alt

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ‘ন্যায়-অন্যায় জানি নে, জানি নে...’

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

‘ন্যায় অন্যায় জানি নে, জানি নে, জানি নে,/ শুধু তোমারে জানি/ ওগো লক্ষীমণি।/ ন্যায় অন্যায় জানি নে, জানি নে. জানি নে...’

‘কি ব্যাপার গুরু, সক্কালবেলা কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শ্যামা নৃত্যনাট্যের’ ‘ন্যায় অন্যায় জানি নে, জানি নে, জানি নে,/ শুধু তোমারে জানি/ ওগো সুন্দরী। ‘ন্যায়-অন্যায় জানিনে জানিনে জানিনে...গানের কথা চেঞ্জ কইরা সুন্দরীর জায়গায় ‘লক্ষীমনি’ লেইখ্যা নিজের নামে চালাইবেননি?’

‘আরে নারে ব্যাটা, আমরা বদমায়েশ হইলেও শরীফ, মানে শরীফ বদমায়েশ। কবি গুরুর গান নিজের নামে চালামু!! না না এতো লুচ্চা অহনও হই নাই।’

‘তয় বেইন্না ফজরত মা লক্ষীর নাম লয়া গান বঁভধলেন ক্যেন?’

‘গান নারে গান না, এ হচ্ছে জীবনের মূলমন্ত্র...’

‘এইডা কি কন! ন্যায় অন্যায় আপনার জীবনের মলমুত্র!’

‘ওই হনুমানের পো, ন্যায় অন্যায় আপনার জীবনের মলমুত্র না মূলমন্ত্র...’

‘ওই হইলো- ন্যায় অন্যায় জীবনের মূলমন্ত্র না মলমূত্র ওই একই কথা...’

‘তবে তোর কথায় যুক্তি আছে, আজকালকার ডিজিটাল বাংলাদেশে ন্যায় অন্যায় এখন মূলমন্ত্র হয়েও তোর ভাষায় রূপান্তরিত হচ্ছে...’

‘বুঝলাম না মানে, ন্যায় অন্যায় রূপান্তর...’

‘শোন তোকে বুঝিয়ে বলি, শুরু করিতেছি বাংলার অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত জনগণের নামে, যারা পরম করুণাময় এবং অত্যন্ত দয়ালু। আমাদের দয়ালু দেশবাসীর দয়ার সাগরে ভাসতে যেয়ে এখন ন্যায় অন্যায় আর কোনো ব্যাপারই না, কেবল মা লক্ষীর পুজা কর আর থরে থরে মাল কামাও। মাল কিভাবে এলো এটাঁ কোনো কথা না। খালি মাল কামাও আর মাল কামাও। মাল কামানোর পথ ন্যায় না অন্যায় সেটা ভুলে যাও, কেবল মাল কামাও...।’

‘এই মাল কামাইতে যায়া যে অন্যায় পথে পাঁচ সাতটা পাসপোর্ট বানাইলেন, সাতশ’ কোটি ট্যাকা কামাইলেন, বারো লাখ টাকার রামছাগল তো সব সুখ শান্তি মুড়ায়া দিবো তখন? এই মাল কি আপনারে বাঁচাইতে পারবো! তয় এই অন্যায় মাল কামায়া লাভ কী?’

‘আরে গাঁড়ল, এইসব মালের মাজেজা তুই বুঝবি কি? দুই-দুইডা বৌ, একটা আবার ভোটাভুটি না কইরাই ওয়ান্ডার ওয়োম্যানের মতো জেলার চেয়ারম্যান। দেশ চালাইতেছে। এসব ওয়ান্ডারফুল ব্যাপার তুই বুঝস? এটা এক অন্য মজা। আমরা জাতির বিবেকের রোল প্লে করি, জাতীয় করকমলের প্রধান, দেশের অর্থনীতি চলে আমাগো সামান্য অঙ্গুলি হেলনে। বিশ কোটি লোকের বেতন-ভাতা সব আমাগো করতলে। এই মহাবিস্তর সুকঠিন দায়িত্ব পালন করে, আমরা কি কোনো বাড়তি প্রণোদনা পাই? জি, না, আমাগো এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরও কোনো প্রনোদনা পাই না। কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের এই খাটনির দাম দেয়না! তবে হ্যাঁ, এদেশের প্রকৃত শিক্ষিত দেশপ্রেমিক জনগণ তারা আমাদের এই হাড়ভাঙ্গা খাটুনি দেখে, দয়া পরবশ হয়ে কিছু মা লক্ষী অর্পন করেন, তোরা যেটাকে উপরি পাওনা বা ঘটোৎকোচ বলিস। কিন্তু না না একে উৎকোচ না বলে দেশ-দরদী সচেতন দেশবাসীর উপঢৌকন বলিলেই পারিস।’

