বরগুনা সদর হাসপাতালের ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে পাঁচ বছর আগে। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্রের অভাবে এখনো শুরু হয়নি কার্যক্রম। ফলে থমকে আছে হাসপাতালটির ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার কাজ। পুরাতন ভবনে ১০০ শয্যার সুযোগ-সুবিধা নিয়েই চলছে কার্যক্রম। মানববন্ধন করে, স্মারকলিপি দিয়ে হাসপাতালটির নতুন ভবনের কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়ে আসছে সচেতন নাগরিক কমিটি। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
হাসপাতাল করা হয় জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার জন্য। শুধুমাত্র ভবন বা অবকাঠামো নির্মাণ করলেই চিকিৎসাসেবা দেয়া যায় না। চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিতে হয়। দরকার হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামেরও। কিন্তু বরগুনা সদর হাসপাতালে এসবের ঘাটতি রয়েছে। সেখানে ৩১ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে শুধু একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কাগজে-কলমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল লেখা হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা চালুর জন্য দরকার ৫৫ জন চিকিৎসক, ১০১ জন নার্সসহ মোট ২৩৩ জন লোকবল। এরমধ্যে ১০৩ জনের পদ শূন্য। এ ব্যাপারে বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছি, তবুও কোনো কাজই হচ্ছে না। বরগুনার ডিসি জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র না থাকার কারণে নতুন ভবনে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। আমরা প্রতি মাসে রেজুলেশন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিচ্ছি।
শুধু বরগুনার সদর হাসপাতালের ভবনই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এমন অবহেলায় পড়ে আছে ২৩৩ স্থাপনা। এগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৫৮টি ও স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের ১৭৫টি ভবন রয়েছে। ব্যবহারে আগেই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে এসব ভবন।
শুধু যে ভবনগুলোই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে তা নয়। কোনো কোনো হাসপাতালে বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে কোটি কোটি টাকার রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতিও। বছরের পর বছর পড়ে থাকার কারণে ব্যবহারের আগেই নষ্ট হচ্ছে এগুলো। প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকা ও স্থান সংকুলানের অভাবে যন্ত্রপাতিগুলো কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের মতে, এগুলোর মধ্যে এমন সব যন্ত্রপাতি আছে, একবার নষ্ট হলে আর সারানোর উপায় নেই। তাছাড়া অনেক যন্ত্রাংশও এখন আর পাওয়া যায় না।
দেশের কোনো কোনো হাসপাতালের ভবন আছে কিন্তু লোকবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, চিকিৎসা সরঞ্জাম আছে কিন্তু লোকবল ও প্রয়োজনীয় ভবন নেই। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণকে প্রত্যাশিত ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেয়া যায় না। স্বাস্থ্যখাতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করলেও জনসাধারণ পূর্ণাঙ্গ সুফল ভোগ করতে পারে না। যেমনটা পারছে না উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত এলাকার জনসাধারণ।
জনসাধারণের স্বাস্থ্যসবা নিশ্চিত করতে হলে হাসপাতালের ভবন ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে। লোকবল নিয়োগ দিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র সরবরাহ করতে হবে। যেখানে যা ঘাটতি আছে দ্রুতই তা পূরণ করতে হবে। শুধু লোকদেখানো ও চোখধাঁধানো বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করলেই হবে না।
শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০২২
বরগুনা সদর হাসপাতালের ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে পাঁচ বছর আগে। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্রের অভাবে এখনো শুরু হয়নি কার্যক্রম। ফলে থমকে আছে হাসপাতালটির ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার কাজ। পুরাতন ভবনে ১০০ শয্যার সুযোগ-সুবিধা নিয়েই চলছে কার্যক্রম। মানববন্ধন করে, স্মারকলিপি দিয়ে হাসপাতালটির নতুন ভবনের কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়ে আসছে সচেতন নাগরিক কমিটি। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
হাসপাতাল করা হয় জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার জন্য। শুধুমাত্র ভবন বা অবকাঠামো নির্মাণ করলেই চিকিৎসাসেবা দেয়া যায় না। চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিতে হয়। দরকার হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামেরও। কিন্তু বরগুনা সদর হাসপাতালে এসবের ঘাটতি রয়েছে। সেখানে ৩১ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে শুধু একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কাগজে-কলমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল লেখা হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা চালুর জন্য দরকার ৫৫ জন চিকিৎসক, ১০১ জন নার্সসহ মোট ২৩৩ জন লোকবল। এরমধ্যে ১০৩ জনের পদ শূন্য। এ ব্যাপারে বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছি, তবুও কোনো কাজই হচ্ছে না। বরগুনার ডিসি জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র না থাকার কারণে নতুন ভবনে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। আমরা প্রতি মাসে রেজুলেশন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিচ্ছি।
শুধু বরগুনার সদর হাসপাতালের ভবনই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এমন অবহেলায় পড়ে আছে ২৩৩ স্থাপনা। এগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৫৮টি ও স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের ১৭৫টি ভবন রয়েছে। ব্যবহারে আগেই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে এসব ভবন।
শুধু যে ভবনগুলোই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে তা নয়। কোনো কোনো হাসপাতালে বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে কোটি কোটি টাকার রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতিও। বছরের পর বছর পড়ে থাকার কারণে ব্যবহারের আগেই নষ্ট হচ্ছে এগুলো। প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকা ও স্থান সংকুলানের অভাবে যন্ত্রপাতিগুলো কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের মতে, এগুলোর মধ্যে এমন সব যন্ত্রপাতি আছে, একবার নষ্ট হলে আর সারানোর উপায় নেই। তাছাড়া অনেক যন্ত্রাংশও এখন আর পাওয়া যায় না।
দেশের কোনো কোনো হাসপাতালের ভবন আছে কিন্তু লোকবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, চিকিৎসা সরঞ্জাম আছে কিন্তু লোকবল ও প্রয়োজনীয় ভবন নেই। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণকে প্রত্যাশিত ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেয়া যায় না। স্বাস্থ্যখাতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করলেও জনসাধারণ পূর্ণাঙ্গ সুফল ভোগ করতে পারে না। যেমনটা পারছে না উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত এলাকার জনসাধারণ।
জনসাধারণের স্বাস্থ্যসবা নিশ্চিত করতে হলে হাসপাতালের ভবন ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে। লোকবল নিয়োগ দিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র সরবরাহ করতে হবে। যেখানে যা ঘাটতি আছে দ্রুতই তা পূরণ করতে হবে। শুধু লোকদেখানো ও চোখধাঁধানো বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করলেই হবে না।