মাহতাব হোসাইন মাজেদ
আলঝেইমার্স এমন রোগ- যেখানে মস্তিষ্কের কোষগুলো বিকল হতে শুরু করে। প্রথম দিকে এর উপসর্গ বোঝা যায় না। এ রোগের কিছু কারণ রয়েছে।বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা জিনিস ভুলে যাওয়া একটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। খুব ছোটখাটো জিনিস আমাদের মাথা থেকে বেরিয়ে যায়। চশমা খুলে রাখলাম টেবিলে, পরক্ষণেই ভুলে গেলাম কোথায় রেখেছি চশমা। এমনই ধরনের সমস্যা পরে ঘোরতর হয়। প্রথমে বিষয়টা সেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয় না। তবে এই ভুলে যাওয়ার রোগ বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছায় যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মক প্রভাবিত হয় তাতে। আচরণের মধ্যেও নানা ধরনের পরিবর্তন চোখে পড়ে। এই ভয়ঙ্কর রোগই হলো আলঝেইমার্স। আর এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোগ যাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই দেখা উচিত। এবং এটার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিশ্ব আলঝেইমার্স দিবস পালন করা হয়। এক ধরনের ডিমেনশিয়া হচ্ছে এই আলঝেইমার্স রোগটি। আর দিন দিন এই রোগ গোটা বিশ্ব ভয়াবহ আকারে বেড়েই চলেছে। তাই যাতে সাধারণ মানুষ এই রোগটা নিয়ে সচেতন হয়, সতর্ক হয় তার জন্যই ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আলঝেইমার্স ডে।
এটি একটি নিউরোডিজেনেরেটিভ রোগ যা ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং পরে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কেসেই এটা ডিমেনশিয়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে- ক্রমশ বাড়ছে এ রোগের প্রকোপ এবং চিকিৎসকরা মনে করছেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি ৮৫ জন ষাটোর্ধ্ব মানুষের মধ্যে অন্তত ১ জন আক্রান্ত হতে পারেন এই রোগে। তাই, রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি।
আলঝেইমার্স শব্দটি শুনলে যা আমাদের মনে পড়ে- কথা ভুলে যাওয়া, কিছু মনে রাখতে না পারা ইত্যাদি।
এই রোগের তিনটি ধাপ হয়- প্রাথমিক ধাপে রোগ ধরা পড়লে এবং সঠিক চিকিৎসা হলে দ্রুত সেরে ওঠা যায়। কিন্তু শেষ ধাপে যখন ধরা পড়ে এই রোগটি তখন আর কিছুই করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
এই রোগের মূল লক্ষণ হচ্ছে সব জিনিস ভুলে যাওয়া, কিছু মনে রাখতে না পারা। পরে সেটা বাড়তে বাড়তে কথা বুঝতে না পারা, ভাষা চিনতে বা বলতে না পারা, মুড সুইং, হারিয়ে যাওয়ার সমস্যা বাড়তে থাকে।
আলঝেইমার্স রোগ কেন হয় :
আলঝেইমার্স রোগের পেছনে নির্দিষ্ট কোন কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, মস্তিষ্কের নার্ভ সেলগুলো নষ্ট হয়ে গেলে এমন লক্ষ্মণ দেখা দেয়। দুটো কারণে এই লক্ষ্মণ হতে পারে। প্রোটিন ডিপোজিট কিংবা কোন ধরনের অসুস্থতা থেকে এবং জিনগত বা অনিয়মিত, খারাপ জীবনযাত্রা থেকে মস্তিষ্কের সেলগুলোতে প্রভাব পড়ে- যা থেকে আলঝেইমার্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
