alt

উপ-সম্পাদকীয়

ঈদে সুস্থ খাদ্যাভ্যাস

নাজমুল হুদা খান

: শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

ঈদুল আজহা মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ ঈদে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই সারা দেশের মানুষ কোরবানির গরু কেনাবেচায় বেরিয়ে পড়ে। এছাড়া পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অন্যতম অংশ। যদিও রোজার ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদে তুলনামূলক গমনাগমনটি কম হয়। তথাপি জনসংখ্যার আধিক্যে নাজুক আমাদের দেশে এ যাত্রা যে খুব সুখকর হয়না, এটা আমাদের সবারই জানা। তবুও কোরবানির গরু কেনাকাটা ঈদযাত্রা এবং ঈদের দিনগুলোতে যাতে আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারি; সেদিকে নজর রাখা অত্যাবশ্যকীয়।

কোরবানির গরু কেনাকাটা ও ঈদযাত্রাকালে রাস্তাঘাট, হাট বাজার, বাস স্টেশন, ফেরিঘাটের রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন ধরনের খাবার এবং স্ট্রিট ফুড খাওয়া হয় আমাদের। ফলে অনেকেই পথিমধ্যে কিংবা গন্তব্যে পৌঁছার পর বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতায় ভুগতে দেখা যায়। মূলত রাস্তাঘাটে, খোলা রেস্টুরেন্ট বা হকারদের খোলা খাবার সর্বদাই স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকি থেকে যায়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব খাবার প্রস্ততিতে যথাযথ পরিষ্কার পরিছন্নতা মানা হয়না; খোলা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বিক্রি করা হয়; খাবার প্রস্ততের সময় বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করা হয় না এবং খাবার পরিবেশনের সময়ও একই পানি বারবার ব্যবহার করা হয়। ফলে নানা ধরনের পেটের পীড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

আইসিডিডিআর,বির বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে, এসব অপরিচ্ছন্ন খাবার ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েডসহ পরিপাকতন্ত্রেও অন্যান্য রোগের মূল কারণ। এসব খাবারের অধিকাংশের মধ্যেই খাদ্যনালিতে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া যথা- ঊ.ঈড়ষর, ঘড়ৎড়ারৎঁং, ঠরনৎরড় পযড়ষবহধব, ঝযরমবষষধ, ঝধষসড়হবষষধ ও এরধৎফরধ রয়েছে। এসব জীবাণু ডায়রিয়া, কলেরা ছাড়াও টাইফয়েড ও হেপাটাইটিস রোগের উৎপন্ন করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, খোলা স্থানে বিক্রয়কৃত ১৩০ ধরনের খাবারের মধ্যে কাবাব, খিচুরি, তেহারি, চিতইপিঠা, ভাপাপিঠা, ছোলাভুনা, হালিম, আলুর চপ, বেগুনি, ডালপুরি, পিঁয়াজু, পেটিস, চিকেনফ্রাই, ফ্রেঞ্চফ্রাই, রোল অন্যতম। ফুটপাত বাস ও ট্রেন স্টেশন, লঞ্চঘাট ইত্যাদিতে বিক্রয়কৃত এসব সবাই খাবারই ঝুঁকিপূর্ণ।

জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় প্রায় সবাই খাবারেই পাকস্থলি ও খাদ্যনালীর রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ইস্ট, ফাঙ্গাসসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যহানিকর জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সুতরাং কোরবানির গরু কেনাকাটায় জড়িত এবং ঈদ উৎসব পালনের জন্য বাড়িতে গমনকারীগণের যতটা সম্ভব রাস্তাঘাটের এসব খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

তাহলে সুস্থ অবস্থায় কোরবানির গরু কেনাকাটা ও ঈদে গন্তব্যে গমন এবং আত্মীয়স্বজনের সাথে ঈদোৎসবের আনন্দটি ভাগ করে নেওয়া সম্ভব।

ঈদের সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার-দাবারের আয়োজন ঈদোৎসবের অন্যতম উপাদান। তবে এ বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সতর্ক থাকা উচিত। ঈদের দিনগুলোতে হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের খাবার বেশি পরিমাণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে পরিপাকতন্ত্র বিভিন্ন ধরনের ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে, যেমন- ডায়রিয়া, বদহজম, পেটেব্যথা, ফুলে থাকা, এসিডিটি ইত্যাদি।

ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন-সেমাই বা পায়েস ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে আমাদের। পরিমাণ মতো খেলে সমস্যা নেই, তবে ডায়াবেটিস বা আইবিএস রোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সতর্কতার সাথে এসব দুধ ও মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। নামাজ থেকে ফেরার পর নাস্তাতে থাকে তৈল ও মসলা জাতীয় খাবার যথা- পরাটা, লুচি, ভুনাখিচুরি, তেহারি ইত্যাদি। দিনের প্রথমেই ভরপেট না খেয়ে পরিমাণ মতো খাওয়াই ভালো। গরমে সৃষ্ট শরীরের পানি শূন্যতা রোধে প্রয়োজনানুযায়ী পানি, বোরহানি, ফলের জুস বা শরবত পান শরীরের জন্য উপকারী।

দুপুরে সবার ঘরেই ভারি খাবারের আয়োজন থাকে। এর মধ্যে পোলাও, কাচ্চি বিরিয়ানি, মুরগি, কোরবানির খাসি কিংবা গরুর মাংস, কাবাব ইত্যাদির আধিক্য থাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। এসব খাবার হজমে বেশ সময় নেয়। সুতরাং এসব খাবারের সাথে সবজি এবং সালাদ থাকাটা জরুরি। অনেকেই এ সময় কোমল পানীয় পান করে থাকেন। এটি কোনক্রমেই হজম বা স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক নয়। এর পরিবর্তে সাধারণ পানি, বোরহানি বা লেবাং জাতীয় পানীয় শরীরের জন্য উপকারী।

রাতের খাবারের তালিকায় সাধারণত ভাত, মাছ, মুরগি, গরু/ খাসির মাংস, শাক/সব্জি ও ডাল এগুলোতে সীমাবদ্ধ থাকাই ভালো। এ সময় যারা বয়স্ক কিংবা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ, আলসার, আইবিএস, গাউট প্রভৃতি রোগে ভোগেন; তাদের অবশ্যই নিয়ম মেনে পরিমাণমতো খেতে হবে। ঘরে এ সময় এন্টাসিড, ওমিপ্রাজল, প্যানটোপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল জাতীয় ঔষধ রাখা উচিত। সুযোগ মতো হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করলে হজমে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

আমরা কোরবানির গরু ছাগল কেনাকাটায়, বাড়ি ও স্বজনের টানে ঈদ উৎসব করতে যাত্রাপথে বিভিন্ন স্থানে খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকব এবং সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ঈদের দিনে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করব। তৈলাক্ত, ঝাল ও অধিক মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলব। পরিচ্ছন্নভাবে তৈরি, সহজে হজমযোগ্য এবং পরিমিত খাবার গ্রহণ করে সুস্থ থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

[লেখক : জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ]

পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থকে কি জলাঞ্জলি দিয়েছে মোদি প্রশাসন

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ : আইন কী বলে

হাজার টাকার বাগান খাইল পাঁচ সিকার ছাগলে

বাংলাদেশের উন্নতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা

মাদকমুক্ত দেশ গড়তে প্রয়োজন প্রতিরোধ কার্যক্রম

রম্যগদ্য : ‘ন্যায়-অন্যায় জানি নে, জানি নে...’

ছবি

কুরবানির ছাগল তাকে চিনতে পেরেছে

ছবি

সুইডিশ মিডসামার : এক আনন্দময় দিনের সূচনা

ছবি

আধুনিক রূপকথা এবং আমাদের রাজাদের গল্প

গাছে গাছে সবুজ হোক দেশ

কত বিষে আমাদের বসবাস

ছবি

তিস্তার দুই নয়নে দুই অশ্রুধারা

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান

আদিবাসীরা বৈষম্যের শিকার

ছবি

নারীর অগ্রযাত্রা

ছবি

সিলেট-সুনামগঞ্জের ‘জলাবদ্ধ বন্যার’ দায় কার?

ছবি

বুড়িতিস্তা রিজার্ভার খনন : কৃষক কি উপকৃত হবে?

সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে কী হচ্ছে?

উচ্ছেদকৃত দলিতদের পুনর্বাসন করুন

রম্যগদ্য : অভিযোগ ‘অভিযোগ’ নয়

কেন হেরে গেলেন সেলিম

নীরবে-নিভৃতে কাজ করা এক কৃষিবিজ্ঞানীর কথা

অর্থনীতি কী অবস্থায় আছে?

কোরবানির চামড়ার হকদার

যোগাযোগ অধ্যয়ন কেন গুরুত্বপূর্ণ

এমপি আনারকে নিয়ে যত আইনি জটিলতা

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আইনের শাসন

দূর হোক মনের পশুত্ব

মনের পশুত্বের প্রতীকী ত্যাগের আরেক নাম কোরবানি

এমআইটি : প্রযুক্তির সৃষ্টি রহস্যের খোঁজ

কবিগুরুর বাণী ‘প্রমাণিত মিথ্যা’

কিশোর গ্যাং কালচার বন্ধ হবে কিভাবে

কানিহাটি সিরিজ এবং পঞ্চব্রীহি নিয়ে আরও কিছু কথা

কলকাতায় হিজাব বিতর্ক

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিয়ে বিতর্ক

হাতের শক্তি ও মহিমা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

ঈদে সুস্থ খাদ্যাভ্যাস

নাজমুল হুদা খান

শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

ঈদুল আজহা মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ ঈদে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই সারা দেশের মানুষ কোরবানির গরু কেনাবেচায় বেরিয়ে পড়ে। এছাড়া পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অন্যতম অংশ। যদিও রোজার ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদে তুলনামূলক গমনাগমনটি কম হয়। তথাপি জনসংখ্যার আধিক্যে নাজুক আমাদের দেশে এ যাত্রা যে খুব সুখকর হয়না, এটা আমাদের সবারই জানা। তবুও কোরবানির গরু কেনাকাটা ঈদযাত্রা এবং ঈদের দিনগুলোতে যাতে আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারি; সেদিকে নজর রাখা অত্যাবশ্যকীয়।

কোরবানির গরু কেনাকাটা ও ঈদযাত্রাকালে রাস্তাঘাট, হাট বাজার, বাস স্টেশন, ফেরিঘাটের রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন ধরনের খাবার এবং স্ট্রিট ফুড খাওয়া হয় আমাদের। ফলে অনেকেই পথিমধ্যে কিংবা গন্তব্যে পৌঁছার পর বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতায় ভুগতে দেখা যায়। মূলত রাস্তাঘাটে, খোলা রেস্টুরেন্ট বা হকারদের খোলা খাবার সর্বদাই স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকি থেকে যায়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব খাবার প্রস্ততিতে যথাযথ পরিষ্কার পরিছন্নতা মানা হয়না; খোলা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বিক্রি করা হয়; খাবার প্রস্ততের সময় বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করা হয় না এবং খাবার পরিবেশনের সময়ও একই পানি বারবার ব্যবহার করা হয়। ফলে নানা ধরনের পেটের পীড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

আইসিডিডিআর,বির বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে, এসব অপরিচ্ছন্ন খাবার ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েডসহ পরিপাকতন্ত্রেও অন্যান্য রোগের মূল কারণ। এসব খাবারের অধিকাংশের মধ্যেই খাদ্যনালিতে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া যথা- ঊ.ঈড়ষর, ঘড়ৎড়ারৎঁং, ঠরনৎরড় পযড়ষবহধব, ঝযরমবষষধ, ঝধষসড়হবষষধ ও এরধৎফরধ রয়েছে। এসব জীবাণু ডায়রিয়া, কলেরা ছাড়াও টাইফয়েড ও হেপাটাইটিস রোগের উৎপন্ন করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, খোলা স্থানে বিক্রয়কৃত ১৩০ ধরনের খাবারের মধ্যে কাবাব, খিচুরি, তেহারি, চিতইপিঠা, ভাপাপিঠা, ছোলাভুনা, হালিম, আলুর চপ, বেগুনি, ডালপুরি, পিঁয়াজু, পেটিস, চিকেনফ্রাই, ফ্রেঞ্চফ্রাই, রোল অন্যতম। ফুটপাত বাস ও ট্রেন স্টেশন, লঞ্চঘাট ইত্যাদিতে বিক্রয়কৃত এসব সবাই খাবারই ঝুঁকিপূর্ণ।

জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় প্রায় সবাই খাবারেই পাকস্থলি ও খাদ্যনালীর রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ইস্ট, ফাঙ্গাসসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যহানিকর জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সুতরাং কোরবানির গরু কেনাকাটায় জড়িত এবং ঈদ উৎসব পালনের জন্য বাড়িতে গমনকারীগণের যতটা সম্ভব রাস্তাঘাটের এসব খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

তাহলে সুস্থ অবস্থায় কোরবানির গরু কেনাকাটা ও ঈদে গন্তব্যে গমন এবং আত্মীয়স্বজনের সাথে ঈদোৎসবের আনন্দটি ভাগ করে নেওয়া সম্ভব।

ঈদের সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার-দাবারের আয়োজন ঈদোৎসবের অন্যতম উপাদান। তবে এ বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সতর্ক থাকা উচিত। ঈদের দিনগুলোতে হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের খাবার বেশি পরিমাণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে পরিপাকতন্ত্র বিভিন্ন ধরনের ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে, যেমন- ডায়রিয়া, বদহজম, পেটেব্যথা, ফুলে থাকা, এসিডিটি ইত্যাদি।

ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন-সেমাই বা পায়েস ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে আমাদের। পরিমাণ মতো খেলে সমস্যা নেই, তবে ডায়াবেটিস বা আইবিএস রোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সতর্কতার সাথে এসব দুধ ও মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। নামাজ থেকে ফেরার পর নাস্তাতে থাকে তৈল ও মসলা জাতীয় খাবার যথা- পরাটা, লুচি, ভুনাখিচুরি, তেহারি ইত্যাদি। দিনের প্রথমেই ভরপেট না খেয়ে পরিমাণ মতো খাওয়াই ভালো। গরমে সৃষ্ট শরীরের পানি শূন্যতা রোধে প্রয়োজনানুযায়ী পানি, বোরহানি, ফলের জুস বা শরবত পান শরীরের জন্য উপকারী।

দুপুরে সবার ঘরেই ভারি খাবারের আয়োজন থাকে। এর মধ্যে পোলাও, কাচ্চি বিরিয়ানি, মুরগি, কোরবানির খাসি কিংবা গরুর মাংস, কাবাব ইত্যাদির আধিক্য থাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। এসব খাবার হজমে বেশ সময় নেয়। সুতরাং এসব খাবারের সাথে সবজি এবং সালাদ থাকাটা জরুরি। অনেকেই এ সময় কোমল পানীয় পান করে থাকেন। এটি কোনক্রমেই হজম বা স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক নয়। এর পরিবর্তে সাধারণ পানি, বোরহানি বা লেবাং জাতীয় পানীয় শরীরের জন্য উপকারী।

রাতের খাবারের তালিকায় সাধারণত ভাত, মাছ, মুরগি, গরু/ খাসির মাংস, শাক/সব্জি ও ডাল এগুলোতে সীমাবদ্ধ থাকাই ভালো। এ সময় যারা বয়স্ক কিংবা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ, আলসার, আইবিএস, গাউট প্রভৃতি রোগে ভোগেন; তাদের অবশ্যই নিয়ম মেনে পরিমাণমতো খেতে হবে। ঘরে এ সময় এন্টাসিড, ওমিপ্রাজল, প্যানটোপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল জাতীয় ঔষধ রাখা উচিত। সুযোগ মতো হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করলে হজমে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

আমরা কোরবানির গরু ছাগল কেনাকাটায়, বাড়ি ও স্বজনের টানে ঈদ উৎসব করতে যাত্রাপথে বিভিন্ন স্থানে খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকব এবং সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ঈদের দিনে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করব। তৈলাক্ত, ঝাল ও অধিক মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলব। পরিচ্ছন্নভাবে তৈরি, সহজে হজমযোগ্য এবং পরিমিত খাবার গ্রহণ করে সুস্থ থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

[লেখক : জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ]

back to top