গত কয়েক বছর ধরে কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরের বিভিন্ন এলাকা হয়ে উঠেছে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট। সেখানে প্রতিবছরই বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে। পাশাপাশি প্রায়ই একাধিক পর্যটকের হাওরের পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুও ঘটছে। কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরে বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন গত শুক্রবার।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবারের বর্ষায় হাওরে নতুন পানি আসার পর গত আড়াই মাসে শিশু, পর্যটকসহ ২১ জন মারা গেছেন। ২০২০ ও ২০২১ সালে হাওরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের। সেখানে এ বছর মাত্র আড়াই মাসেই মৃত্যুর সংখ্যা গত দুই বছরের প্রায় সমান। বেশিরভাগ মৃত্যুই ঘটছে পর্যটকদের অসাবধানতা এবং সাঁতার না জানার কারণে।
পর্যটকদের হাওরের রাস্তা বা বেড়িবাঁধগুলোর উচ্চতা এবং গড়ন সম্পর্কে কোন ধারণা থাকে না। এসব রাস্তার দুপাশের সিসি ব্লকের ঢাল অনেকটা খাড়া এবং পিচ্ছিল। ভরা বর্ষায় রাস্তা আর বেড়িবাঁধে গলায় গলায় পানি উঠে যায়। পর্যটকরা না জেনেই রাস্তার পাশে পা বাড়িয়ে পানিতে নামতে গিয়ে তলিয়ে যান। তাছাড়া সাঁতার জানা থাকলেও রয়েছে বিপদ। কারণ অনেক জায়গাতেই রয়েছে প্রবল স্র্রোতের বেগ। গোসল করতে নেমে স্রোতের কারণে বেঁচে ফিরে আসাটা অনিশ্চিত। অনেকে আবার নৌকায় দলবেঁধে ঘুরতে বের হন। আনন্দ-উল্লাস করতে গিয়ে বেসামাল হয়ে নৌকা থেকে পড়ে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটে।
শুধু হাওর নয়; সমুদ্র, পাহাড়ি লেক ও ছড়া এবং নদীর পানিতে ডুবেও অনেক পর্যটকের মৃত্যু হয়। এর মূল কারণ হলো, ওইসব স্থানের বৈশিষ্ট্য না জেনে বা বুঝে সাঁতার কাটতে নামা। অনেকে আবার সাঁতার না জেনেই পানিতে নামেন। এদের বেশিরভাগই তরুণ, তাদের মধ্যে এক ধরনের কৌতূহল ও দুঃসাহসিকতা কাজ করে।
গত এক দশকে দেশি পর্যটকেটর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা ও সেবার মান বাড়েনি। সচরাচর পর্যটকরা যান না এমন স্থান তো বটেই, জনপ্রিয় স্থানগুলোতেও জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায় না।
পর্যটকদের এমন অনাকক্সিক্ষত মৃত্যু কাম্য নয়। পর্যটকদের একটু অসর্কতার কারণে ভ্রমণের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়। করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়। আমরা এর অবসান চাই। পর্যটনের সম্ভাবনার কথা বলা হবে, নানা স্বপ্ন দেখানো হবে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে না-এমনটা হতে পারে না। দেশের পর্যটন স্পটগুলোতে সতর্কীকরণমূলক ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
পাশাপাশি পর্যটকদেরও সচেতন হতে হবে। সাঁতার জানা থাকলেও পানিতে নামার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। জীবন রক্ষাকারীসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে তবেই পানিতে নামতে হবে। মেনে চলতে হবে স্থানীয় প্রশাসন ও গাইডদের নির্দেশনা।
মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২
গত কয়েক বছর ধরে কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরের বিভিন্ন এলাকা হয়ে উঠেছে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট। সেখানে প্রতিবছরই বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে। পাশাপাশি প্রায়ই একাধিক পর্যটকের হাওরের পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুও ঘটছে। কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরে বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন গত শুক্রবার।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবারের বর্ষায় হাওরে নতুন পানি আসার পর গত আড়াই মাসে শিশু, পর্যটকসহ ২১ জন মারা গেছেন। ২০২০ ও ২০২১ সালে হাওরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের। সেখানে এ বছর মাত্র আড়াই মাসেই মৃত্যুর সংখ্যা গত দুই বছরের প্রায় সমান। বেশিরভাগ মৃত্যুই ঘটছে পর্যটকদের অসাবধানতা এবং সাঁতার না জানার কারণে।
পর্যটকদের হাওরের রাস্তা বা বেড়িবাঁধগুলোর উচ্চতা এবং গড়ন সম্পর্কে কোন ধারণা থাকে না। এসব রাস্তার দুপাশের সিসি ব্লকের ঢাল অনেকটা খাড়া এবং পিচ্ছিল। ভরা বর্ষায় রাস্তা আর বেড়িবাঁধে গলায় গলায় পানি উঠে যায়। পর্যটকরা না জেনেই রাস্তার পাশে পা বাড়িয়ে পানিতে নামতে গিয়ে তলিয়ে যান। তাছাড়া সাঁতার জানা থাকলেও রয়েছে বিপদ। কারণ অনেক জায়গাতেই রয়েছে প্রবল স্র্রোতের বেগ। গোসল করতে নেমে স্রোতের কারণে বেঁচে ফিরে আসাটা অনিশ্চিত। অনেকে আবার নৌকায় দলবেঁধে ঘুরতে বের হন। আনন্দ-উল্লাস করতে গিয়ে বেসামাল হয়ে নৌকা থেকে পড়ে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটে।
শুধু হাওর নয়; সমুদ্র, পাহাড়ি লেক ও ছড়া এবং নদীর পানিতে ডুবেও অনেক পর্যটকের মৃত্যু হয়। এর মূল কারণ হলো, ওইসব স্থানের বৈশিষ্ট্য না জেনে বা বুঝে সাঁতার কাটতে নামা। অনেকে আবার সাঁতার না জেনেই পানিতে নামেন। এদের বেশিরভাগই তরুণ, তাদের মধ্যে এক ধরনের কৌতূহল ও দুঃসাহসিকতা কাজ করে।
গত এক দশকে দেশি পর্যটকেটর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা ও সেবার মান বাড়েনি। সচরাচর পর্যটকরা যান না এমন স্থান তো বটেই, জনপ্রিয় স্থানগুলোতেও জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায় না।
পর্যটকদের এমন অনাকক্সিক্ষত মৃত্যু কাম্য নয়। পর্যটকদের একটু অসর্কতার কারণে ভ্রমণের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়। করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়। আমরা এর অবসান চাই। পর্যটনের সম্ভাবনার কথা বলা হবে, নানা স্বপ্ন দেখানো হবে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে না-এমনটা হতে পারে না। দেশের পর্যটন স্পটগুলোতে সতর্কীকরণমূলক ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
পাশাপাশি পর্যটকদেরও সচেতন হতে হবে। সাঁতার জানা থাকলেও পানিতে নামার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। জীবন রক্ষাকারীসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে তবেই পানিতে নামতে হবে। মেনে চলতে হবে স্থানীয় প্রশাসন ও গাইডদের নির্দেশনা।