আলঝেইমার্সের কিছু রিস্ক-ফ্যাক্টর আছে:-
হ্যাঁ, আলঝেইমার্স ডিজিজ হওয়ার সঙ্গে কিছু রিস্ক-ফ্যাক্টর যুক্ত থাকে। এগুলো এই রোগ তৈরিতে এবং তীব্রতায় প্রভাব ফেলে। যেমন-
নিম্ন সামাজিক-অর্থনৈতিক শ্রেণী
বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন
দুর্বল সামাজিকতা
অলস মস্তিষ্ক বা মস্তিষ্কের যথোপযুক্ত ব্যবহার না করা
প্রবল পারিবারিক চাপজনিত বিষণ্নতা
হাইপারটেনশন ও ব্লাড সুগারের মতো ভাস্কুলার রিস্ক ফ্যাক্টরসমূহ- যা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে, যার ফলে ডিমেনশিয়া বৃদ্ধি পায়। যদিও এর ফলে সরাসরি আলঝেইমার্স ডিজিজ তীব্রতর হয় না।
কী উপসর্গে ধরা পড়বে আলঝেইমার্স রোগটি :
আলঝেইমার্স রোগে ধীরে ধীরে স্মৃতি লোপ পাবে। চেনা মানুষের নাম ভুলে যাওয়া, পরিচিতি রাস্তা হারিয়ে ফেলা, প্রয়োজনীয় জিনিসের কথা মনে না থাকাসহ ছোটবড় অনেককিছুই স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায়। সামাজিক অ্যাক্টিভিটি ও সম্পর্কগুলোকে ভুলে যেতে থাকবেন। সবার সঙ্গে গুছিয়ে কথা বলতে পারবেন না। রোগী ঠিকভাবে লিখতে বা পড়তে পারবেন না। কোন কিছু পড়ার সময় সমস্যা হলে এবং দূরত্ব নির্ণয় করতে সমস্যা হলে তা অবশ্যই অ্যালজাইমার্সের লক্ষ্মণ।
রোগী যে কোন বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারবেন না। কোন কথা বলতে বলতে অন্য প্রসঙ্গে চলে যাওয়াও এই অসুখের অন্যতম লক্ষ্মণ।
আচমকাই মেজাজ বদলে যাওয়া, পরিচিত এবং ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে অকারণে রাগ করাও এর লক্ষ্মণ। রোগীদের মধ্যে সন্দেহপ্রবণতা, উদ্বেগ, অবসাদের মতো লক্ষ্মণ দেখা দেয়। আর এই রোগের কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো- জেনেটিক বিষয়, পারিপার্শ্বিক বিষয়, বার্ধক্যজনিত কারণ, লাইফস্টাইলের সমস্যা যেমন- ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া না করা অথবা নিয়মিত এক্সারসাইজ না করা। তাই আগে থেকেই সতর্কতা মেনে চলতে হবে। গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, কিছু খাবার আছে, যেগুলো অ্যালজাইমার্সের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
আলঝেইমার্স ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে জীবনযাত্রায় কী ধরনের সহজ পরিবর্তন আনা যেতে পারে?
যেসব ব্যক্তির কোন সক্রিয় জীবন নেই, তারা ক্রসওয়ার্ড পাজল সমাধান করতে পারেন, নিয়মিত সামাজিক কর্মকান্ডে যোগ দিতে পারেন এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ভিত্তিক বিতর্কে অংশ নিতে পারেন। এর ফলে মস্তিষ্ক সর্বদা সক্রিয় থাকবে। আর মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখতে পারলে, আলঝেইমার্স ডিজিজকেও দূরে রাখা সম্ভব।
আলঝেইমার্স কি সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব?
