সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালটা স্বাগতিক নেপালের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ অনায়াসেই জিতেছে। অথচ এর আগে নেপালের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের জয়ের কোনো রেকর্ড ছিল না। এর আগে দেশটির বিরুদ্ধে ৮ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ হেরেছে ৬টিতে আর বাকি দুটো হয়েছে ড্র। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নেপালের চেয়ে ৪৫ ধাপ পেছনে।
দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলের চ্যাম্পিয়নদের আমরা জানাই টুপি খোলা অভিনন্দন। সাবিনা খাতুনের অধিনায়কত্বে দেশের মেয়েরা প্রথমবারের মতো সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হলো। বাংলাদেশ দলের কোচ, টিম ম্যানেজমেন্টসহ অন্যদেরও আমরা অভিনন্দন জানাই। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সাফল্য ধরা দিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে নারী ফুটবল দলকে সংগ্রামমুখর দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়েছে। মোকাবিলা করতে হয়েছে আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতা।
অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের নারী ফুটবল দল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কৃতিত্ব দেখিয়ে আসছে। গত বছর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে ভারতকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। নারী ফুটবলারদের ধারাবাহিক সাফল্যে আমরা গর্বিত। আগামীতেও তারা সাফল্য ধরে রাখবে- সেই প্রত্যাশা রাখি।
শুধু ফুটবলেই নয়, দলীয় খেলা ক্রিকেটেও নারীদের সাফল্য রয়েছে। ২০১৮ সালে ভারতকে হারিয়ে নারীদের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ক্রীড়াঙ্গনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারীদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে। সাঁতারে মাহফুজা খাতুন শিলা, ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত, দাবায় শারমিন সুলতানা শিরিনসহ বিভিন্ন খেলায় অনেক নারী ক্রীড়াবিদ সাফল্য অর্জন করেছেন।
দেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় নারী খেলোয়াড়দের সাফল্য অর্জন করতে হলে হাজারও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এগোতে হয়। একজন নারীর কোনো খেলায় অংশ নেয়াই কঠিন। অনেক নারী ক্রীড়াবিদকেই পরিবার ও সমাজের বাধা পেরিয়ে কাঠখড় পুড়িয়ে খেলায় মনোনিবেশ করতে হয়। প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে নানান স্তরে পুরুষ ক্রীড়াবিদরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পান, নারী ক্রীড়াবিদরা তা পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে সাফল্য লাভের ক্ষুধা যদি অদম্য হয় তবে কোনো প্রতিকূলতাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। সব বাধা ডিঙ্গিয়ে অন্যান্য অঙ্গনের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও দেশের নারীরা তাদের সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছেন। এর বিপরীতে দেশের পুরুষ ক্রীড়াবিদরা অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা পান; কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা প্রায়ই দেশবাসীর আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হন।
ক্রীড়াঙ্গনসহ সব ক্ষেত্রে নারীর প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈর করা জরুরি। নারী ক্রীড়াবিদদের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে তারা ভবিষ্যতে আরো বড় সাফল্য অর্জন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। সরকার ক্রীড়াঙ্গনের সব ক্ষেত্রে নারী খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে সেটা আমাদের আশা। ক্রীড়াঙ্গনে বেতন-ভাতাসহ সবক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে হবে।
মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২
সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালটা স্বাগতিক নেপালের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ অনায়াসেই জিতেছে। অথচ এর আগে নেপালের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের জয়ের কোনো রেকর্ড ছিল না। এর আগে দেশটির বিরুদ্ধে ৮ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ হেরেছে ৬টিতে আর বাকি দুটো হয়েছে ড্র। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নেপালের চেয়ে ৪৫ ধাপ পেছনে।
দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলের চ্যাম্পিয়নদের আমরা জানাই টুপি খোলা অভিনন্দন। সাবিনা খাতুনের অধিনায়কত্বে দেশের মেয়েরা প্রথমবারের মতো সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হলো। বাংলাদেশ দলের কোচ, টিম ম্যানেজমেন্টসহ অন্যদেরও আমরা অভিনন্দন জানাই। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সাফল্য ধরা দিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে নারী ফুটবল দলকে সংগ্রামমুখর দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়েছে। মোকাবিলা করতে হয়েছে আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতা।
অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের নারী ফুটবল দল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কৃতিত্ব দেখিয়ে আসছে। গত বছর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে ভারতকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। নারী ফুটবলারদের ধারাবাহিক সাফল্যে আমরা গর্বিত। আগামীতেও তারা সাফল্য ধরে রাখবে- সেই প্রত্যাশা রাখি।
শুধু ফুটবলেই নয়, দলীয় খেলা ক্রিকেটেও নারীদের সাফল্য রয়েছে। ২০১৮ সালে ভারতকে হারিয়ে নারীদের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ক্রীড়াঙ্গনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারীদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে। সাঁতারে মাহফুজা খাতুন শিলা, ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত, দাবায় শারমিন সুলতানা শিরিনসহ বিভিন্ন খেলায় অনেক নারী ক্রীড়াবিদ সাফল্য অর্জন করেছেন।
দেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় নারী খেলোয়াড়দের সাফল্য অর্জন করতে হলে হাজারও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এগোতে হয়। একজন নারীর কোনো খেলায় অংশ নেয়াই কঠিন। অনেক নারী ক্রীড়াবিদকেই পরিবার ও সমাজের বাধা পেরিয়ে কাঠখড় পুড়িয়ে খেলায় মনোনিবেশ করতে হয়। প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে নানান স্তরে পুরুষ ক্রীড়াবিদরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পান, নারী ক্রীড়াবিদরা তা পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে সাফল্য লাভের ক্ষুধা যদি অদম্য হয় তবে কোনো প্রতিকূলতাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। সব বাধা ডিঙ্গিয়ে অন্যান্য অঙ্গনের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও দেশের নারীরা তাদের সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছেন। এর বিপরীতে দেশের পুরুষ ক্রীড়াবিদরা অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা পান; কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা প্রায়ই দেশবাসীর আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হন।
ক্রীড়াঙ্গনসহ সব ক্ষেত্রে নারীর প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈর করা জরুরি। নারী ক্রীড়াবিদদের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে তারা ভবিষ্যতে আরো বড় সাফল্য অর্জন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। সরকার ক্রীড়াঙ্গনের সব ক্ষেত্রে নারী খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে সেটা আমাদের আশা। ক্রীড়াঙ্গনে বেতন-ভাতাসহ সবক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে হবে।