দেশে গত কয়েক বছর ধরেই বজ্রপাতের পরিমাণ ও এতে হতাহতের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ময়মনসিংহ, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে তিন শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। গত শুক্রবার এসব জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ২ হাজার ৫৯০ জন। বজ্রপাতে গত বছর রেকর্ড সংখ্যক ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে বছরে ৮০ থেকে ১২০ দিন বজ্রপাত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪০টি বজ্রপাত হয়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বজ্রপাত আরও ঘন ঘন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি, এমনকি বায়ুদূষণেও বজ্রপাত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া নদী বা জলাভূমি শুকিয়ে গেলে এবং গাছপালা ধ্বংস হওয়ার কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। এ ধরনের আবহাওয়া বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশে দায়ী।
বজ্রপাতে প্রাণহানি বাড়ায় ২০১৬ সালে সরকার এটিকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে। এরপর বজ্রপাত ঠেকাতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। বজ্রের হাত থেকে বাঁচাতে দরকার উঁচু গাছ। কিন্তু এ ধরনের গাছের সংখ্যা কমছে। নির্দিষ্ট দূরত্বে উঁচু গাছ রাখার মতো সচেতনতা ও পরিবেশবিষয়ক জ্ঞানও লোপ পাচ্ছে দিন দিন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাম ও শহরের আবাসিক এলাকাগুলোতে ৪০ মিটার বা তার কাছাকাছি উচ্চতার গাছ থাকা চাই। এছাড়া বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, জলাশয় কিংবা হাওরে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর তাল, নারকেল, সুপারি বাবালা, হিজল, বটের মতো গাছ লাগাতে হবে। বজ্রপাত প্রতিরোধ করতে সরকার সারা দেশে ১০ লাখ তালগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু কয়েক লাখ তালের আঁটি রোপণ করে রণে ভঙ্গ দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। পরিচর্যা করতে না পারার অজুহাতে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানোর লক্ষ্যে দেশবাসীকে আগাম সতর্কবার্তা দিতে দেশের ৮টি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তাছাড়া হাওর অঞ্চলে ‘লাইটার অ্যারেস্টার’ সংবলিত বজ্রপাত-নিরোধক কংক্রিটের শেল্টার নির্মাণেরও কথা রয়েছে সরকারের।
এর পাশাপাশি বিকল্প পরিকল্পনা থাকতে হবে বলে আমরা মনে করি। মাঠের মাঝখানে খাম্বা বসিয়ে তাতে আর্থিং করলে বজ্রপাতে প্রাণহানি কমবে। সর্বপরি এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বজ্রপাতের সময় মানুষের কী কী করা উচিত, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিতে হবে।
রোববার, ১৯ জুন ২০২২
দেশে গত কয়েক বছর ধরেই বজ্রপাতের পরিমাণ ও এতে হতাহতের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ময়মনসিংহ, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে তিন শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। গত শুক্রবার এসব জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ২ হাজার ৫৯০ জন। বজ্রপাতে গত বছর রেকর্ড সংখ্যক ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে বছরে ৮০ থেকে ১২০ দিন বজ্রপাত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪০টি বজ্রপাত হয়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বজ্রপাত আরও ঘন ঘন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি, এমনকি বায়ুদূষণেও বজ্রপাত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া নদী বা জলাভূমি শুকিয়ে গেলে এবং গাছপালা ধ্বংস হওয়ার কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। এ ধরনের আবহাওয়া বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশে দায়ী।
বজ্রপাতে প্রাণহানি বাড়ায় ২০১৬ সালে সরকার এটিকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে। এরপর বজ্রপাত ঠেকাতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। বজ্রের হাত থেকে বাঁচাতে দরকার উঁচু গাছ। কিন্তু এ ধরনের গাছের সংখ্যা কমছে। নির্দিষ্ট দূরত্বে উঁচু গাছ রাখার মতো সচেতনতা ও পরিবেশবিষয়ক জ্ঞানও লোপ পাচ্ছে দিন দিন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাম ও শহরের আবাসিক এলাকাগুলোতে ৪০ মিটার বা তার কাছাকাছি উচ্চতার গাছ থাকা চাই। এছাড়া বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, জলাশয় কিংবা হাওরে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর তাল, নারকেল, সুপারি বাবালা, হিজল, বটের মতো গাছ লাগাতে হবে। বজ্রপাত প্রতিরোধ করতে সরকার সারা দেশে ১০ লাখ তালগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু কয়েক লাখ তালের আঁটি রোপণ করে রণে ভঙ্গ দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। পরিচর্যা করতে না পারার অজুহাতে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানোর লক্ষ্যে দেশবাসীকে আগাম সতর্কবার্তা দিতে দেশের ৮টি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তাছাড়া হাওর অঞ্চলে ‘লাইটার অ্যারেস্টার’ সংবলিত বজ্রপাত-নিরোধক কংক্রিটের শেল্টার নির্মাণেরও কথা রয়েছে সরকারের।
এর পাশাপাশি বিকল্প পরিকল্পনা থাকতে হবে বলে আমরা মনে করি। মাঠের মাঝখানে খাম্বা বসিয়ে তাতে আর্থিং করলে বজ্রপাতে প্রাণহানি কমবে। সর্বপরি এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বজ্রপাতের সময় মানুষের কী কী করা উচিত, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিতে হবে।