না। এই রোগের কোন স্থায়ী প্রতিকার নেই। এর চিকিৎসা, রোগের লক্ষ্মণ এবং উপসর্গ দেখে কিছু ওষুধ এবং কাউসেলিংয়ের মাধ্যমে করা হয়। এককথায়, এই রোগের চিকিৎসা প্রতিরোধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই, আগাম সতর্কতার যেমন প্রয়োজন, ঠিক তেমনই এই রোগে আক্রান্তদের সুস্থ রাখার জন্য এগিয়ে আসতে হবে প্রতিটি শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে। আন্তরিক যোগাযোগ এবং সামাজিক মেলামেশার মাধ্যমেই সুস্থ রাখতে হবে রোগীকে।
আলঝেইমার্স রোগীকে সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। পরিবার, স্বজনদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেলে তারা অনেকটাই সেরে ওঠে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। রোগীর দেখাশোনা করা, সবসময় তার পাশে থাকা, তার সঙ্গে কথা বলা, তাকে বুঝিয়ে বলা- এসবই অ্যালজাইমার রোগীকে ভালো রাখে। তবে এই রোগে কারো মৃত্যু হয় না তাই এই রোগ সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান এবং সচেতনতা প্রয়োজন।
[লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি]
মাহতাব হোসাইন মাজেদ
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
আলঝেইমার্স এমন রোগ- যেখানে মস্তিষ্কের কোষগুলো বিকল হতে শুরু করে। প্রথম দিকে এর উপসর্গ বোঝা যায় না। এ রোগের কিছু কারণ রয়েছে।বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা জিনিস ভুলে যাওয়া একটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। খুব ছোটখাটো জিনিস আমাদের মাথা থেকে বেরিয়ে যায়। চশমা খুলে রাখলাম টেবিলে, পরক্ষণেই ভুলে গেলাম কোথায় রেখেছি চশমা। এমনই ধরনের সমস্যা পরে ঘোরতর হয়। প্রথমে বিষয়টা সেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয় না। তবে এই ভুলে যাওয়ার রোগ বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছায় যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মক প্রভাবিত হয় তাতে। আচরণের মধ্যেও নানা ধরনের পরিবর্তন চোখে পড়ে। এই ভয়ঙ্কর রোগই হলো আলঝেইমার্স। আর এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোগ যাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই দেখা উচিত। এবং এটার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিশ্ব আলঝেইমার্স দিবস পালন করা হয়। এক ধরনের ডিমেনশিয়া হচ্ছে এই আলঝেইমার্স রোগটি। আর দিন দিন এই রোগ গোটা বিশ্ব ভয়াবহ আকারে বেড়েই চলেছে। তাই যাতে সাধারণ মানুষ এই রোগটা নিয়ে সচেতন হয়, সতর্ক হয় তার জন্যই ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আলঝেইমার্স ডে।
এটি একটি নিউরোডিজেনেরেটিভ রোগ যা ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং পরে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কেসেই এটা ডিমেনশিয়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে- ক্রমশ বাড়ছে এ রোগের প্রকোপ এবং চিকিৎসকরা মনে করছেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি ৮৫ জন ষাটোর্ধ্ব মানুষের মধ্যে অন্তত ১ জন আক্রান্ত হতে পারেন এই রোগে। তাই, রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি।
আলঝেইমার্স শব্দটি শুনলে যা আমাদের মনে পড়ে- কথা ভুলে যাওয়া, কিছু মনে রাখতে না পারা ইত্যাদি।
এই রোগের তিনটি ধাপ হয়- প্রাথমিক ধাপে রোগ ধরা পড়লে এবং সঠিক চিকিৎসা হলে দ্রুত সেরে ওঠা যায়। কিন্তু শেষ ধাপে যখন ধরা পড়ে এই রোগটি তখন আর কিছুই করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
এই রোগের মূল লক্ষণ হচ্ছে সব জিনিস ভুলে যাওয়া, কিছু মনে রাখতে না পারা। পরে সেটা বাড়তে বাড়তে কথা বুঝতে না পারা, ভাষা চিনতে বা বলতে না পারা, মুড সুইং, হারিয়ে যাওয়ার সমস্যা বাড়তে থাকে।
আলঝেইমার্স রোগ কেন হয় :
আলঝেইমার্স রোগের পেছনে নির্দিষ্ট কোন কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, মস্তিষ্কের নার্ভ সেলগুলো নষ্ট হয়ে গেলে এমন লক্ষ্মণ দেখা দেয়। দুটো কারণে এই লক্ষ্মণ হতে পারে। প্রোটিন ডিপোজিট কিংবা কোন ধরনের অসুস্থতা থেকে এবং জিনগত বা অনিয়মিত, খারাপ জীবনযাত্রা থেকে মস্তিষ্কের সেলগুলোতে প্রভাব পড়ে- যা থেকে আলঝেইমার্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