‘উপঢৌকন তো শুনেছি স্বেচ্ছায় স্বপ্রণোদিত হয়ে, একে অপরকে খুশি মনে প্রদান করে। কিন্তু ফাইল ঠ্যাকায়া উপঢৌকন নেয়া এইটা কি মানায়? এইডা অন্যায় না!’

‘ওরে পাগল, লাক যদি ফেভার করে তায়লে ওয়ান্ডারফুল কিছু ঘটতেই পারে!! আর তুই লাকী হলে বাঁশের কেল্লার শহীদ তিতুমীরকে বাংলা শেখাবার পাশাপাশি ক্যান্সারে মরা রোগীর শূন্য পদটা আদিরসের লহরীর মাঝে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে হয়ে গেলি রাজনীতিবিদ!! বাংলা-বিহার-উড়িশ্যার অধিপতি-আলিফ লায়লার ভানুমতির খেল!! এসব তুই বুঝিস?’

‘ভাই এইডা আপনে কি কন, বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নিবর্চিত হওয়াতো কোনো পাপ না! প্রতিপক্ষ না থাকলে আমার কি দোষ!!তাছাড়া জনগনতন্ত্র তো কখনো বলে নাই যে প্রতিপক্ষ না তাকলে ভুট বন্ধ রাখতে! এইডা আপনে কি কন?’

‘আরে তুই বুইচিস নাক্যেনে? কোনো ভাবে একবার নির্বাচিত হলেই মা লক্ষী তোর দুয়ারে হুড়মুড় করে এসে, হোঁচট খেয়ে পড়ে। বিনি-ট্যাক্সেও কুটি টাকার গাড়ি, পূর্বাচলে প্লট, লাল-পাসপোর্ট, মুরিদদের বিশেষ করে ঠিকাদার মুরিদদের নজরানা-তোকে রাত-কানা করে তোলে রে- রাতকানা। তখন তুই ন্যায় অন্যায় আর কিছুই দেখতে পাসনা!’

‘ন্যায়-অন্যায় না দেখলে তো, তরী-তীরে এসে হঠাৎ ডুবে যায়, কোনখানে রে কোন রাম ছাগলের ঘায়, তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়...’

‘রামছাগলের ঘায় বা রামছাগলের গুঁতায়-যাই বলিস না কেনো তরী ডোবাটাই দেখলি! এতোদিন যে মহানন্দে তরী তরতরিয়ে বায়া চললাম এ্যইডা দেখপিনা!’ তুই তো জানিস তোর কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শত বছর পূর্বেই তাঁর ‘নৌকাডুবি’ ছোট গল্পে বলেইছেন, একদিন না একদিন তুই যে ভাবেই মালকামানা ক্যেনো, ন্যায় হোক বা অন্যায় হোক, পাপের পাল্লাভারী হলে তরী তোমার ডুববেই ডুববেই।’

‘তাই বুঝি সক্কাল বেলায় কবি গুরুর সঙ্গীত চর্চা করছেন?’

‘আরে না কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীতের মতোই গাইতে ইচ্ছে করে ‘বড় বেদনার মতো বেজেছো আমার প্রাণে...’ একটা দেশের এতো বড় বড় পদে থেকেও তোরা যদি চুরি-চামারি-ছ্যাচড়ামি ছাড়তে নাপারিস- তা হলে লেখাপড়ায় এতো মেধাবী ফলাফলের কোনো দাম থাকে??’ ‘পানি ওয়ালীর পোলার কাছে আবার শিক্ষার দাম...’

