গত মঙ্গলবার ভোরে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলীয় বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা নারী ও এক শিশুসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত অবস্থায় ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। উদ্ধার হওয়াদের তথ্য মতে, ওই ট্রলারে ৭০ জনের মতো ছিলেন। সেই হিসেবে এখনো নিখোঁজ রয়েছে ২৪ জন।
রোহিঙ্গাদের সাগরপথ পাড়ি দিয়ে বিদেশ যাত্রার এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগে ২০২০ সালে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ার সীমান্তে পৌঁছালেও দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেনি। পরে টেকনাফের বাহারছড়া সমুদ্রসৈকতে ফিরে আসা ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছিল কোস্টগার্ড। ওই দলের সঙ্গে থাকা অন্তত ৩০ রোহিঙ্গা খাবার ও পানি সংকটে মারা যায়।
রোহিঙ্গারা প্রায়ই এমন ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথ পাড়ি দিয়ে থাকে। এতে নানান দুর্ঘটনাসহ হতাহতের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারও করা হয়। কিন্তু তারপরও থামছে না সাগর পাড়ি দিয়ে বিপজ্জনভাবে বিদেশ-যাত্রা। কারণ, রোহিঙ্গারা মরিয়া হয়ে জীবন ও জীবিকার সন্ধানে যেতে চায়। আর এ কাজে সহায়তার নামে দেশের কয়েকটি দালাল চক্র তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরির প্রলোভন দিয়ে দালাল চক্র রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ২০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছে।
শুধু যে রোহিঙ্গারাই এভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে, তা নয়। দালালদের ফাঁদে পা দিয়ে দেশের অনেক তরুণই নিঃস্ব হয়েছেন। সাগরে সলিলসমাধি ঘটেছে হাজারো তরুণের স্বপ্ন। এর পরও থেমে নেই মানব পাচার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল দিয়ে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর কাজে জড়িত অন্তত ৫০০ দালালকে তারা চিহ্নিত করেছে। এদের অবস্থান দেশের ১৮টি জেলায়। দালালরা ভালো চাকরি ও কম টাকায় বিদেশ পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে লোক সংগ্রহ করে। এখন তারা রোহিঙ্গাদের পাঠাতেই সবচেয়ে বেশি তৎপর রয়েছে।
রোহিঙ্গারা যে শুধু কাজের সন্ধানে বিপজ্জনকভাবে নৌপথ পাড়ি দিচ্ছেন, তা নয়। তাদের অনেকে পাসপোর্ট করে ভিসা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক দেশেই যাচ্ছে। যত দিন না রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা যাবে, তত দিন এ সমস্যা থেকেই যাবে। এ জন্য তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সেটা খুব সহজেই হচ্ছে না। প্রত্যাবাসনের কাজ দিন দিন জটিল আকার ধারণ করছে। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
রোহিঙ্গারা সাগর পাড়ি দিয়ে কিংবা পাসপোর্ট বানিয়ে অবৈধভাবে যাতে বিদেশে পাড়ি জমাতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু দালালদের গ্রেপ্তার করলেই হবে না। নেপথ্যের রাঘববোয়ালদেরও খুঁজে বের করতে হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর ২০২২
গত মঙ্গলবার ভোরে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলীয় বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা নারী ও এক শিশুসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত অবস্থায় ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। উদ্ধার হওয়াদের তথ্য মতে, ওই ট্রলারে ৭০ জনের মতো ছিলেন। সেই হিসেবে এখনো নিখোঁজ রয়েছে ২৪ জন।
রোহিঙ্গাদের সাগরপথ পাড়ি দিয়ে বিদেশ যাত্রার এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগে ২০২০ সালে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ার সীমান্তে পৌঁছালেও দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেনি। পরে টেকনাফের বাহারছড়া সমুদ্রসৈকতে ফিরে আসা ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছিল কোস্টগার্ড। ওই দলের সঙ্গে থাকা অন্তত ৩০ রোহিঙ্গা খাবার ও পানি সংকটে মারা যায়।
রোহিঙ্গারা প্রায়ই এমন ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথ পাড়ি দিয়ে থাকে। এতে নানান দুর্ঘটনাসহ হতাহতের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারও করা হয়। কিন্তু তারপরও থামছে না সাগর পাড়ি দিয়ে বিপজ্জনভাবে বিদেশ-যাত্রা। কারণ, রোহিঙ্গারা মরিয়া হয়ে জীবন ও জীবিকার সন্ধানে যেতে চায়। আর এ কাজে সহায়তার নামে দেশের কয়েকটি দালাল চক্র তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরির প্রলোভন দিয়ে দালাল চক্র রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ২০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছে।
শুধু যে রোহিঙ্গারাই এভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে, তা নয়। দালালদের ফাঁদে পা দিয়ে দেশের অনেক তরুণই নিঃস্ব হয়েছেন। সাগরে সলিলসমাধি ঘটেছে হাজারো তরুণের স্বপ্ন। এর পরও থেমে নেই মানব পাচার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল দিয়ে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর কাজে জড়িত অন্তত ৫০০ দালালকে তারা চিহ্নিত করেছে। এদের অবস্থান দেশের ১৮টি জেলায়। দালালরা ভালো চাকরি ও কম টাকায় বিদেশ পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে লোক সংগ্রহ করে। এখন তারা রোহিঙ্গাদের পাঠাতেই সবচেয়ে বেশি তৎপর রয়েছে।
রোহিঙ্গারা যে শুধু কাজের সন্ধানে বিপজ্জনকভাবে নৌপথ পাড়ি দিচ্ছেন, তা নয়। তাদের অনেকে পাসপোর্ট করে ভিসা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক দেশেই যাচ্ছে। যত দিন না রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা যাবে, তত দিন এ সমস্যা থেকেই যাবে। এ জন্য তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সেটা খুব সহজেই হচ্ছে না। প্রত্যাবাসনের কাজ দিন দিন জটিল আকার ধারণ করছে। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
রোহিঙ্গারা সাগর পাড়ি দিয়ে কিংবা পাসপোর্ট বানিয়ে অবৈধভাবে যাতে বিদেশে পাড়ি জমাতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু দালালদের গ্রেপ্তার করলেই হবে না। নেপথ্যের রাঘববোয়ালদেরও খুঁজে বের করতে হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।