তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই সেখানে নির্মাণকাজ চালিয়ে নিচ্ছিল পুলিশ। নির্মাণকাজ চালানোর পক্ষে তারা ব্যাখ্যাও দিয়েছিল। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দাসহ দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাঠটি রক্ষার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ শেষ পর্যন্ত অবস্থান পরিবর্তন করেছে।
শিশু-কিশোরদের শারীরিক-মানসিক বিকাশে খেলার মাঠের ভূমিকা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। সমস্যা হচ্ছে, রাজধানীতে খেলার মাঠের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। যেসব মাঠ রয়েছে তাদের অনেকগুলোই আকার-আয়তনে ছোট। সেখানেই শিশু-কিশোরদের একাধিক দল পালাক্রমে বা একসঙ্গে খেলাধুলা করে। অনেক সময় বড়রাও মুক্ত স্থানের পরশ পেতে এসব মাঠে ভাগ বসায়। কোন কারণে মাঠ দখল হলে শিশু-কিশোরদের মতো প্রবীণদেরও ইট-কংক্রিটে বাঁধা পড়তে হয়।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার আয়তন ৩০৫ দশমিক ৪৭ বর্গকিলোমিটার। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় প্রতি এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় দুটি খেলার মাঠ থাকা বাঞ্ছনীয়। এ হিসাবে ঢাকায় মাঠ থাকার কথা ৬১১টি। অথচ এখানে রয়েছে ২৫৬টি। তবে রাজধানীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কথা বিবেচনা করলে আরো বেশি সংখ্যক মাঠের প্রয়োজন পড়বে। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, সাড়ে ১২ হাজার মানুষের জন্য থাকা প্রয়োজন একটি খেলার মাঠ। ঢাকায় কমবেশি রয়েছে ২ কোটি মানুষ। বোধগম্য কারণেই এত বেশি সংখ্যক মানুষের খেলার মাঠের প্রয়োজন মেটানো দুরূহ।
রাজধানীতে মাঠের প্রয়োজন তো মিটছেই না, যাও আছে তারও অনেকগুলো নানান কারণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী গত দুই দশকে রাজধানীর ১২৬টি মাঠ অস্তিত্ব হারিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে- মাঠগুলো রক্ষা করবে কে? সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানই যদি নানানভাবে মাঠ দখল করে নেয় তখন নাগরিকদের হতাশার শেষ থাকে না। মাঠের জন্য নাগরিকদের যৌক্তিক দাবিকে যখন উপেক্ষা করা হয় তখন আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারি না।
এ নগরে মাঠের বিকল্প খুঁজে বের করা ভার। তবে ভবনের বিকল্প রয়েছে। সরকারি যে কোন ভবন করার জন্য চাইলে জায়গা পাওয়া সম্ভব। এমনকি নতুন করে নির্মাণ না করে ভবন ভাড়া নিয়েও সরকার নাগরিকদের প্রয়োজনীয় অনেক সেবা দিতে পারে বা দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে তেঁতুলতলার খেলার মাঠে থানা নির্মাণ না করাই শ্রেয়।
নাগরিকদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সরকারের। খেলার মাঠ রক্ষা করাও সরকারের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব তারা যথাযথভাবে পালন করছে- সেটাই আমরা দেখতে চাই।
বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২
তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই সেখানে নির্মাণকাজ চালিয়ে নিচ্ছিল পুলিশ। নির্মাণকাজ চালানোর পক্ষে তারা ব্যাখ্যাও দিয়েছিল। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দাসহ দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাঠটি রক্ষার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ শেষ পর্যন্ত অবস্থান পরিবর্তন করেছে।
শিশু-কিশোরদের শারীরিক-মানসিক বিকাশে খেলার মাঠের ভূমিকা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। সমস্যা হচ্ছে, রাজধানীতে খেলার মাঠের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। যেসব মাঠ রয়েছে তাদের অনেকগুলোই আকার-আয়তনে ছোট। সেখানেই শিশু-কিশোরদের একাধিক দল পালাক্রমে বা একসঙ্গে খেলাধুলা করে। অনেক সময় বড়রাও মুক্ত স্থানের পরশ পেতে এসব মাঠে ভাগ বসায়। কোন কারণে মাঠ দখল হলে শিশু-কিশোরদের মতো প্রবীণদেরও ইট-কংক্রিটে বাঁধা পড়তে হয়।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার আয়তন ৩০৫ দশমিক ৪৭ বর্গকিলোমিটার। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় প্রতি এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় দুটি খেলার মাঠ থাকা বাঞ্ছনীয়। এ হিসাবে ঢাকায় মাঠ থাকার কথা ৬১১টি। অথচ এখানে রয়েছে ২৫৬টি। তবে রাজধানীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কথা বিবেচনা করলে আরো বেশি সংখ্যক মাঠের প্রয়োজন পড়বে। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, সাড়ে ১২ হাজার মানুষের জন্য থাকা প্রয়োজন একটি খেলার মাঠ। ঢাকায় কমবেশি রয়েছে ২ কোটি মানুষ। বোধগম্য কারণেই এত বেশি সংখ্যক মানুষের খেলার মাঠের প্রয়োজন মেটানো দুরূহ।
রাজধানীতে মাঠের প্রয়োজন তো মিটছেই না, যাও আছে তারও অনেকগুলো নানান কারণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী গত দুই দশকে রাজধানীর ১২৬টি মাঠ অস্তিত্ব হারিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে- মাঠগুলো রক্ষা করবে কে? সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানই যদি নানানভাবে মাঠ দখল করে নেয় তখন নাগরিকদের হতাশার শেষ থাকে না। মাঠের জন্য নাগরিকদের যৌক্তিক দাবিকে যখন উপেক্ষা করা হয় তখন আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারি না।
এ নগরে মাঠের বিকল্প খুঁজে বের করা ভার। তবে ভবনের বিকল্প রয়েছে। সরকারি যে কোন ভবন করার জন্য চাইলে জায়গা পাওয়া সম্ভব। এমনকি নতুন করে নির্মাণ না করে ভবন ভাড়া নিয়েও সরকার নাগরিকদের প্রয়োজনীয় অনেক সেবা দিতে পারে বা দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে তেঁতুলতলার খেলার মাঠে থানা নির্মাণ না করাই শ্রেয়।
নাগরিকদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সরকারের। খেলার মাঠ রক্ষা করাও সরকারের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব তারা যথাযথভাবে পালন করছে- সেটাই আমরা দেখতে চাই।