‘না রে বড় কষ্ট লাগে, সবাই খালি মালের পিছনে ছুটছে...এই অবৈধ মালদিয়ে কি করবে?? দি লাস্ট স্টেশন তো সাড়ে তিন হাত...।’

‘খামাখা ভয় লাগায়েন না, দি লাস্ট স্টেশন ইজ সাড়ে তিন হাত...। আমাগের ট্রেন আছে, লাইন আছে কিন্তু কোনো স্টেশন নাই...। খালি মাল কামামু মাল...।’

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

বেঁটে নারকেল গাছ নিয়ে কিছু কথা

রাসেলস ভাইপার : আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন সচেতনতা

ব্যাংকিং সেক্টরের অনিয়ম দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে

হুমকিতে সমুদ্র, ঝুঁকিতে উন্নয়নশীল দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থকে কি জলাঞ্জলি দিয়েছে মোদি প্রশাসন

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ : আইন কী বলে

হাজার টাকার বাগান খাইল পাঁচ সিকার ছাগলে

বাংলাদেশের উন্নতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা

মাদকমুক্ত দেশ গড়তে প্রয়োজন প্রতিরোধ কার্যক্রম

ছবি

কুরবানির ছাগল তাকে চিনতে পেরেছে

ছবি

সুইডিশ মিডসামার : এক আনন্দময় দিনের সূচনা

ছবি

আধুনিক রূপকথা এবং আমাদের রাজাদের গল্প

গাছে গাছে সবুজ হোক দেশ

কত বিষে আমাদের বসবাস

ছবি

তিস্তার দুই নয়নে দুই অশ্রুধারা

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান

আদিবাসীরা বৈষম্যের শিকার

ছবি

নারীর অগ্রযাত্রা

ছবি

সিলেট-সুনামগঞ্জের ‘জলাবদ্ধ বন্যার’ দায় কার?

ছবি

বুড়িতিস্তা রিজার্ভার খনন : কৃষক কি উপকৃত হবে?

সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে কী হচ্ছে?

উচ্ছেদকৃত দলিতদের পুনর্বাসন করুন

রম্যগদ্য : অভিযোগ ‘অভিযোগ’ নয়

কেন হেরে গেলেন সেলিম

নীরবে-নিভৃতে কাজ করা এক কৃষিবিজ্ঞানীর কথা

অর্থনীতি কী অবস্থায় আছে?

কোরবানির চামড়ার হকদার

যোগাযোগ অধ্যয়ন কেন গুরুত্বপূর্ণ

এমপি আনারকে নিয়ে যত আইনি জটিলতা

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আইনের শাসন

দূর হোক মনের পশুত্ব

মনের পশুত্বের প্রতীকী ত্যাগের আরেক নাম কোরবানি

ঈদে সুস্থ খাদ্যাভ্যাস

এমআইটি : প্রযুক্তির সৃষ্টি রহস্যের খোঁজ

কবিগুরুর বাণী ‘প্রমাণিত মিথ্যা’

কিশোর গ্যাং কালচার বন্ধ হবে কিভাবে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ‘ন্যায়-অন্যায় জানি নে, জানি নে...’

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

‘ন্যায় অন্যায় জানি নে, জানি নে, জানি নে,/ শুধু তোমারে জানি/ ওগো লক্ষীমণি।/ ন্যায় অন্যায় জানি নে, জানি নে. জানি নে...’

‘কি ব্যাপার গুরু, সক্কালবেলা কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শ্যামা নৃত্যনাট্যের’ ‘ন্যায় অন্যায় জানি নে, জানি নে, জানি নে,/ শুধু তোমারে জানি/ ওগো সুন্দরী। ‘ন্যায়-অন্যায় জানিনে জানিনে জানিনে...গানের কথা চেঞ্জ কইরা সুন্দরীর জায়গায় ‘লক্ষীমনি’ লেইখ্যা নিজের নামে চালাইবেননি?’

