দেশে এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। এর সঙ্গে ঘটছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনাও। প্রায়ই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল ৮৯৪টি। গড় হিসাবে দিনে দুটি। বিস্ফোরণে অনেকে হতাহতও হন।
গত শনিবার ঢাকার ধামরাইয়ে এলপিজি সিলেন্ডারের বিস্ফোরণে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
মূলত গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। সিলিন্ডারের গ্যাস লিক হয়ে থাকে হোস পাইপ, গ্যাস ভাল্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ক্রুটির কারণে। সিলিন্ডার লিক হলে গ্যাস বেরিয়ে আসে। তা ধীরে ধীরে সিলিন্ডারের বাইরে জমতে থাকে। এ সময় সামান্য আগুন বা আগুনের স্ফুলিঙ্গে সংস্পর্শে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।
যারা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেন তাদের অসচেতনার কারণেও অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রুটিপূর্ণ ও মানহীন যন্ত্রাংশ ক্রেতার কাছে গছিয়ে দেন। এজন্য সিলিন্ডার কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে সতর্ক থাকতে হবে।
সিলিন্ডার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকেও স্বচ্ছ হতে হবে। তারা বাড়তি মুনাফার আশায় যেন ক্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ বাজারজাত না করে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সিলিন্ডার পরিবহনেও অনেক সময় নিয়মকানুন মানা হয় না। গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি যানবাহন চালাতে হয় সতর্কতার সঙ্গে। যাতে সিলিন্ডারে লিকেজ না হয়ে যায়। গ্যাস সিলিন্ডারের মান যাতে করে বজায় থাকে সেজন্য বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। কেবল কাগজে এর মান বজায় রাখলে চলবে না।
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৩০টি কোম্পানি গ্যাস সিলিন্ডার বাজারজাত করে থাকেন। সবমিলিয়ে বাজারে প্রায় দুই কোটি সিলিন্ডার বাজারজাত করা হয়েছে। কিন্তু এসব সিলিন্ডার মানসম্মত কিনা তা পরীক্ষার জন্য নেই কোন পরীক্ষণ কেন্দ্র। এই সীমাবদ্ধতা যতদিন না দূর করা যাচ্ছে ততদিন মানসম্মত সিলিন্ডার নিশ্চিত করা যাবে না বলে আমরা মনে করি।
এলপিজি সিলিন্ডার কেনাবেচার ক্ষেত্রে প্রায় সময়ই নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। যাদের বেচার কথা নয়, যাদের লাইসেন্স নেই তারা যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ব্যবসা ফেঁদেছে। এমনকি টং দোকানেও এর বেচাকেনা চলে। সেখানে গুণগতমান যাচাই-বাছাইয়ের ধার ধারে না কেউ। এই স্বেচ্ছাচার বন্ধ করা জরুরি। লাইসেন্স ছাড়া কেউ যাতে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে না পারে তা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
প্রাকৃতিক গ্যাসের ভালো বিকল্প হয়ে উঠেছে লিকুইডি পেট্রোলিয়াম গ্যাস। অনেকেই এলপিজি ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। শিল্প-কলকারখানার পাশাপাশি আবাসিক পর্যায়ে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভবিষ্যতে এর ব্যবহারকারী আরো বাড়বে বলেই অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে। এখন জরুরি হচ্ছে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন সেটা আমাদের আশা।
সোমবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৩
দেশে এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। এর সঙ্গে ঘটছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনাও। প্রায়ই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল ৮৯৪টি। গড় হিসাবে দিনে দুটি। বিস্ফোরণে অনেকে হতাহতও হন।
গত শনিবার ঢাকার ধামরাইয়ে এলপিজি সিলেন্ডারের বিস্ফোরণে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
মূলত গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। সিলিন্ডারের গ্যাস লিক হয়ে থাকে হোস পাইপ, গ্যাস ভাল্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ক্রুটির কারণে। সিলিন্ডার লিক হলে গ্যাস বেরিয়ে আসে। তা ধীরে ধীরে সিলিন্ডারের বাইরে জমতে থাকে। এ সময় সামান্য আগুন বা আগুনের স্ফুলিঙ্গে সংস্পর্শে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।
যারা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেন তাদের অসচেতনার কারণেও অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রুটিপূর্ণ ও মানহীন যন্ত্রাংশ ক্রেতার কাছে গছিয়ে দেন। এজন্য সিলিন্ডার কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে সতর্ক থাকতে হবে।
সিলিন্ডার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকেও স্বচ্ছ হতে হবে। তারা বাড়তি মুনাফার আশায় যেন ক্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ বাজারজাত না করে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সিলিন্ডার পরিবহনেও অনেক সময় নিয়মকানুন মানা হয় না। গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি যানবাহন চালাতে হয় সতর্কতার সঙ্গে। যাতে সিলিন্ডারে লিকেজ না হয়ে যায়। গ্যাস সিলিন্ডারের মান যাতে করে বজায় থাকে সেজন্য বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। কেবল কাগজে এর মান বজায় রাখলে চলবে না।
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৩০টি কোম্পানি গ্যাস সিলিন্ডার বাজারজাত করে থাকেন। সবমিলিয়ে বাজারে প্রায় দুই কোটি সিলিন্ডার বাজারজাত করা হয়েছে। কিন্তু এসব সিলিন্ডার মানসম্মত কিনা তা পরীক্ষার জন্য নেই কোন পরীক্ষণ কেন্দ্র। এই সীমাবদ্ধতা যতদিন না দূর করা যাচ্ছে ততদিন মানসম্মত সিলিন্ডার নিশ্চিত করা যাবে না বলে আমরা মনে করি।
এলপিজি সিলিন্ডার কেনাবেচার ক্ষেত্রে প্রায় সময়ই নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। যাদের বেচার কথা নয়, যাদের লাইসেন্স নেই তারা যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ব্যবসা ফেঁদেছে। এমনকি টং দোকানেও এর বেচাকেনা চলে। সেখানে গুণগতমান যাচাই-বাছাইয়ের ধার ধারে না কেউ। এই স্বেচ্ছাচার বন্ধ করা জরুরি। লাইসেন্স ছাড়া কেউ যাতে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে না পারে তা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
প্রাকৃতিক গ্যাসের ভালো বিকল্প হয়ে উঠেছে লিকুইডি পেট্রোলিয়াম গ্যাস। অনেকেই এলপিজি ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। শিল্প-কলকারখানার পাশাপাশি আবাসিক পর্যায়ে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভবিষ্যতে এর ব্যবহারকারী আরো বাড়বে বলেই অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে। এখন জরুরি হচ্ছে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন সেটা আমাদের আশা।