবি-দাওয়া তোলা হলে সেটা সমাধানের পথ না খুঁজে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয় কেন?
শিক্ষার্থীরা যখন প্রাধ্যক্ষের কাছে দাবিগুলো তুললেন, তিনি আমলে নিলেন না। আসদাচরণ করলেন। পুরো বিষয় যখন উপাচর্য বরাবর পেশ করা হলো, তখন সেখানে ছাত্রলীগ গিয়ে হাজির হলো, হামলা করল। এরপর যখন ছাত্রলীগের হামলার বিচারের দাবি উঠল, উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করা হলো। তখন পুলিশ গিয়ে হাজির হলো, শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছুড়ল, লাঠিচার্জ করল।
সমস্যাকে বড় করে তোলা বা জল ঘোলা করার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে যখনই প্রতিবাদ শুরু করেছে, তখনই উপাচার্য এটা সমাধান করতে পারতেন বলেই আমরা মনে করি। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে জল এতদূর গড়াত না। ছাত্রীদের যেসব দাবি, সেটা পূরণ করা খুব কঠিন কিছু ছিল বলে মনে হয় না। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতায় ছোট একটা ঘটনা বড় আকার ধারণ করেছে। শিক্ষার্থীরা এখনও আন্দোলন করছেন। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে।
সমস্যার আরেক নাম ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীরা যখনই যেখানে কোন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে সেখানেই তারা হাজির হয়। সেখানে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা না করে হামলা চালায়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ইস্যুতে প্রশাসনের চেয়ে ছাত্রলীগের মাথাব্যথাই বেশি! তাদের গুণ্ডামির কারণে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিপদে পড়ে।
শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন নয়; এর আগে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ রয়েছে। তাদের এ মারমুখী আচরণের কারণে সরকারকেও বিভিন্ন সময়ে বিপদে পড়তে হয়। এ ছাত্রলীগ হামলা চালিয়ে কোন কোন সমস্যাকে এমন জায়গায় নিয়ে যায়, যেখান থেকে সমাধানের সহজ পথ বের করা সরকারের পক্ষেও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কোটা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন জটিল হয়েছিল তাদের কারণেই। এখন শাবিপ্রবিতে যেন এর পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।
মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২
চাওয়া ছিল সামান্যই। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ডাবলিং নিষিদ্ধ করা, গণরুম না রাখা, অভিভাবকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়া, খাবারের মান উন্নত করা ইত্যাদি। দাবিগুলো তুলেছিল সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রীরা। গত বৃহস্পতিবার তারা এ দাবি নিয়ে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কখাও বলেছিল। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে আন্দোলন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যেই পদত্যাগ করতে হয়েছে ওই হলের প্রাধ্যক্ষকে।
শিক্ষার্থীদের সামান্য কিছু চাওয়ার জের ধরে আজকে শাবিপ্রবিতে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলো কেন- আমরা সেটা জানতে চাই। যেসব দাবি তারা তুলেছে সেগুলো পাওয়ার অধিকার কী শিক্ষার্থীদের নেই। নাকি এগুলো পূরণ করার সামর্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ছিল না। কোন দাবি-দাওয়া তোলা হলে সেটা সমাধানের পথ না খুঁজে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয় কেন?
শিক্ষার্থীরা যখন প্রাধ্যক্ষের কাছে দাবিগুলো তুললেন, তিনি আমলে নিলেন না। আসদাচরণ করলেন। পুরো বিষয় যখন উপাচর্য বরাবর পেশ করা হলো, তখন সেখানে ছাত্রলীগ গিয়ে হাজির হলো, হামলা করল। এরপর যখন ছাত্রলীগের হামলার বিচারের দাবি উঠল, উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করা হলো। তখন পুলিশ গিয়ে হাজির হলো, শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছুড়ল, লাঠিচার্জ করল।
সমস্যাকে বড় করে তোলা বা জল ঘোলা করার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে যখনই প্রতিবাদ শুরু করেছে, তখনই উপাচার্য এটা সমাধান করতে পারতেন বলেই আমরা মনে করি। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে জল এতদূর গড়াত না। ছাত্রীদের যেসব দাবি, সেটা পূরণ করা খুব কঠিন কিছু ছিল বলে মনে হয় না। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতায় ছোট একটা ঘটনা বড় আকার ধারণ করেছে। শিক্ষার্থীরা এখনও আন্দোলন করছেন। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে।
সমস্যার আরেক নাম ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীরা যখনই যেখানে কোন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে সেখানেই তারা হাজির হয়। সেখানে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা না করে হামলা চালায়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ইস্যুতে প্রশাসনের চেয়ে ছাত্রলীগের মাথাব্যথাই বেশি! তাদের গুণ্ডামির কারণে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিপদে পড়ে।
শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন নয়; এর আগে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ রয়েছে। তাদের এ মারমুখী আচরণের কারণে সরকারকেও বিভিন্ন সময়ে বিপদে পড়তে হয়। এ ছাত্রলীগ হামলা চালিয়ে কোন কোন সমস্যাকে এমন জায়গায় নিয়ে যায়, যেখান থেকে সমাধানের সহজ পথ বের করা সরকারের পক্ষেও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কোটা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন জটিল হয়েছিল তাদের কারণেই। এখন শাবিপ্রবিতে যেন এর পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।