‘আরে নারে ব্যাটা, আমরা বদমায়েশ হইলেও শরীফ, মানে শরীফ বদমায়েশ। কবি গুরুর গান নিজের নামে চালামু!! না না এতো লুচ্চা অহনও হই নাই।’

‘তয় বেইন্না ফজরত মা লক্ষীর নাম লয়া গান বঁভধলেন ক্যেন?’

‘গান নারে গান না, এ হচ্ছে জীবনের মূলমন্ত্র...’

‘এইডা কি কন! ন্যায় অন্যায় আপনার জীবনের মলমুত্র!’

‘ওই হনুমানের পো, ন্যায় অন্যায় আপনার জীবনের মলমুত্র না মূলমন্ত্র...’

‘ওই হইলো- ন্যায় অন্যায় জীবনের মূলমন্ত্র না মলমূত্র ওই একই কথা...’

‘তবে তোর কথায় যুক্তি আছে, আজকালকার ডিজিটাল বাংলাদেশে ন্যায় অন্যায় এখন মূলমন্ত্র হয়েও তোর ভাষায় রূপান্তরিত হচ্ছে...’

‘বুঝলাম না মানে, ন্যায় অন্যায় রূপান্তর...’

‘শোন তোকে বুঝিয়ে বলি, শুরু করিতেছি বাংলার অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত জনগণের নামে, যারা পরম করুণাময় এবং অত্যন্ত দয়ালু। আমাদের দয়ালু দেশবাসীর দয়ার সাগরে ভাসতে যেয়ে এখন ন্যায় অন্যায় আর কোনো ব্যাপারই না, কেবল মা লক্ষীর পুজা কর আর থরে থরে মাল কামাও। মাল কিভাবে এলো এটাঁ কোনো কথা না। খালি মাল কামাও আর মাল কামাও। মাল কামানোর পথ ন্যায় না অন্যায় সেটা ভুলে যাও, কেবল মাল কামাও...।’

‘এই মাল কামাইতে যায়া যে অন্যায় পথে পাঁচ সাতটা পাসপোর্ট বানাইলেন, সাতশ’ কোটি ট্যাকা কামাইলেন, বারো লাখ টাকার রামছাগল তো সব সুখ শান্তি মুড়ায়া দিবো তখন? এই মাল কি আপনারে বাঁচাইতে পারবো! তয় এই অন্যায় মাল কামায়া লাভ কী?’

‘আরে গাঁড়ল, এইসব মালের মাজেজা তুই বুঝবি কি? দুই-দুইডা বৌ, একটা আবার ভোটাভুটি না কইরাই ওয়ান্ডার ওয়োম্যানের মতো জেলার চেয়ারম্যান। দেশ চালাইতেছে। এসব ওয়ান্ডারফুল ব্যাপার তুই বুঝস? এটা এক অন্য মজা। আমরা জাতির বিবেকের রোল প্লে করি, জাতীয় করকমলের প্রধান, দেশের অর্থনীতি চলে আমাগো সামান্য অঙ্গুলি হেলনে। বিশ কোটি লোকের বেতন-ভাতা সব আমাগো করতলে। এই মহাবিস্তর সুকঠিন দায়িত্ব পালন করে, আমরা কি কোনো বাড়তি প্রণোদনা পাই? জি, না, আমাগো এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরও কোনো প্রনোদনা পাই না। কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের এই খাটনির দাম দেয়না! তবে হ্যাঁ, এদেশের প্রকৃত শিক্ষিত দেশপ্রেমিক জনগণ তারা আমাদের এই হাড়ভাঙ্গা খাটুনি দেখে, দয়া পরবশ হয়ে কিছু মা লক্ষী অর্পন করেন, তোরা যেটাকে উপরি পাওনা বা ঘটোৎকোচ বলিস। কিন্তু না না একে উৎকোচ না বলে দেশ-দরদী সচেতন দেশবাসীর উপঢৌকন বলিলেই পারিস।’

‘উপঢৌকন তো শুনেছি স্বেচ্ছায় স্বপ্রণোদিত হয়ে, একে অপরকে খুশি মনে প্রদান করে। কিন্তু ফাইল ঠ্যাকায়া উপঢৌকন নেয়া এইটা কি মানায়? এইডা অন্যায় না!’