আলঝেইমার্সের কিছু রিস্ক-ফ্যাক্টর আছে:-
হ্যাঁ, আলঝেইমার্স ডিজিজ হওয়ার সঙ্গে কিছু রিস্ক-ফ্যাক্টর যুক্ত থাকে। এগুলো এই রোগ তৈরিতে এবং তীব্রতায় প্রভাব ফেলে। যেমন-
নিম্ন সামাজিক-অর্থনৈতিক শ্রেণী
বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন
দুর্বল সামাজিকতা
অলস মস্তিষ্ক বা মস্তিষ্কের যথোপযুক্ত ব্যবহার না করা
প্রবল পারিবারিক চাপজনিত বিষণ্নতা
হাইপারটেনশন ও ব্লাড সুগারের মতো ভাস্কুলার রিস্ক ফ্যাক্টরসমূহ- যা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে, যার ফলে ডিমেনশিয়া বৃদ্ধি পায়। যদিও এর ফলে সরাসরি আলঝেইমার্স ডিজিজ তীব্রতর হয় না।
কী উপসর্গে ধরা পড়বে আলঝেইমার্স রোগটি :
আলঝেইমার্স রোগে ধীরে ধীরে স্মৃতি লোপ পাবে। চেনা মানুষের নাম ভুলে যাওয়া, পরিচিতি রাস্তা হারিয়ে ফেলা, প্রয়োজনীয় জিনিসের কথা মনে না থাকাসহ ছোটবড় অনেককিছুই স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায়। সামাজিক অ্যাক্টিভিটি ও সম্পর্কগুলোকে ভুলে যেতে থাকবেন। সবার সঙ্গে গুছিয়ে কথা বলতে পারবেন না। রোগী ঠিকভাবে লিখতে বা পড়তে পারবেন না। কোন কিছু পড়ার সময় সমস্যা হলে এবং দূরত্ব নির্ণয় করতে সমস্যা হলে তা অবশ্যই অ্যালজাইমার্সের লক্ষ্মণ।
রোগী যে কোন বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারবেন না। কোন কথা বলতে বলতে অন্য প্রসঙ্গে চলে যাওয়াও এই অসুখের অন্যতম লক্ষ্মণ।
আচমকাই মেজাজ বদলে যাওয়া, পরিচিত এবং ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে অকারণে রাগ করাও এর লক্ষ্মণ। রোগীদের মধ্যে সন্দেহপ্রবণতা, উদ্বেগ, অবসাদের মতো লক্ষ্মণ দেখা দেয়। আর এই রোগের কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো- জেনেটিক বিষয়, পারিপার্শ্বিক বিষয়, বার্ধক্যজনিত কারণ, লাইফস্টাইলের সমস্যা যেমন- ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া না করা অথবা নিয়মিত এক্সারসাইজ না করা। তাই আগে থেকেই সতর্কতা মেনে চলতে হবে। গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, কিছু খাবার আছে, যেগুলো অ্যালজাইমার্সের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
আলঝেইমার্স ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে জীবনযাত্রায় কী ধরনের সহজ পরিবর্তন আনা যেতে পারে?
যেসব ব্যক্তির কোন সক্রিয় জীবন নেই, তারা ক্রসওয়ার্ড পাজল সমাধান করতে পারেন, নিয়মিত সামাজিক কর্মকান্ডে যোগ দিতে পারেন এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ভিত্তিক বিতর্কে অংশ নিতে পারেন। এর ফলে মস্তিষ্ক সর্বদা সক্রিয় থাকবে। আর মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখতে পারলে, আলঝেইমার্স ডিজিজকেও দূরে রাখা সম্ভব।
আলঝেইমার্স কি সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব?
না। এই রোগের কোন স্থায়ী প্রতিকার নেই। এর চিকিৎসা, রোগের লক্ষ্মণ এবং উপসর্গ দেখে কিছু ওষুধ এবং কাউসেলিংয়ের মাধ্যমে করা হয়। এককথায়, এই রোগের চিকিৎসা প্রতিরোধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই, আগাম সতর্কতার যেমন প্রয়োজন, ঠিক তেমনই এই রোগে আক্রান্তদের সুস্থ রাখার জন্য এগিয়ে আসতে হবে প্রতিটি শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে। আন্তরিক যোগাযোগ এবং সামাজিক মেলামেশার মাধ্যমেই সুস্থ রাখতে হবে রোগীকে।
আলঝেইমার্স রোগীকে সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। পরিবার, স্বজনদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেলে তারা অনেকটাই সেরে ওঠে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। রোগীর দেখাশোনা করা, সবসময় তার পাশে থাকা, তার সঙ্গে কথা বলা, তাকে বুঝিয়ে বলা- এসবই অ্যালজাইমার রোগীকে ভালো রাখে। তবে এই রোগে কারো মৃত্যু হয় না তাই এই রোগ সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান এবং সচেতনতা প্রয়োজন।
[লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি]