টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে সংরক্ষিত বনের পাশে, ফসলি জমিতে ও বিদ্যালয়ে পাশে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার অন্তত ১২টিতে জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। জ্বালানি কাঠের অধিকাংশই সংগ্রহ করা হচ্ছে আশেপাশের সংরক্ষিত বন থেকে। উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি লিখিতভাবে তালিকা দিয়ে এসব ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এরপরও কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এর বাইরে সেখানকার অধিকাংশ ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
‘ইটভাটা’র এমন চিত্র দেশের অনেক স্থানেই দেখা যায়। এর সবকিছুই হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায়। প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমে দেশের কোন না কোন এলাকার ইটভাটা নিয়ে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু প্রতিকার মেলে না।
প্রতিটি ড্রাম চিমনির ইটভাটায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৪০০ মণ জ্বালানি কাঠ পোড়ানো হয়। সে হিসাবে একটি ইটভাটায় প্রতি মাসে ১২ হাজার মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ লাখ ইট তৈরিতে একেকটি চুল্লি থেকে প্রায় ৩৯৪ টন কার্বন, ১ হাজার ৪৪৪ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ৬ দশমিক ৩ টন মিথেন ও ১০২ টন নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসৃত হয়, যা প্রাণ-প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ইটভাটা স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআইসহ কয়েকটি দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। ছাড়পত্র বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে লোকালয়, বাজার, স্কুল, মসজিদের পাশে স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা। অভিযোগ আছে, জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনেরও। এসব ইটভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাই এসবের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
দেশে পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন থাকা সত্ত্বেও সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ দেখা যায় না। গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে কখনও কখনও অভিযান পরিচলনা করা হয়। জরিমানা করার পর বন্ধও হয় কিছু কিছু ইটভাটা। কিন্তু ভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় আবার সেগুলো চালু করে। প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে ইটভাটা চালুর অভিযোগও আছে। সংবাদের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বরিশালের মেহিন্দিগঞ্জে অনুমোদনহীন ও ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগে একটি ইটভাটা বন্ধ করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। এর কিছুদিন পরই সেটি আবার চালু করে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান। জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনের অভিযোগও রয়েছে।
দেশের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিসি সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে বনভূমি উদ্ধারে নির্দেশনা দেন তিনি। আমরা আশা করি, এই নির্দেশনার পর অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরালো হবে। ভাটায় বেআইনিভাবে কাঠ পোড়ানো এবং ফসলি জমির মাটি কাটা দ্রুত বন্ধ হবে। বিপন্ন পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা পাবে।
শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী ২০২২
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে সংরক্ষিত বনের পাশে, ফসলি জমিতে ও বিদ্যালয়ে পাশে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার অন্তত ১২টিতে জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। জ্বালানি কাঠের অধিকাংশই সংগ্রহ করা হচ্ছে আশেপাশের সংরক্ষিত বন থেকে। উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি লিখিতভাবে তালিকা দিয়ে এসব ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এরপরও কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এর বাইরে সেখানকার অধিকাংশ ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
‘ইটভাটা’র এমন চিত্র দেশের অনেক স্থানেই দেখা যায়। এর সবকিছুই হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায়। প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমে দেশের কোন না কোন এলাকার ইটভাটা নিয়ে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু প্রতিকার মেলে না।
প্রতিটি ড্রাম চিমনির ইটভাটায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৪০০ মণ জ্বালানি কাঠ পোড়ানো হয়। সে হিসাবে একটি ইটভাটায় প্রতি মাসে ১২ হাজার মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ লাখ ইট তৈরিতে একেকটি চুল্লি থেকে প্রায় ৩৯৪ টন কার্বন, ১ হাজার ৪৪৪ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ৬ দশমিক ৩ টন মিথেন ও ১০২ টন নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসৃত হয়, যা প্রাণ-প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ইটভাটা স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআইসহ কয়েকটি দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। ছাড়পত্র বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে লোকালয়, বাজার, স্কুল, মসজিদের পাশে স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা। অভিযোগ আছে, জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনেরও। এসব ইটভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাই এসবের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
দেশে পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন থাকা সত্ত্বেও সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ দেখা যায় না। গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে কখনও কখনও অভিযান পরিচলনা করা হয়। জরিমানা করার পর বন্ধও হয় কিছু কিছু ইটভাটা। কিন্তু ভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় আবার সেগুলো চালু করে। প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে ইটভাটা চালুর অভিযোগও আছে। সংবাদের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বরিশালের মেহিন্দিগঞ্জে অনুমোদনহীন ও ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগে একটি ইটভাটা বন্ধ করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। এর কিছুদিন পরই সেটি আবার চালু করে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান। জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনের অভিযোগও রয়েছে।
দেশের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিসি সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে বনভূমি উদ্ধারে নির্দেশনা দেন তিনি। আমরা আশা করি, এই নির্দেশনার পর অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরালো হবে। ভাটায় বেআইনিভাবে কাঠ পোড়ানো এবং ফসলি জমির মাটি কাটা দ্রুত বন্ধ হবে। বিপন্ন পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা পাবে।