‘ওরে পাগল, লাক যদি ফেভার করে তায়লে ওয়ান্ডারফুল কিছু ঘটতেই পারে!! আর তুই লাকী হলে বাঁশের কেল্লার শহীদ তিতুমীরকে বাংলা শেখাবার পাশাপাশি ক্যান্সারে মরা রোগীর শূন্য পদটা আদিরসের লহরীর মাঝে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে হয়ে গেলি রাজনীতিবিদ!! বাংলা-বিহার-উড়িশ্যার অধিপতি-আলিফ লায়লার ভানুমতির খেল!! এসব তুই বুঝিস?’

‘ভাই এইডা আপনে কি কন, বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নিবর্চিত হওয়াতো কোনো পাপ না! প্রতিপক্ষ না থাকলে আমার কি দোষ!!তাছাড়া জনগনতন্ত্র তো কখনো বলে নাই যে প্রতিপক্ষ না তাকলে ভুট বন্ধ রাখতে! এইডা আপনে কি কন?’

‘আরে তুই বুইচিস নাক্যেনে? কোনো ভাবে একবার নির্বাচিত হলেই মা লক্ষী তোর দুয়ারে হুড়মুড় করে এসে, হোঁচট খেয়ে পড়ে। বিনি-ট্যাক্সেও কুটি টাকার গাড়ি, পূর্বাচলে প্লট, লাল-পাসপোর্ট, মুরিদদের বিশেষ করে ঠিকাদার মুরিদদের নজরানা-তোকে রাত-কানা করে তোলে রে- রাতকানা। তখন তুই ন্যায় অন্যায় আর কিছুই দেখতে পাসনা!’

‘ন্যায়-অন্যায় না দেখলে তো, তরী-তীরে এসে হঠাৎ ডুবে যায়, কোনখানে রে কোন রাম ছাগলের ঘায়, তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়...’

‘রামছাগলের ঘায় বা রামছাগলের গুঁতায়-যাই বলিস না কেনো তরী ডোবাটাই দেখলি! এতোদিন যে মহানন্দে তরী তরতরিয়ে বায়া চললাম এ্যইডা দেখপিনা!’ তুই তো জানিস তোর কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শত বছর পূর্বেই তাঁর ‘নৌকাডুবি’ ছোট গল্পে বলেইছেন, একদিন না একদিন তুই যে ভাবেই মালকামানা ক্যেনো, ন্যায় হোক বা অন্যায় হোক, পাপের পাল্লাভারী হলে তরী তোমার ডুববেই ডুববেই।’

‘তাই বুঝি সক্কাল বেলায় কবি গুরুর সঙ্গীত চর্চা করছেন?’

‘আরে না কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীতের মতোই গাইতে ইচ্ছে করে ‘বড় বেদনার মতো বেজেছো আমার প্রাণে...’ একটা দেশের এতো বড় বড় পদে থেকেও তোরা যদি চুরি-চামারি-ছ্যাচড়ামি ছাড়তে নাপারিস- তা হলে লেখাপড়ায় এতো মেধাবী ফলাফলের কোনো দাম থাকে??’ ‘পানি ওয়ালীর পোলার কাছে আবার শিক্ষার দাম...’

‘না রে বড় কষ্ট লাগে, সবাই খালি মালের পিছনে ছুটছে...এই অবৈধ মালদিয়ে কি করবে?? দি লাস্ট স্টেশন তো সাড়ে তিন হাত...।’

‘খামাখা ভয় লাগায়েন না, দি লাস্ট স্টেশন ইজ সাড়ে তিন হাত...। আমাগের ট্রেন আছে, লাইন আছে কিন্তু কোনো স্টেশন নাই...। খালি মাল কামামু মাল...।’

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top